Quran Bengali Translation

Surah Al Mu'minun


In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful


1

قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ

মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে,

2

الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ

যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র;

3

وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ

যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত,

4

وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ

যারা যাকাত দান করে থাকে

5

وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ

এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে।

6

إِلَّا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ

তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।

7

فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاءَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ

অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমালংঘনকারী হবে।

8

وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ

এবং যারা আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুশিয়ার থাকে।

9

وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ

এবং যারা তাদের নামাযসমূহের খবর রাখে।

10

أُولَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ

তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে।

11

الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ  

তারা শীতল ছায়াময় উদ্যানের উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা তাতে চিরকাল থাকবে।

12

وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ مِنْ سُلَالَةٍ مِنْ طِينٍ

আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।

13

ثُمَّ جَعَلْنَاهُ نُطْفَةً فِي قَرَارٍ مَكِينٍ

অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি।

14

ثُمَّ خَلَقْنَا النُّطْفَةَ عَلَقَةً  فَخَلَقْنَا الْعَلَقَةَ مُضْغَةً

এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি,

অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি,

فَخَلَقْنَا الْمُضْغَةَ عِظَامًا فَكَسَوْنَا الْعِظَامَ لَحْمًا ثُمَّ أَنْشَأْنَاهُ خَلْقًا آخَرَ ۚ

এরপর সেই মাংসপিন্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি,

অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি,

অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি।

فَتَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ

নিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়।

15

ثُمَّ إِنَّكُمْ بَعْدَ ذَلِكَ لَمَيِّتُونَ

এরপর তোমরা মৃত্যুবরণ করবে

16

ثُمَّ إِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تُبْعَثُونَ

অতঃপর কেয়ামতের দিন তোমরা পুনরুত্থিত হবে।

17

وَلَقَدْ خَلَقْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعَ طَرَائِقَ وَمَا كُنَّا عَنِ الْخَلْقِ غَافِلِينَ

আমি তোমাদের উপর সুপ্তপথ সৃষ্টি করেছি

এবং আমি সৃষ্টি সম্বন্ধে অনবধান নই।

18

وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً بِقَدَرٍ فَأَسْكَنَّاهُ فِي الْأَرْضِ ۖ

আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মত অতঃপর আমি জমিনে সংরক্ষণ করি

وَإِنَّا عَلَى ذَهَابٍ بِهِ لَقَادِرُونَ

এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম।

19

فَأَنْشَأْنَا لَكُمْ بِهِ جَنَّاتٍ مِنْ نَخِيلٍ وَأَعْنَابٍ

অতঃপর আমি তা দ্বারা তোমাদের জন্যে খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান সৃষ্টি করেছি।

لَكُمْ فِيهَا فَوَاكِهُ كَثِيرَةٌ وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ

তোমাদের জন্যে এতে প্রচুর ফল আছে এবং তোমরা তা থেকে আহার করে থাক।

20

وَشَجَرَةً تَخْرُجُ مِنْ طُورِ سَيْنَاءَ تَنْبُتُ بِالدُّهْنِ وَصِبْغٍ لِلْآكِلِينَ

এবং ঐ বৃক্ষ সৃষ্টি করেছি, যা সিনাই পর্বতে জন্মায়

এবং আহারকারীদের জন্যে তৈল ও ব্যঞ্জন উৎপন্ন করে।

21

وَإِنَّ لَكُمْ فِي الْأَنْعَامِ لَعِبْرَةً ۖ

এবং তোমাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তু সমূহের মধ্যে চিন্তা করার বিষয় রয়েছে।

 نُسْقِيكُمْ مِمَّا فِي بُطُونِهَا وَلَكُمْ فِيهَا مَنَافِعُ كَثِيرَةٌ وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ

আমি তোমাদেরকে তাদের উদরস্থিত বস্তু থেকে পান করাই

এবং তোমাদের জন্যে তাদের মধ্যে প্রচুর উপকারিতা আছে। তোমরা তাদের কতককে ভক্ষণ কর।

22

وَعَلَيْهَا وَعَلَى الْفُلْكِ تُحْمَلُونَ

তাদের পিঠে ও জলযানে তোমরা আরোহণ করে চলাফেরা করে থাক।

23

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ ۖ أَفَلَا تَتَّقُونَ

আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। সে বলেছিলঃ

হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন মাবুদ নেই। তোমরা কি ভয় কর না।

24

فَقَالَ الْمَلَأُ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ قَوْمِهِ

তখন তার সম্প্রদায়ের কাফের-প্রধানরা বলেছিলঃ

مَا هَذَا إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يُرِيدُ أَنْ يَتَفَضَّلَ عَلَيْكُمْ وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَأَنْزَلَ مَلَائِكَةً

এ তো তোমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নয়। সে তোমাদের উপর নেতৃত্ব করতে চায়।

আল্লাহ ইচ্ছা করলে ফেরেশতাই নাযিল করতেন।

مَا سَمِعْنَا بِهَذَا فِي آبَائِنَا الْأَوَّلِينَ

আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে এরূপ কথা শুনিনি।

25

إِنْ هُوَ إِلَّا رَجُلٌ بِهِ جِنَّةٌ فَتَرَبَّصُوا بِهِ حَتَّى حِينٍ  

সে তো এক উম্মাদ ব্যক্তি বৈ নয়। সুতরাং কিছুকাল তার ব্যাপারে অপেক্ষা কর।

26

قَالَ رَبِّ انْصُرْنِي بِمَا كَذَّبُونِ

নূহ বলেছিলঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে সাহায্য কর; কেননা, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে।

27

فَأَوْحَيْنَا إِلَيْهِ أَنِ اصْنَعِ الْفُلْكَ بِأَعْيُنِنَا وَوَحْيِنَا

অতঃপর আমি তার কাছে আদেশ প্রেরণ করলাম যে, তুমি আমার দৃষ্টির সামনে এবং আমার নির্দেশে নৌকা তৈরী কর।

فَإِذَا جَاءَ أَمْرُنَا وَفَارَ التَّنُّورُ ۙ فَاسْلُكْ فِيهَا مِنْ كُلٍّ زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ

এরপর যখন আমার আদেশ আসে এবং চুল্লী প্লাবিত হয়, তখন নৌকায় তুলে নাও, প্রত্যেক জীবের এক এক জোড়া

وَأَهْلَكَ إِلَّا مَنْ سَبَقَ عَلَيْهِ الْقَوْلُ مِنْهُمْ ۖ

এবং তোমার পরিবারবর্গকে, তাদের মধ্যে যাদের বিপক্ষে পূর্বে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাদের ছাড়া।

وَلَا تُخَاطِبْنِي فِي الَّذِينَ ظَلَمُوا إِنَّهُمْ مُغْرَقُونَ

এবং তুমি জালেমদের সম্পর্কে আমাকে কিছু বলো না।

নিশ্চয় তারা নিমজ্জত হবে।

28

فَإِذَا اسْتَوَيْتَ أَنْتَ وَمَنْ مَعَكَ عَلَى الْفُلْكِ فَقُلِ

যখন তুমি ও তোমার সঙ্গীরা নৌকায় আরোহণ করবে, তখন বলঃ

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي نَجَّانَا مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ

আল্লাহর শোকর, যিনি আমাদেরকে জালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে উদ্ধার করেছেন।

29

وَقُلْ رَبِّ أَنْزِلْنِي مُنْزَلًا مُبَارَكًا وَأَنْتَ خَيْرُ الْمُنْزِلِينَ

আরও বলঃ পালনকর্তা, আমাকে কল্যাণকর ভাবে নামিয়ে দাও,

তুমি শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী।

30

إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ وَإِنْ كُنَّا لَمُبْتَلِينَ

এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে এবং আমি পরীক্ষাকারী।

31

ثُمَّ أَنْشَأْنَا مِنْ بَعْدِهِمْ قَرْنًا آخَرِينَ

অতঃপর অন্য এক সম্প্রদায় আমি তার স্থলাভিষিক্ত করেছিলাম।

32

فَأَرْسَلْنَا فِيهِمْ رَسُولًا مِنْهُمْ

এবং তাদেরই একজনকে তাদের মধ্যে রসূলরূপে প্রেরণ করেছিলাম এই বলে যে,

 أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ أَفَلَا تَتَّقُونَ

তোমরা আল্লাহর বন্দেগী কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন মাবুদ নেই।

তবুও কি তোমরা ভয় করবে না?

33

وَقَالَ الْمَلَأُ مِنْ قَوْمِهِ الَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِلِقَاءِ الْآخِرَةِ  وَأَتْرَفْنَاهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا

তাঁর সম্প্রদায়ের প্রধানরা যারা কাফের ছিল, পরকালের সাক্ষাতকে মিথ্যা বলত এবং যাদেরকে আমি পার্থিব জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দিয়েছিলাম,

مَا هَذَا إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يَأْكُلُ مِمَّا تَأْكُلُونَ مِنْهُ وَيَشْرَبُ مِمَّا تَشْرَبُونَ

তারা বললঃ এতো আমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নয়।

তোমরা যা খাও, সেও তাই খায় এবং তোমরা যা পান কর, সেও তাই পান করে।

34

وَلَئِنْ أَطَعْتُمْ بَشَرًا مِثْلَكُمْ إِنَّكُمْ إِذًا لَخَاسِرُونَ

যদি তোমরা তোমাদের মতই একজন মানুষের আনুগত্য কর, তবে তোমরা নিশ্চিতরূপেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

35

أَيَعِدُكُمْ أَنَّكُمْ إِذَا مِتُّمْ وَكُنْتُمْ تُرَابًا وَعِظَامًا أَنَّكُمْ مُخْرَجُونَ

সে কি তোমাদেরকে এই ওয়াদা দেয় যে, তোমরা মারা গেলে এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হলে তোমাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে?

36

هَيْهَاتَ هَيْهَاتَ لِمَا تُوعَدُونَ

তোমাদেরকে যে ওয়াদা দেয়া হচ্ছে, তা কোথায় হতে পারে?

37

إِنْ هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا الدُّنْيَا نَمُوتُ وَنَحْيَا وَمَا نَحْنُ بِمَبْعُوثِينَ

আমাদের পার্থিবজীবনই একমাত্র জীবন। আমরা মরি ও বাঁচি এখানেই

এবং আমারা পুনরুত্থিত হবো না।

38

إِنْ هُوَ إِلَّا رَجُلٌ افْتَرَى عَلَى اللَّهِ كَذِبًا وَمَا نَحْنُ لَهُ بِمُؤْمِنِينَ

সে তো এমন ব্যক্তি বৈ নয়, যে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে এবং আমরা তাকে বিশ্বাস করি না।

39

قَالَ رَبِّ انْصُرْنِي بِمَا كَذَّبُونِ

তিনি বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে সাহায্য কর, কারণ তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে।

40

قَالَ عَمَّا قَلِيلٍ لَيُصْبِحُنَّ نَادِمِينَ

আল্লাহ বললেনঃ কিছু দিনের মধ্যে তারা সকাল বেলা অনুতপ্ত হবে।

41

فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ بِالْحَقِّ فَجَعَلْنَاهُمْ غُثَاءً ۚ فَبُعْدًا لِلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ

অতঃপর সত্য সত্যই এক ভয়ংকর শব্দ তাদেরকে হতচকিত করল এবং আমি তাদেরকে বাত্যা-তাড়িত আবর্জনা সদৃশ করে দিলাম।

অতঃপর ধ্বংস হোক পাপী সম্প্রদায়।

42

ثُمَّ أَنْشَأْنَا مِنْ بَعْدِهِمْ قُرُونًا آخَرِينَ

এরপর তাদের পরে আমি বহু সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছি।

43

مَا تَسْبِقُ مِنْ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا يَسْتَأْخِرُونَ

কোন সম্প্রদায় তার নির্দিষ্ট কালের অগ্রে যেতে পারে না। এবং পশ্চাতেও থকাতে পারে না।

44

ثُمَّ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا تَتْرَى ۖ كُلَّ مَا جَاءَ أُمَّةً رَسُولُهَا كَذَّبُوهُ ۚ

এরপর আমি একাদিক্রমে আমার রসূল প্রেরণ করেছি।

যখনই কোন উম্মতের কাছে তাঁর রসূল আগমন করেছেন, তখনই তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলেছে।

فَأَتْبَعْنَا بَعْضَهُمْ بَعْضًا وَجَعَلْنَاهُمْ أَحَادِيثَ ۚ

অতঃপর আমি তাদের একের পর এক ধ্বংস করেছি এবং তাদেরকে কাহিনীর বিষয়ে পরিণত করেছি।

فَبُعْدًا لِقَوْمٍ لَا يُؤْمِنُونَ

সুতরাং ধ্বংস হোক অবিশ্বাসীরা।

45

ثُمَّ أَرْسَلْنَا مُوسَى وَأَخَاهُ هَارُونَ بِآيَاتِنَا وَسُلْطَانٍ مُبِينٍ

অতঃপর আমি মূসা ও হারুণকে প্রেরণ করেছিলাম আমার নিদর্শনাবলী ও সুস্পষ্ট সনদসহ,

46

إِلَى فِرْعَوْنَ وَمَلَئِهِ فَاسْتَكْبَرُوا وَكَانُوا قَوْمًا عَالِينَ

ফেরআউন ও তার অমাত্যদের কাছে।

অতঃপর তারা অহংকার করল এবং তারা উদ্ধত সম্প্রদায় ছিল।

47

فَقَالُوا أَنُؤْمِنُ لِبَشَرَيْنِ مِثْلِنَا وَقَوْمُهُمَا لَنَا عَابِدُونَ

তারা বললঃ আমরা কি আমাদের মতই এ দুই ব্যক্তিতে বিশ্বাস স্থাপন করব; অথচ তাদের সম্প্রদায় আমাদের দাস?

48

‏فَكَذَّبُوهُمَا فَكَانُوا مِنَ الْمُهْلَكِينَ

অতঃপর তারা উভয়কে মিথ্যাবাদী বলল। ফলে তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হল।

49

وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ لَعَلَّهُمْ يَهْتَدُونَ

আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম যাতে তারা সৎপথ পায়।

50

وَجَعَلْنَا ابْنَ مَرْيَمَ وَأُمَّهُ آيَةً وَآوَيْنَاهُمَا إِلَى رَبْوَةٍ ذَاتِ قَرَارٍ وَمَعِينٍ

এবং আমি মরিয়ম তনয় ও তাঁর মাতাকে এক নিদর্শন দান করেছিলাম।

এবং তাদেরকে এক অবস্থানযোগ্য স্বচ্ছ পানি বিশিষ্ট টিলায় আশ্রয় দিয়েছিলাম।

51

يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا ۖإِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ

হে রসূলগণ, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎকাজ করুন।

আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত।

52

وَإِنَّ هَذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاتَّقُونِ

আপনাদের এই উম্মত সব তো একই ধর্মের অনুসারী

এবং আমি আপনাদের পালনকর্তা; অতএব আমাকে ভয় করুন।

53

فَتَقَطَّعُوا أَمْرَهُمْ بَيْنَهُمْ زُبُرًا ۖ كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ

অতঃপর মানুষ তাদের বিষয়কে বহুধা বিভক্ত করে দিয়েছে।

প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে আনন্দিত হচ্ছে।

54

فَذَرْهُمْ فِي غَمْرَتِهِمْ حَتَّى حِينٍ

অতএব তাদের কিছু কালের জন্যে তাদের অজ্ঞানতায় নিমজ্জত থাকতে দিন।

55

أَيَحْسَبُونَ أَنَّمَا نُمِدُّهُمْ بِهِ مِنْ مَالٍ وَبَنِينَ

তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে যাচ্ছি।

56

نُسَارِعُ لَهُمْ فِي الْخَيْرَاتِ ۚبَلْ لَا يَشْعُرُونَ

তাতে করে তাদেরকে দ্রুত মঙ্গলের দিকে নিয়ে যাচ্ছি?

বরং তারা বোঝে না।

57

إِنَّ الَّذِينَ هُمْ مِنْ خَشْيَةِ رَبِّهِمْ مُشْفِقُونَ

নিশ্চয় যারা তাদের পালনকর্তার ভয়ে সন্ত্রস্ত,

58

وَالَّذِينَ هُمْ بِآيَاتِ رَبِّهِمْ يُؤْمِنُونَ

যারা তাদের পালনকর্তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে,

59

وَالَّذِينَ هُمْ بِرَبِّهِمْ لَا يُشْرِكُونَ

যারা তাদের পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করে না

60

وَالَّذِينَ يُؤْتُونَ مَا آتَوْا وَقُلُوبُهُمْ وَجِلَةٌ أَنَّهُمْ إِلَى رَبِّهِمْ رَاجِعُونَ

এবং যারা যা দান করবার, তা ভীত,

কম্পিত হৃদয়ে এ কারণে দান করে যে, তারা তাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করবে,

61

أُولَئِكَ يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَهُمْ لَهَا سَابِقُونَ

তারাই কল্যাণ দ্রুত অর্জন করে এবং তারা তাতে অগ্রগামী।

62

وَلَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۖوَلَدَيْنَا كِتَابٌ يَنْطِقُ بِالْحَقِّ ۚ

আমি কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পন করি না।

আমার এক কিতাব আছে, যা সত্য ব্যক্ত করে

وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ

এবং তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।

63

بَلْ قُلُوبُهُمْ فِي غَمْرَةٍ مِنْ هَذَا وَلَهُمْ أَعْمَالٌ مِنْ دُونِ ذَلِكَ هُمْ لَهَا عَامِلُونَ

না, তাদের অন্তর এ বিষয়ে অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন,

এ ছাড়া তাদের আরও কাজ রয়েছে, যা তারা করছে।

64

حَتَّى إِذَا أَخَذْنَا مُتْرَفِيهِمْ بِالْعَذَابِ إِذَا هُمْ يَجْأَرُونَ

এমনকি, যখন আমি তাদের ঐশ্বর্যশালী লোকদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করব, তখনই তারা চীৎকার জুড়ে দেবে।

65

لَا تَجْأَرُوا الْيَوْمَ ۖإِنَّكُمْ مِنَّا لَا تُنْصَرُونَ

অদ্য চীৎকার করো না।

তোমরা আমার কাছ থেকে নিস্কৃতি পাবে না।

66

قَدْ كَانَتْ آيَاتِي تُتْلَى عَلَيْكُمْ فَكُنْتُمْ عَلَى أَعْقَابِكُمْ تَنْكِصُونَ

তোমাদেরকে আমার আয়াতসমূহ শোনানো হত, তখন তোমরা উল্টো পায়ে সরে পড়তে।

67

مُسْتَكْبِرِينَ بِهِ سَامِرًا تَهْجُرُونَ

অহংকার করে এ বিষয়ে অর্থহীন গল্প-গুজব করে যেতে।

68

أَفَلَمْ يَدَّبَّرُوا الْقَوْلَ أَمْ جَاءَهُمْ مَا لَمْ يَأْتِ آبَاءَهُمُ الْأَوَّلِينَ

অতএব তারা কি এই কালাম সম্পক চিন্তা-ভাবনা করে না?

না তাদের কাছে এমন কিছু এসেছে, যা তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে আসেনি?

69

أَمْ لَمْ يَعْرِفُوا رَسُولَهُمْ فَهُمْ لَهُ مُنْكِرُونَ

না তারা তাদের রসূলকে চেনে না, ফলে তারা তাঁকে অস্বীকার করে?

70

أَمْ يَقُولُونَ بِهِ جِنَّةٌ ۚ

না তারা বলে যে, তিনি পাগল ?

بَلْ جَاءَهُمْ بِالْحَقِّ وَأَكْثَرُهُمْ لِلْحَقِّ كَارِهُونَ

বরং তিনি তাদের কাছে সত্য নিয়ে আগমন করেছেন এবং তাদের অধিকাংশ সত্যকে অপছন্দ করে।

71

وَلَوِ اتَّبَعَ الْحَقُّ أَهْوَاءَهُمْ لَفَسَدَتِ السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ وَمَنْ فِيهِنَّ ۚ

সত্য যদি তাদের কাছে কামনা-বাসনার অনুসারী হত, তবে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং এগুলোর মধ্যবর্তী সবকিছুই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত।

بَلْ أَتَيْنَاهُمْ بِذِكْرِهِمْ فَهُمْ عَنْ ذِكْرِهِمْ مُعْرِضُونَ

বরং আমি তাদেরকে দান করেছি উপদেশ, কিন্তু তারা তাদের উপদেশ অনুধাবন করে না।

72

أَمْ تَسْأَلُهُمْ خَرْجًا

না আপনি তাদের কাছে কোন প্রতিদান চান?

 فَخَرَاجُ رَبِّكَ خَيْرٌ ۖوَهُوَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ

আপনার পালনকর্তার প্রতিদান উত্তম

এবং তিনিই রিযিকদাতা।

73

وَإِنَّكَ لَتَدْعُوهُمْ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ

আপনি তো তাদেরকে সোজা পথে দাওয়াত দিচ্ছেন;

74

وَإِنَّ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ عَنِ الصِّرَاطِ لَنَاكِبُونَ

আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তারা সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে।

75

وَلَوْ رَحِمْنَاهُمْ وَكَشَفْنَا مَا بِهِمْ مِنْ ضُرٍّ لَلَجُّوا فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ

যদি আমি তাদের প্রতি দয়া করি এবং তাদের কষ্ট দূর করে দেই, তবুও তারা তাদের অবাধ্যতায় দিশেহারা হয়ে লেগে থাকবে।

76

وَلَقَدْ أَخَذْنَاهُمْ بِالْعَذَابِ فَمَا اسْتَكَانُوا لِرَبِّهِمْ وَمَا يَتَضَرَّعُونَ

আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম, কিন্তু তারা তাদের পালনকর্তার সামনে নত হল না

এবং কাকুতি-মিনুতিও করল না।

77

حَتَّى إِذَا فَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَابًا ذَا عَذَابٍ شَدِيدٍ إِذَا هُمْ فِيهِ مُبْلِسُونَ

অবশেষে যখন আমি তাদের জন্য কঠিন শাস্তির দ্বার খুলে দেব, তখন তাতে তাদের আশা ভঙ্গ হবে।

78

وَهُوَ الَّذِي أَنْشَأَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ ۚقَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ

তিনি তোমাদের কান, চোখ ও অন্তঃকরণ সৃষ্টি করেছেন;

তোমরা খুবই অল্প কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে থাক।

79

وَهُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে রেখেছেন

এবং তারই দিকে তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।

80

وَهُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ وَلَهُ اخْتِلَافُ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ ۚ

তিনিই প্রাণ দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান এবং দিবা-রাত্রির বিবর্তন তাঁরই কাজ,

أَفَلَا تَعْقِلُونَ

তবু ও কি তোমরা বুঝবে না?

81

بَلْ قَالُوا مِثْلَ مَا قَالَ الْأَوَّلُونَ

বরং তারা বলে যেমন তাদের পূর্ববর্তীরা বলত।

82

قَالُوا أَإِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَبْعُوثُونَ

তারা বলেঃ যখন আমরা মরে যাব এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হব, তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব?

83

‏لَقَدْ وُعِدْنَا نَحْنُ وَآبَاؤُنَا هَذَا مِنْ قَبْلُ إِنْ هَذَا إِلَّا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ

অতীতে আমাদেরকে এবং আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এই ওয়াদাই দেয়া হয়েছে।

এটা তো পূর্ববতীদের কল্প-কথা বৈ কিছুই নয়।

84

قُلْ لِمَنِ الْأَرْضُ وَمَنْ فِيهَا إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ

বলুন পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যারা আছে, তারা কার?

যদি তোমরা জান, তবে বল।

85

سَيَقُولُونَ لِلَّهِ ۚ

এখন তারা বলবেঃ সবই আল্লাহর।

قُلْ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ

বলুন, তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?

86

قُلْ مَنْ رَبُّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ

বলুনঃ সপ্তাকাশ ও মহা-আরশের মালিক কে?

87

سَيَقُولُونَ لِلَّهِ ۚ

এখন তারা বলবেঃ আল্লাহ।

 قُلْ أَفَلَا تَتَّقُونَ

বলুন, তবুও কি তোমরা ভয় করবে না?

88

قُلْ مَنْ بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ يُجِيرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيْهِ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ

বলুনঃ তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুর কতৃর্্ব,

যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না ?

89

سَيَقُولُونَ لِلَّهِ ۚ

এখন তারা বলবেঃ আল্লাহর।

 قُلْ فَأَنَّى تُسْحَرُونَ

বলুনঃ তাহলে কোথা থেকে তোমাদেরকে জাদু করা হচ্ছে?

90

بَلْ أَتَيْنَاهُمْ بِالْحَقِّ وَإِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ

কিছুই নয়, আমি তাদের কাছে সত্য পৌঁছিয়েছি, আর তারা তো মিথ্যাবাদী।

91

مَا اتَّخَذَ اللَّهُ مِنْ وَلَدٍ وَمَا كَانَ مَعَهُ مِنْ إِلَهٍ ۚ

আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে কোন মাবুদ নেই।

إِذًا لَذَهَبَ كُلُّ إِلَهٍ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ ۚ 

থাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে চলে যেত এবং একজন অন্যজনের উপর প্রবল হয়ে যেত।

سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ

তারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র।

92

عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ

তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী। তারা শরীক করে, তিনি তা থেকে উর্ধ্বে।

93

قُلْ رَبِّ إِمَّا تُرِيَنِّي مَا يُوعَدُونَ

বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা যদি আমাকে দেখান,

94

‏رَبِّ فَلَا تَجْعَلْنِي فِي الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ

হে আমার পালনকর্তা! তবে আপনি আমাকে গোনাহগার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত করবেন না।

95

وَإِنَّا عَلَى أَنْ نُرِيَكَ مَا نَعِدُهُمْ لَقَادِرُونَ

আমি তাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দিয়েছি, তা আপনাকে দেখাতে অবশ্যই সক্ষম।

96

ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ السَّيِّئَةَ ۚ

মন্দের জওয়াবে তাই বলুন, যা উত্তম।

نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَصِفُونَ

তারা যা বলে, আমি সে বিষয়ে সবিশেষ অবগত।

97

وَقُلْ رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ

বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি,

98

وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ

এবং হে আমার পালনকর্তা! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি।

99

حَتَّى إِذَا جَاءَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُونِ

যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে) প্রেরণ করুন।

100

 لَعَلِّي أَعْمَلُ صَالِحًا فِيمَا تَرَكْتُ ۚ

যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি।

 كَلَّا ۚإِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَائِلُهَا ۖ ۚ

কখনই নয়,

এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র।

وَمِنْ وَرَائِهِمْ بَرْزَخٌ إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ

তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।

101

فَإِذَا نُفِخَ فِي الصُّورِ فَلَا أَنْسَابَ بَيْنَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَلَا يَتَسَاءَلُونَ

অতঃপর যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন তাদের পারস্পরিক আত্নীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না।

102

فَمَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম,

103

وَمَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ فَأُولَئِكَ الَّذِينَ خَسِرُوا أَنْفُسَهُمْ فِي جَهَنَّمَ خَالِدُونَ

এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে,

তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে।

104

تَلْفَحُ وُجُوهَهُمُ النَّارُ وَهُمْ فِيهَا كَالِحُونَ

আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে।

105

أَلَمْ تَكُنْ آيَاتِي تُتْلَى عَلَيْكُمْ فَكُنْتُمْ بِهَا تُكَذِّبُونَ

তোমাদের সামনে কি আমার আয়াত সমূহ পঠিত হত না?

তোমরা তো সেগুলোকে মিথ্যা বলতে।

106

قَالُوا رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْمًا ضَالِّينَ

তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা দূর্ভাগ্যের হাতে পরাভূত ছিলাম এবং আমরা ছিলাম বিভ্রান্ত জাতি।

107

رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْهَا فَإِنْ عُدْنَا فَإِنَّا ظَالِمُونَ

হে আমাদের পালনকর্তা! এ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর;

আমরা যদি পুনরায় তা করি, তবে আমরা গোনাহগার হব।

108

قَالَ اخْسَئُوا فِيهَا وَلَا تُكَلِّمُونِ

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই পড়ে থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলো না।

109

إِنَّهُ كَانَ فَرِيقٌ مِنْ عِبَادِي يَقُولُونَ

আমার বান্দাদের একদলে বলতঃ

رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর।

তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।

110

فَاتَّخَذْتُمُوهُمْ سِخْرِيًّا حَتَّى أَنْسَوْكُمْ ذِكْرِي وَكُنْتُمْ مِنْهُمْ تَضْحَكُونَ

অতঃপর তোমরা তাদেরকে ঠাট্টার পাত্ররূপে গ্রহণ করতে। এমনকি, তা তোমাদেরকে আমার স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছিল

এবং তোমরা তাদেরকে দেখে পরিহাস করতে।

111

إِنِّي جَزَيْتُهُمُ الْيَوْمَ بِمَا صَبَرُوا أَنَّهُمْ هُمُ الْفَائِزُونَ

আজ আমি তাদেরকে তাদের সবরের কারণে এমন প্রতিদান দিয়েছি যে, তারাই সফলকাম।

112

قَالَ كَمْ لَبِثْتُمْ فِي الْأَرْضِ عَدَدَ سِنِينَ

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করলে বছরের গণনায়?

113

قَالُوا لَبِثْنَا يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍ فَاسْأَلِ الْعَادِّينَ

তারা বলবে, আমরা একদিন অথবা দিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছি।

অতএব আপনি গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস করুন।

114

قَالَ إِنْ لَبِثْتُمْ إِلَّا قَلِيلًا ۖلَوْ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা তাতে অল্পদিনই অবস্থান করেছ,

যদি তোমরা জানতে?

115

أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ

তোমরা কি ধারণা কর যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি

এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না?

116

فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ ۖ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ

অতএব শীর্ষ মহিমায় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক,

তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের মালিক।

117

وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِنْدَ رَبِّهِ ۚ

যে কেউ আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকে, তার কাছে যার সনদ নেই, তার হিসাব তার পালণকর্তার কাছে আছে।

إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ

নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না।

118

وَقُلْ رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন।

রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী।

*********



© Copy Rights:

Zahid Javed Rana, Abid Javed Rana,

Lahore, Pakistan

Email: cmaj37@gmail.com

Visits wef Aug 2024