Quran Bengali Translation

Surah Al Zukhruf


In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful


1

حم

হা-মীম।

2

وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ

শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের,

3

إِنَّا جَعَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ

আমি একে করেছি কোরআন, আরবী ভাষায়, যাতে তোমরা বুঝ।

4

وَإِنَّهُ فِي أُمِّ الْكِتَابِ لَدَيْنَا لَعَلِيٌّ حَكِيمٌ

নিশ্চয় এ কোরআন আমার কাছে সমুন্নত অটল রয়েছে লওহে মাহফুযে।

5

أَفَنَضْرِبُ عَنْكُمُ الذِّكْرَ صَفْحًا أَنْ كُنْتُمْ قَوْمًا مُسْرِفِينَ

তোমরা সীমাতিক্রমকারী সম্প্রদায়-এ কারণে কি আমি তোমাদের কাছ থেকে কোরআন প্রত্যাহার করে নেব?

6

وَكَمْ أَرْسَلْنَا مِنْ نَبِيٍّ فِي الْأَوَّلِينَ

পূর্ববর্তী লোকদের কাছে আমি অনেক রসূলই প্রেরণ করেছি।

7

وَمَا يَأْتِيهِمْ مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ

যখনই তাদের কাছে কোন রসূল আগমন করেছেন, তখনই তারা তাঁর সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে।

8

فَأَهْلَكْنَا أَشَدَّ مِنْهُمْ بَطْشًا وَمَضَى مَثَلُ الْأَوَّلِينَ

সুতরাং আমি তাদের চেয়ে অধিক শক্তি সম্পন্নদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি। পূর্ববর্তীদের এ ঘটনা অতীত হয়ে গেছে।

9

وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ

আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছে?

لَيَقُولُنَّ خَلَقَهُنَّ الْعَزِيزُ الْعَلِيمُ‏

তারা অবশ্যই বলবে, এগুলো সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহ।

10

الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ مَهْدًاوَجَعَلَ لَكُمْ فِيهَا سُبُلًا لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ

যিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে করেছেন বিছানা এবং তাতে তোমাদের জন্যে করেছেন পথ, যাতে তোমরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পার।

11

وَالَّذِي نَزَّلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً بِقَدَرٍ فَأَنْشَرْنَا بِهِ بَلْدَةً مَيْتًا ۚ

এবং যিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন পরিমিত।

আতঃপর তদ্দ্বারা আমি মৃত ভূ-ভাগকে পুনরুজ্জীবিত করেছি।

كَذَلِكَ تُخْرَجُونَ

তোমরা এমনিভাবে উত্থিত হবে।

12

وَالَّذِي خَلَقَ الْأَزْوَاجَ كُلَّهَا

এবং যিনি সবকিছুর যুগল সৃষ্টি করেছেন

وَجَعَلَ لَكُمْ مِنَ الْفُلْكِ وَالْأَنْعَامِ مَا تَرْكَبُونَ 

এবং নৌকা ও চতুস্পদ জন্তুকে তোমাদের জন্যে যানবাহনে পরিণত করেছেন,

13

لِتَسْتَوُوا عَلَى ظُهُورِهِ ثُمَّ تَذْكُرُوا نِعْمَةَ رَبِّكُمْ إِذَا اسْتَوَيْتُمْ عَلَيْهِ وَتَقُولُوا

যাতে তোমরা তাদের পিঠের উপর আরোহণ কর।

অতঃপর তোমাদের পালনকর্তার নেয়ামত স্মরণ কর এবং বল পবিত্র তিনি,

سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَاوَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ

যিনি এদেরকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন

এবং আমরা এদেরকে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না।

14

وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُونَ 

আমরা অবশ্যই আমাদের পালনকর্তার দিকে ফিরে যাব।

15

وَجَعَلُوا لَهُ مِنْ عِبَادِهِ جُزْءًا ۚ

তারা আল্লাহর বান্দাদের মধ্য থেকে আল্লাহর অংশ স্থির করেছে।

إِنَّ الْإِنْسَانَ لَكَفُورٌ مُبِينٌ

বাস্তবিক মানুষ স্পষ্ট অকৃতজ্ঞ।

16

أَمِ اتَّخَذَ مِمَّا يَخْلُقُ بَنَاتٍ وَأَصْفَاكُمْ بِالْبَنِينَ

তিনি কি তাঁর সৃষ্টি থেকে কন্যা সন্তান গ্রহণ করেছেন এবং তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন পুত্র সন্তান?

17

وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُمْ بِمَا ضَرَبَ لِلرَّحْمَنِ مَثَلًا ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ  

তারা রহমান আল্লাহর জন্যে যে, কন্যা-সন্তান বর্ণনা করে, যখন তাদের কাউকে তার সংবাদ দেয়া হয়, তখন তার মুখমন্ডল কালো হয়ে যায় এবং ভীষণ মনস্তাপ ভোগ করে।

18

أَوَمَنْ يُنَشَّأُ فِي الْحِلْيَةِ وَهُوَ فِي الْخِصَامِ غَيْرُ مُبِينٍ

তারা কি এমন ব্যক্তিকে আল্লাহর জন্যে বর্ণনা করে, যে অলংকারে লালিত-পালিত হয় এবং বিতর্কে কথা বলতে অক্ষম।

19

وَجَعَلُوا الْمَلَائِكَةَ الَّذِينَ هُمْ عِبَادُ الرَّحْمَنِ إِنَاثًا ۚ

তারা নারী স্থির করে ফেরেশতাগণকে, যারা আল্লাহর বান্দা।

أَشَهِدُوا خَلْقَهُمْ ۚ

তারা কি তাদের সৃষ্টি প্রত্যক্ষ করেছে?

سَتُكْتَبُ شَهَادَتُهُمْ وَيُسْأَلُونَ

এখন তাদের দাবী লিপিবদ্ধ করা হবে এবং তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে।

20

وَقَالُوا لَوْ شَاءَ الرَّحْمَنُ مَا عَبَدْنَاهُمْ ۗ

তারা বলে, রহমান আল্লাহ ইচছা না করলে আমরা ওদের পূজা করতাম না।

مَا لَهُمْ بِذَلِكَ مِنْ عِلْمٍ ۖ

এ বিষয়ে তারা কিছুই জানে না।

إِنْ هُمْ إِلَّا يَخْرُصُونَ

তারা কেবল অনুমানে কথা বলে।

21

أَمْ آتَيْنَاهُمْ كِتَابًا مِنْ قَبْلِهِ فَهُمْ بِهِ مُسْتَمْسِكُونَ

আমি কি তাদেরকে কোরআনের পূর্বে কোন কিতাব দিয়েছি, অতঃপর তারা তাকে আঁকড়ে রেখেছে?

22

بَلْ قَالُوا إِنَّا وَجَدْنَا آبَاءَنَا عَلَى أُمَّةٍ وَإِنَّا عَلَى آثَارِهِمْ مُهْتَدُونَ

বরং তারা বলে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক পথের পথিক

এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে পথপ্রাপ্ত।

23

وَكَذَلِكَ مَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ فِي قَرْيَةٍ مِنْ نَذِيرٍ إِلَّا قَالَ مُتْرَفُوهَا

এমনিভাবে আপনার পূর্বে আমি যখন কোন জনপদে কোন সতর্ককারী প্রেরণ করেছি,

إِنَّا وَجَدْنَا آبَاءَنَا عَلَى أُمَّةٍ وَإِنَّا عَلَى آثَارِهِمْ مُقْتَدُونَ  

তখনই তাদের বিত্তশালীরা বলেছে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক পথের পথিক

এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে চলছি।

24

قَالَ أَوَلَوْ جِئْتُكُمْ بِأَهْدَى مِمَّا وَجَدْتُمْ عَلَيْهِ آبَاءَكُمْ ۖ

সে বলত, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে বিষয়ের উপর পেয়েছ, আমি যদি তদপেক্ষা উত্তম বিষয় নিয়ে তোমাদের কাছে এসে থাকি, তবুও কি তোমরা তাই বলবে?

قَالُوا إِنَّا بِمَا أُرْسِلْتُمْ بِهِ كَافِرُونَ

তারা বলত তোমরা যে বিষয়সহ প্রেরিত হয়েছ, তা আমরা মানব না।

25

فَانْتَقَمْنَا مِنْهُمْ ۖ

অতঃপর আমি তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি।

فَانْظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ

অতএব দেখুন, মিথ্যারোপকারীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছে।

26

وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ إِنَّنِي بَرَاءٌ مِمَّا تَعْبُدُونَ

যখন ইব্রাহীম তার পিতা ও সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা যাদের পূজা কর,

তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।

27

إِلَّا الَّذِي فَطَرَنِي فَإِنَّهُ سَيَهْدِينِ

তবে আমার সম্পর্ক তাঁর সাথে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। অতএব, তিনিই আমাকে সৎপথ প্রদর্শন করবেন।

28

وَجَعَلَهَا كَلِمَةً بَاقِيَةً فِي عَقِبِهِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ

এ কথাটিকে সে অক্ষয় বাণীরূপে তার সন্তানদের মধ্যে রেখে গেছে, যাতে তারা আল্লাহর দিকেই আকৃষ্ট থাকে।

29

بَلْ مَتَّعْتُ هَؤُلَاءِ وَآبَاءَهُمْ حَتَّى جَاءَهُمُ الْحَقُّ وَرَسُولٌ مُبِينٌ

পরন্ত আমিই এদেরকে ও এদের পূর্বপুরুষদেরকে জীবনোপভোগ করতে দিয়েছি, অবশেষে তাদের কাছে সত্য ও স্পষ্ট বর্ণনাকারী রসূল আগমন করেছে।

30

وَلَمَّا جَاءَهُمُ الْحَقُّ قَالُوا هَذَا سِحْرٌ وَإِنَّا بِهِ كَافِرُونَ

যখন সত্য তাদের কাছে আগমন করল, তখন তারা বলল, এটা যাদু, আমরা একে মানি না।

31

وَقَالُوا لَوْلَا نُزِّلَ هَذَا الْقُرْآنُ عَلَى رَجُلٍ مِنَ الْقَرْيَتَيْنِ عَظِيمٍ

তারা বলে, কোরআন কেন দুই জনপদের কোন প্রধান ব্যক্তির উপর অবতীর্ণ হল না?

32

أَهُمْ يَقْسِمُونَ رَحْمَتَ رَبِّكَ ۚ

তারা কি আপনার পালনকর্তার রহমত বন্টন করে?

نَحْنُ قَسَمْنَا بَيْنَهُمْ مَعِيشَتَهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۚ

আমি তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বন্টন করেছি পার্থিব জীবনে

وَرَفَعْنَا بَعْضَهُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجَاتٍ لِيَتَّخِذَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا سُخْرِيًّا ۗ

এবং একের মর্যাদাকে অপরের উপর উন্নীত করেছি, যাতে একে অপরকে সেবক রূপে গ্রহণ করে।

وَرَحْمَتُ رَبِّكَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ  

তারা যা সঞ্চয় করে, আপনার পালনকর্তার রহমত তদপেক্ষা উত্তম।

33

وَلَوْلَا أَنْ يَكُونَ النَّاسُ أُمَّةً وَاحِدَةً لَجَعَلْنَا لِمَنْ يَكْفُرُ بِالرَّحْمَنِ لِبُيُوتِهِمْ سُقُفًا مِنْ فِضَّةٍ وَمَعَارِجَ عَلَيْهَا يَظْهَرُونَ

যদি সব মানুষের এক মতাবলম্বী হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকত, তবে যারা দয়াময় আল্লাহকে অস্বীকার করে আমি তাদেরকে দিতাম তাদের গৃহের জন্যে রৌপ্য নির্মিত ছাদ ও সিঁড়ি, যার উপর তারা চড়ত।

34

وَلِبُيُوتِهِمْ أَبْوَابًا وَسُرُرًا عَلَيْهَا يَتَّكِئُونَ

এবং তাদের গৃহের জন্যে দরজা দিতাম এবং পালংক দিতাম যাতে তারা হেলান দিয়ে বসত।

35

وَزُخْرُفًا ۚ

এবং স্বর্ণনির্মিতও দিতাম।

وَإِنْ كُلُّ ذَلِكَ لَمَّا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۚ

এগুলো সবই তো পার্থিব জীবনের ভোগ সামগ্রী মাত্র।

وَالْآخِرَةُ عِنْدَ رَبِّكَ لِلْمُتَّقِينَ

আর পরকাল আপনার পালনকর্তার কাছে তাঁদের জন্যেই যারা ভয় করে।

36

وَمَنْ يَعْشُ عَنْ ذِكْرِ الرَّحْمَنِ نُقَيِّضْ لَهُ شَيْطَانًا فَهُوَ لَهُ قَرِينٌ

যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী।

37

وَإِنَّهُمْ لَيَصُدُّونَهُمْ عَنِ السَّبِيلِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ مُهْتَدُونَ  

শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।

38

حَتَّى إِذَا جَاءَنَا قَالَ يَا لَيْتَ بَيْنِي وَبَيْنَكَ بُعْدَ الْمَشْرِقَيْنِ

অবশেষে যখন সে আমার কাছে আসবে, তখন সে শয়তানকে বলবে, হায়, আমার ও তোমার মধ্যে যদি পূর্ব-পশ্চিমের দূরত্ব থাকত।

فَبِئْسَ الْقَرِينُ  

কত হীন সঙ্গী সে।

39

وَلَنْ يَنْفَعَكُمُ الْيَوْمَ إِذْ ظَلَمْتُمْ أَنَّكُمْ فِي الْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ  

তোমরা যখন কুফর করছিলে, তখন তোমাদের আজকের আযাবে শরীক হওয়া কোন কাজে আসবে না।

40

أَفَأَنْتَ تُسْمِعُ الصُّمَّ أَوْ تَهْدِي الْعُمْيَ وَمَنْ كَانَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ  

আপনি কি বধিরকে শোনাতে পারবেন? অথবা যে অন্ধ ও যে স্পষ্ট পথ ভ্রষ্টতায় লিপ্ত,

তাকে পথ প্রদর্শণ করতে পারবেন?

41

فَإِمَّا نَذْهَبَنَّ بِكَ فَإِنَّا مِنْهُمْ مُنْتَقِمُونَ

অতঃপর আমি যদি আপনাকে নিয়ে যাই, তবু আমি তাদের কাছে থেকে প্রতিশোধ নেব।

42

أَوْ نُرِيَنَّكَ الَّذِي وَعَدْنَاهُمْ فَإِنَّا عَلَيْهِمْ مُقْتَدِرُونَ 

অথবা যদি আমি তাদেরকে যে আযাবের ওয়াদা দিয়েছি, তা আপনাকে দেখিয়ে দেই,

তবু তাদের উপর আমার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে।

43

فَاسْتَمْسِكْ بِالَّذِي أُوحِيَ إِلَيْكَ ۖ

অতএব, আপনার প্রতি যে ওহী নাযিল করা হয়, তা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করুন।

إِنَّكَ عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ

নিঃসন্দেহে আপনি সরল পথে রয়েছেন।

44

وَإِنَّهُ لَذِكْرٌ لَكَ وَلِقَوْمِكَ ۖ

এটা আপনার ও আপনার সম্প্রদায়ের জন্যে উল্লেখিত থাকবে

وَسَوْفَ تُسْأَلُونَ

এবং শীঘ্রই আপনারা জিজ্ঞাসিত হবেন।

45

وَاسْأَلْ مَنْ أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رُسُلِنَا

আপনার পূর্বে আমি যেসব রসূল প্রেরণ করেছি, তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন,

أَجَعَلْنَا مِنْ دُونِ الرَّحْمَنِ آلِهَةً يُعْبَدُونَ  

দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত আমি কি কোন উপাস্য স্থির করেছিলাম এবাদতের জন্যে?

46

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَى بِآيَاتِنَا إِلَى فِرْعَوْنَ وَمَلَئِهِ

আমি মূসাকে আমার নিদর্শনাবলী দিয়ে ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গের কাছে প্রেরণ করেছিলাম,

فَقَالَ إِنِّي رَسُولُ رَبِّ الْعَالَمِينَ

অতঃপর সে বলেছিল, আমি বিশ্ব পালনকর্তার রসূল।

47

فَلَمَّا جَاءَهُمْ بِآيَاتِنَا إِذَا هُمْ مِنْهَا يَضْحَكُونَ  

অতঃপর সে যখন তাদের কাছে আমার নিদর্শনাবলী উপস্থাপন করল, তখন তারা হাস্যবিদ্রুপ করতে লাগল।

48

وَمَا نُرِيهِمْ مِنْ آيَةٍ إِلَّا هِيَ أَكْبَرُ مِنْ أُخْتِهَا ۖ

আমি তাদেরকে যে নিদর্শনই দেখাতাম, তাই হত পূর্ববর্তী নিদর্শন অপেক্ষা বৃহৎ

وَأَخَذْنَاهُمْ بِالْعَذَابِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ

এবং আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করলাম, যাতে তারা ফিরে আসে।

49

وَقَالُوا يَا أَيُّهَ السَّاحِرُ ادْعُ لَنَا رَبَّكَ بِمَا عَهِدَ عِنْدَكَ إِنَّنَا لَمُهْتَدُونَ  

তারা বলল, হে যাদুকর,

তুমি আমাদের জন্যে তোমার পালনকর্তার কাছে সে বিষয় প্রার্থনা কর, যার ওয়াদা তিনি তোমাকে দিয়েছেন; আমরা অবশ্যই সৎপথ অবলম্বন করব।

50

فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُمُ الْعَذَابَ إِذَا هُمْ يَنْكُثُونَ  

অতঃপর যখন আমি তাদের থেকে আযাব প্রত্যাহার করে নিলাম, তখনই তারা অঙ্গীকার ভঙ্গ করতে লাগলো।

51

وَنَادَى فِرْعَوْنُ فِي قَوْمِهِ قَالَ يَا قَوْمِ أَلَيْسَ لِي مُلْكُ مِصْرَوَهَذِهِ الْأَنْهَارُ تَجْرِي مِنْ تَحْتِي ۖ

ফেরাউন তার সম্প্রদায়কে ডেকে বলল, হে আমার কওম,

আমি কি মিসরের অধিপতি নই?

এই নদী গুলো আমার নিম্নদেশে প্রবাহিত হয়,

أَفَلَا تُبْصِرُونَ

তোমরা কি দেখ না?

52

أَمْ أَنَا خَيْرٌ مِنْ هَذَا الَّذِي هُوَ مَهِينٌ وَلَا يَكَادُ يُبِينُ

আমি যে শ্রেষ্ট এ ব্যক্তি থেকে, যে নীচ এবং কথা বলতেও সক্ষম নয়।

53

فَلَوْلَا أُلْقِيَ عَلَيْهِ أَسْوِرَةٌ مِنْ ذَهَبٍ أَوْ جَاءَ مَعَهُ الْمَلَائِكَةُ مُقْتَرِنِينَ 

তাকে কেন স্বর্ণবলয় পরিধান করানো হল না,

অথবা কেন আসল না তার সঙ্গে ফেরেশতাগণ দল বেঁধে?

54

فَاسْتَخَفَّ قَوْمَهُ فَأَطَاعُوهُ ۚ

অতঃপর সে তার সম্প্রদায়কে বোকা বানিয়ে দিল, ফলে তারা তার কথা মেনে নিল।

إِنَّهُمْ كَانُوا قَوْمًا فَاسِقِينَ

নিশ্চয় তারা ছিল পাপাচারী সম্প্রদায়।

55

فَلَمَّا آسَفُونَا انْتَقَمْنَا مِنْهُمْ فَأَغْرَقْنَاهُمْ أَجْمَعِينَ 

অতঃপর যখন আমাকে রাগাম্বিত করল তখন আমি তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিলাম এবং নিমজ্জত করলাম। তাদের সবাইকে।

56

فَجَعَلْنَاهُمْ سَلَفًا وَمَثَلًا لِلْآخِرِينَ 

অতঃপর আমি তাদেরকে করে দিলাম অতীত লোক ও দৃষ্টান্ত পরবর্তীদের জন্যে।

57

وَلَمَّا ضُرِبَ ابْنُ مَرْيَمَ مَثَلًا إِذَا قَوْمُكَ مِنْهُ يَصِدُّونَ

যখনই মরিয়ম তনয়ের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করা হল, তখনই আপনার সম্প্রদায় হঞ্জগোল শুরু করে দিল

58

وَقَالُوا أَآلِهَتُنَا خَيْرٌ أَمْ هُوَ ۚ

এবং বলল, আমাদের উপাস্যরা শ্রেষ্ঠ, না সে?

مَا ضَرَبُوهُ لَكَ إِلَّا جَدَلًا ۚ

তারা আপনার সামনে যে উদাহরণ উপস্থাপন করে তা কেবল বিতর্কের জন্যেই করে।

بَلْ هُمْ قَوْمٌ خَصِمُونَ

বস্তুতঃ তারা হল এক বিতর্ককারী সম্প্রদায়।

59

إِنْ هُوَ إِلَّا عَبْدٌ أَنْعَمْنَا عَلَيْهِ وَجَعَلْنَاهُ مَثَلًا لِبَنِي إِسْرَائِيلَ

সে তো এক বান্দাই বটে আমি তার প্রতি অনুগ্রহ করেছি

এবং তাকে করেছি বণী-ইসরাঈলের জন্যে আদর্শ।

60

وَلَوْ نَشَاءُ لَجَعَلْنَا مِنْكُمْ مَلَائِكَةً فِي الْأَرْضِ يَخْلُفُونَ

আমি ইচ্ছা করলে তোমাদের থেকে ফেরেশতা সৃষ্টি করতাম, যারা পৃথিবীতে একের পর এক বসবাস করত।

61

وَإِنَّهُ لَعِلْمٌ لِلسَّاعَةِ فَلَا تَمْتَرُنَّ بِهَا وَاتَّبِعُونِ ۚ

সুতরাং তা হল কেয়ামতের নিদর্শন।

هَذَا صِرَاطٌ مُسْتَقِيمٌ

কাজেই তোমরা কেয়ামতে সন্দেহ করো না এবং আমার কথা মান।

এটা এক সরল পথ।

62

وَلَا يَصُدَّنَّكُمُ الشَّيْطَانُ ۖ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ  

শয়তান যেন তোমাদেরকে নিবৃত্ত না করে।

সে তোমাদের প্রকাশ্য শুত্রু।

63

وَلَمَّا جَاءَ عِيسَى بِالْبَيِّنَاتِ قَالَ

ঈসা যখন স্পষ্ট নিদর্শনসহ আগমন করল, তখন বলল,

قَدْ جِئْتُكُمْ بِالْحِكْمَةِ وَلِأُبَيِّنَ لَكُمْ بَعْضَ الَّذِي تَخْتَلِفُونَ فِيهِ ۖ فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ 

আমি তোমাদের কাছে প্রজ্ঞা নিয়ে এসেছি

এবং তোমরা যে, কোন কোন বিষয়ে মতভেদ করছ তা ব্যক্ত করার জন্যে এসেছি,

অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার কথা মান।

64

إِنَّ اللَّهَ هُوَ رَبِّي وَرَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ ۚ

নিশ্চয় আল্লাহই আমার পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তাঁর এবাদত কর।

هَذَا صِرَاطٌ مُسْتَقِيمٌ

এটা হল সরল পথ।

65

فَاخْتَلَفَ الْأَحْزَابُ مِنْ بَيْنِهِمْ ۖ

অতঃপর তাদের মধ্যে থেকে বিভিন্ন দল মতভেদ সৃষ্টি করল।

فَوَيْلٌ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْ عَذَابِ يَوْمٍ أَلِيمٍ

সুতরাং যালেমদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক দিবসের আযাবের দুর্ভোগ।

66

هَلْ يَنْظُرُونَ إِلَّا السَّاعَةَ أَنْ تَأْتِيَهُمْ بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ

তারা কেবল কেয়ামতেরই অপেক্ষা করছে যে, আকস্মিকভাবে তাদের কাছে এসে যাবে এবং তারা খবর ও রাখবে না।

67

الْأَخِلَّاءُ يَوْمَئِذٍ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ إِلَّا الْمُتَّقِينَ

বন্ধুবর্গ সেদিন একে অপরের শত্রু হবে, তবে খোদাভীরুরা নয়।

68

يَا عِبَادِ لَا خَوْفٌ عَلَيْكُمُ الْيَوْمَ وَلَا أَنْتُمْ تَحْزَنُونَ

হে আমার বান্দাগণ, তোমাদের আজ কোন ভয় নেই এবং তোমরা দুঃখিতও হবে না।

69

الَّذِينَ آمَنُوا بِآيَاتِنَا وَكَانُوا مُسْلِمِينَ

তোমরা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করেছিলে এবং তোমরা আজ্ঞাবহ ছিলে।

70

ادْخُلُوا الْجَنَّةَ أَنْتُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ تُحْبَرُونَ

জান্নাতের প্রবেশ কর তোমরা এবং তোমাদের বিবিগণ সানন্দে।

71

يُطَافُ عَلَيْهِمْ بِصِحَافٍ مِنْ ذَهَبٍ وَأَكْوَابٍ ۖ

তাদের কাছে পরিবেশন করা হবে স্বর্ণের থালা ও পানপাত্র

وَفِيهَا مَا تَشْتَهِيهِ الْأَنْفُسُ وَتَلَذُّ الْأَعْيُنُ ۖ وَأَنْتُمْ فِيهَا خَالِدُونَ

এবং তথায় রয়েছে মনে যা চায় এবং নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়।

তোমরা তথায় চিরকাল অবস্থান করবে।

72

وَتِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِي أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ

এই যে, জান্নাতের উত্তরাধিকারী তোমরা হয়েছ, এটা তোমাদের কর্মের ফল।

73

لَكُمْ فِيهَا فَاكِهَةٌ كَثِيرَةٌ مِنْهَا تَأْكُلُونَ

তথায় তোমাদের জন্যে আছে প্রচুর ফল-মূল, তা থেকে তোমরা আহার করবে।

74

إِنَّ الْمُجْرِمِينَ فِي عَذَابِ جَهَنَّمَ خَالِدُونَ

নিশ্চয় অপরাধীরা জাহান্নামের আযাবে চিরকাল থাকবে।

75

لَا يُفَتَّرُ عَنْهُمْ وَهُمْ فِيهِ مُبْلِسُونَ

তাদের থেকে আযাব লাঘব করা হবে না এবং তারা তাতেই থাকবে হতাশ হয়ে।

76

وَمَا ظَلَمْنَاهُمْ وَلَكِنْ كَانُوا هُمُ الظَّالِمِينَ

আমি তাদের প্রতি জুলুম করিনি; কিন্তু তারাই ছিল জালেম।

77

وَنَادَوْا يَا مَالِكُ لِيَقْضِ عَلَيْنَا رَبُّكَ ۖ

তারা ডেকে বলবে, হে মালেক, পালনকর্তা আমাদের কিসসাই শেষ করে দিন।

قَالَ إِنَّكُمْ مَاكِثُونَ

সে বলবে, নিশ্চয় তোমরা চিরকাল থাকবে।

78

لَقَدْ جِئْنَاكُمْ بِالْحَقِّ وَلَكِنَّ أَكْثَرَكُمْ لِلْحَقِّ كَارِهُونَ

আমি তোমাদের কাছে সত্যধর্ম পৌঁছিয়েছি; কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই সত্যধর্মে নিস্পৃহ!

79

‏ أَمْ أَبْرَمُوا أَمْرًا فَإِنَّا مُبْرِمُونَ

তারা কি কোন ব্যবস্থা চুড়ান্ত করেছে? তাহলে আমিও এক ব্যবস্থা চুড়ান্ত করেছি।

80

أَمْ يَحْسَبُونَ أَنَّا لَا نَسْمَعُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَاهُمْ ۚ

তারা কি মনে করে যে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও গোপন পরামর্শ শুনি না?

بَلَى وَرُسُلُنَا لَدَيْهِمْ يَكْتُبُونَ

হঁযা, শুনি। আমার ফেরেশতাগণ তাদের নিকটে থেকে লিপিবদ্ধ করে।

81

قُلْ إِنْ كَانَ لِلرَّحْمَنِ وَلَدٌ فَأَنَا أَوَّلُ الْعَابِدِينَ

বলুন, দয়াময় আল্লাহর কোন সন্তান থাকলে আমি সর্ব প্রথম তার এবাদত করব।

82

سُبْحَانَ رَبِّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ رَبِّ الْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُونَ

তারা যা বর্ণনা করে, তা থেকে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের পালনকর্তা, আরশের পালনকর্তা পবিত্র।

83

فَذَرْهُمْ يَخُوضُوا وَيَلْعَبُوا حَتَّى يُلَاقُوا يَوْمَهُمُ الَّذِي يُوعَدُونَ

অতএব, তাদেরকে বাকচাতুরী ও ক্রীড়া-কৌতুক করতে দিন সেই দিবসের সাক্ষাত পর্যন্ত, যার ওয়াদা তাদেরকে দেয়া হয়।

84

وَهُوَ الَّذِي فِي السَّمَاءِ إِلَهٌ وَفِي الْأَرْضِ إِلَهٌ ۚ

তিনিই উপাস্য নভোমন্ডলে এবং তিনিই উপাস্য ভুমন্ডলে।

وَهُوَ الْحَكِيمُ الْعَلِيمُ

তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ,

85

وَتَبَارَكَ الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا

বরকতময় তিনিই, নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু যার।

وَعِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ

তাঁরই কাছে আছে কেয়ামতের জ্ঞান

এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।

86

وَلَا يَمْلِكُ الَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ الشَّفَاعَةَ

তিনি ব্যতীত তারা যাদের পুজা করে, তারা সুপারিশের অধিকারী হবে না,

إِلَّا مَنْ شَهِدَ بِالْحَقِّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ

তবে যারা সত্য স্বীকার করত ও বিশ্বাস করত।

87

وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَهُمْ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ ۖ

যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তারা বলবে, আল্লাহ,

فَأَنَّى يُؤْفَكُونَ

অতঃপর তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে ?

88

وَقِيلِهِ يَا رَبِّ إِنَّ هَؤُلَاءِ قَوْمٌ لَا يُؤْمِنُونَ

রসূলের এই উক্তির কসম, হে আমার পালনকর্তা, এ সম্প্রদায় তো বিশ্বাস স্থাপন করে না।

89

فَاصْفَحْ عَنْهُمْ وَقُلْ سَلَامٌ ۚ

অতএব, আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন এবং বলুন, ‘সালাম’।

فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ

তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।

*********



© Copy Rights:

Zahid Javed Rana, Abid Javed Rana,

Lahore, Pakistan

Email: cmaj37@gmail.com

Visits wef Aug 2024