Quran Bengali Translation

Surah Al Hajj


In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful


1

يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمْ ۚإِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيمٌ  

হে লোক সকল! তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর।

নিশ্চয় কেয়ামতের প্রকম্পন একটি ভয়ংকর ব্যাপার।

2

يَوْمَ تَرَوْنَهَا  تَذْهَلُ  كُلُّ  مُرْضِعَةٍ  عَمَّا أَرْضَعَتْ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا   

যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন প্রত্যেক স্তন্যধাত্রী তার দুধের শিশুকে বিস্মৃত হবে এবং প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করবে

وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُمْ بِسُكَارَى وَلَكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ

এবং মানুষকে তুমি দেখবে মাতাল; অথচ তারা মাতাল নয় বস্তুতঃ

আল্লাহর আযাব সুকঠিন।

3

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ

কতক মানুষ অজ্ঞানতাবশতঃ আল্লাহ সম্পক বিতর্ক করে

وَيَتَّبِعُ كُلَّ شَيْطَانٍ مَرِيدٍ

এবং প্রত্যেক অবাধ্য শয়তানের অনুসরণ করে।

4

كُتِبَ عَلَيْهِ أَنَّهُ مَنْ تَوَلَّاهُ فَأَنَّهُ يُضِلُّهُ وَيَهْدِيهِ إِلَى عَذَابِ السَّعِيرِ

শয়তান সম্পর্কে লিখে দেয়া হয়েছে যে, যে কেউ তার সাথী হবে, সে তাকে বিভ্রান্ত করবে

এবং দোযখের আযাবের দিকে পরিচালিত করবে।

5

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنْ كُنْتُمْ فِي رَيْبٍ مِنَ الْبَعْثِ فَإِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ تُرَابٍ

হে লোকসকল! যদি তোমরা পুনরুত্থানের ব্যাপারে সন্দিগ্ধ হও, তবে (ভেবে দেখ-) আমি তোমাদেরকে মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছি।

ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِنْ مُضْغَةٍ مُخَلَّقَةٍ وَغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ لِنُبَيِّنَ لَكُمْ ۚ

এরপর বীর্য থেকে, এরপর জমাট রক্ত থেকে, এরপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট ও অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট মাংসপিন্ড থেকে, তোমাদের কাছে ব্যক্ত করার জন্যে।

وَنُقِرُّ فِي الْأَرْحَامِ مَا نَشَاءُ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى ثُمَّ نُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ۖ

আর আমি এক নির্দিষ্ট কালের জন্যে মাতৃগর্ভে যা ইচ্ছা রেখে দেই,

এরপর আমি তোমাদেরকে শিশু অবস্থায় বের করি; তারপর যাতে তোমরা যৌবনে পদার্পণ কর।

وَمِنْكُمْ مَنْ يُتَوَفَّى وَمِنْكُمْ مَنْ يُرَدُّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْلَا يَعْلَمَ مِنْ بَعْدِ عِلْمٍ شَيْئًا ۚ

তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মৃত্যুমুখে পতিত হয়

এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে নিষ্কর্মা বয়স পর্যন্ত পৌছানো হয়, যাতে সে জানার পর জ্ঞাত বিষয় সম্পর্কে সজ্ঞান থাকে না।

وَتَرَى الْأَرْضَ هَامِدَةً

তুমি ভূমিকে পতিত দেখতে পাও,

فَإِذَا أَنْزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَاءَ اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ وَأَنْبَتَتْ مِنْ كُلِّ زَوْجٍ بَهِيجٍ  

অতঃপর আমি যখন তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন তা সতেজ ও স্ফীত হয়ে যায় এবং সর্বপ্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ উৎপন্ন করে।

6

‏ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّهُ يُحْيِي الْمَوْتَى  

এগুলো এ কারণে যে, আল্লাহ সত্য

এবং তিনি মৃতকে জীবিত করেন

وَأَنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।

7

وَأَنَّ السَّاعَةَ آتِيَةٌ لَا رَيْبَ فِيهَا

এবং এ কারণে যে, কেয়ামত অবশ্যম্ভাবী, এতে সন্দেহ নেই

وَأَنَّ اللَّهَ يَبْعَثُ مَنْ فِي الْقُبُورِ

এবং এ কারণে যে, কবরে যারা আছে, আল্লাহ তাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন।

8

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلَا هُدًى وَلَا كِتَابٍ مُنِيرٍ

কতক মানুষ জ্ঞান; প্রমাণ ও উজ্জ্বল কিতাব ছাড়াই আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে।

9

‏ثَانِيَ عِطْفِهِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ۖ

সে পার্শ্ব পরিবর্তন করে বিতর্ক করে, যাতে আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করে দেয়।

لَهُ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ ۖوَنُذِيقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَذَابَ الْحَرِيقِ

তার জন্যে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা আছে

এবং কেয়ামতের দিন আমি তাকে দহন-যন্ত্রণা আস্বাদন করাব।

10

ذَلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ يَدَاكَ وَأَنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِظَلَّامٍ لِلْعَبِيدِ

এটা তোমার দুই হাতের কর্মের কারণে,

আল্লাহ বান্দাদের প্রতি জুলুম করেন না।

11

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَعْبُدُ اللَّهَ عَلَى حَرْفٍ ۖ

মানুষের মধ্যে কেউ কেউ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে জড়িত হয়ে আল্লাহর এবাদত করে।

فَإِنْ أَصَابَهُ خَيْرٌ اطْمَأَنَّ بِهِ ۖ وَإِنْ أَصَابَتْهُ فِتْنَةٌ انْقَلَبَ عَلَى وَجْهِهِ

যদি সে কল্যাণ প্রাপ্ত হয়, তবে এবাদতের উপর কায়েম থাকে

এবং যদি কোন পরীক্ষায় পড়ে, তবে পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়।

خَسِرَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةَ ۚ

সে ইহকালে ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত।

ذَلِكَ هُوَ الْخُسْرَانُ الْمُبِينُ

এটাই প্রকাশ্য ক্ষতি

12

يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُ وَمَا لَا يَنْفَعُهُ ۚ

সে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে, যে তার অপকার করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না।

ذَلِكَ هُوَ الضَّلَالُ الْبَعِيدُ

এটাই চরম পথভ্রষ্টতা।

13

يَدْعُو لَمَنْ ضَرُّهُ أَقْرَبُ مِنْ نَفْعِهِ ۚ

সে এমন কিছুকে ডাকে, যার অপকার উপকারের আগে পৌছে।

لَبِئْسَ الْمَوْلَى وَلَبِئْسَ الْعَشِيرُ

কত মন্দ এই বন্ধু এবং কত মন্দ এই সঙ্গী।

14

إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۚ

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয়।

إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ

আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন।

15

مَنْ كَانَ يَظُنُّ أَنْ لَنْ يَنْصُرَهُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ  فَلْيَمْدُدْ بِسَبَبٍ إِلَى السَّمَاءِ ثُمَّ لْيَقْطَعْ

সে ধারণা করে যে, আল্লাহ কখনই ইহকালে ও পরকালে রাসূলকে সাহায্য করবেন না,

সে একটি রশি আকাশ পর্যন্ত ঝুলিয়ে নিক; এরপর কেটে দিক;

فَلْيَنْظُرْ هَلْ يُذْهِبَنَّ كَيْدُهُ مَا يَغِيظُ

অতঃপর দেখুক তার এই কৌশল তার আক্রোশ দূর করে কিনা।

16

وَكَذَلِكَ أَنْزَلْنَاهُ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ وَأَنَّ اللَّهَ يَهْدِي مَنْ يُرِيدُ

এমনিভাবে আমি সুস্পষ্ট আয়াত রূপে কোরআন নাযিল করেছি

এবং আল্লাহ-ই যাকে ইচ্ছা হেদায়েত করেন।

17

إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَادُوا وَالصَّابِئِينَ وَالنَّصَارَى وَالْمَجُوسَ

যারা মুসলমান, যারা ইহুদী, সাবেয়ী, খ্রীষ্টান, অগ্নিপুজক এবং যারা মুশরেক,

;وَالَّذِينَ أَشْرَكُوا إِنَّ اللَّهَ يَفْصِلُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۚ

কেয়ামতের দিন আল্লাহ অবশ্যই তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবেন।

إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ

সবকিছুই আল্লাহর দৃষ্টির সামনে।

18

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ

وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ ۖ

তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু আছে নভোমন্ডলে, যা কিছু আছে ভুমন্ডলে, সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি পর্বতরাজি বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং অনেক মানুষ।

وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ ۗ وَمَنْ يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِنْ مُكْرِمٍ ۚ

আবার অনেকের উপর অবধারিত হয়েছে শাস্তি।

আল্লাহ যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন, তাকে কেউ সম্মান দিতে পারে না।

إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ   ۩

আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন

19

هَذَانِ خَصْمَانِ اخْتَصَمُوا فِي رَبِّهِمْ ۖ

এই দুই বাদী বিবাদী, তারা তাদের পালনকর্তা সম্পর্কে বিতর্ক করে।

فَالَّذِينَ كَفَرُوا قُطِّعَتْ لَهُمْ ثِيَابٌ مِنْ نَارٍ يُصَبُّ مِنْ فَوْقِ رُءُوسِهِمُ الْحَمِيمُ

অতএব যারা কাফের, তাদের জন্যে আগুনের পোশাক তৈরী করা হয়েছে।

তাদের মাথার উপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে।

20

يُصْهَرُ بِهِ مَا فِي بُطُونِهِمْ وَالْجُلُودُ

ফলে তাদের পেটে যা আছে, তা এবং চর্ম গলে বের হয়ে যাবে।

21

وَلَهُمْ مَقَامِعُ مِنْ حَدِيدٍ

তাদের জন্যে আছে লোহার হাতুড়ি।

22

كُلَّمَا أَرَادُوا أَنْ يَخْرُجُوا مِنْهَا مِنْ غَمٍّ أُعِيدُوا فِيهَا وَذُوقُوا عَذَابَ الْحَرِيقِ

তারা যখনই যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে জাহান্নাম থেকে বের হতে চাইবে, তখনই তাদেরকে তাতে ফিরিয়ে দেয়া হবে।

বলা হবেঃ দহন শাস্তি আস্বাদন কর।

23

إِنَّ  اللَّهَ  يُدْخِلُ  الَّذِينَ  آمَنُوا  وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ

নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে দাখিল করবেন উদ্যান সমূহে, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হবে।

يُحَلَّوْنَ فِيهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِنْ ذَهَبٍ وَلُؤْلُؤًا ۖوَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ

তাদেরকে তথায় স্বর্ণ-কংকন ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে

এবং তথায় তাদের পোশাক হবে রেশমী।

24

وَهُدُوا إِلَى الطَّيِّبِ مِنَ الْقَوْلِ وَهُدُوا إِلَى صِرَاطِ الْحَمِيدِ

তারা পথপ্রদর্শিত হয়েছিল সৎবাক্যের দিকে এবং পরিচালিত হয়েছিল প্রশংসিত আল্লাহর পথপানে।

25

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَيَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الَّذِي جَعَلْنَاهُ لِلنَّاسِ سَوَاءً الْعَاكِفُ فِيهِ وَالْبَادِ ۚ

যারা কুফর করে ও আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে এবং সেই মসজিদে হারাম থেকে বাধা দেয়, যাকে আমি প্রস্তুত করেছি স্থানীয় ও বহিরাগত সকল মানুষের জন্যে সমভাবে

وَمَنْ يُرِدْ فِيهِ بِإِلْحَادٍ بِظُلْمٍ نُذِقْهُ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ

এবং যে মসজিদে হারামে অন্যায়ভাবে কোন ধর্মদ্রোহী কাজ করার ইচছা করে, আমি তাদেরকে যন্ত্রানাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাব।

26

وَإِذْ بَوَّأْنَا لِإِبْرَاهِيمَ مَكَانَ الْبَيْتِ أَنْ لَا تُشْرِكْ بِي شَيْئًا

যখন আমি ইব্রাহীমকে বায়তুল্লাহর স্থান ঠিক করে দিয়েছিলাম যে,

আমার সাথে কাউকে শরীক করো না

وَطَهِّرْ بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْقَائِمِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ

এবং আমার গৃহকে পবিত্র রাখ তাওয়াফকারীদের জন্যে, নামাযে দন্ডায়মানদের জন্যে এবং রকু সেজদাকারীদের জন্যে।

27

‏وَأَذِّنْ  فِي النَّاسِ  بِالْحَجِّ  يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ  

এবং মানুষের মধ্যে হজ্বের জন্যে ঘোষণা প্রচার কর। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে।

28

‏لِيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ

যাতে তারা তাদের কল্যাণের স্থান পর্যন্ত পৌছে

وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ ۖ

এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করে তাঁর দেয়া চতুস্পদ জন্তু যবেহ করার সময়।

فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ  

অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং দুঃস্থ-অভাবগ্রস্থকে আহার করাও।

29

ثُمَّ لْيَقْضُوا تَفَثَهُمْ وَلْيُوفُوا نُذُورَهُمْ وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيقِ

এরপর তারা যেন দৈহিক ময়লা দূর করে দেয়, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং এই সুসংরক্ষিত গৃহের তাওয়াফ করে।

30

ذَلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ حُرُمَاتِ اللَّهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَهُ عِنْدَ رَبِّهِ ۗ

এটা শ্রবণযোগ্য।

আর কেউ আল্লাহর সম্মানযোগ্য বিধানাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে পালনকর্তার নিকট তা তার জন্যে উত্তম।

وَأُحِلَّتْ لَكُمُ الْأَنْعَامُ إِلَّا مَا يُتْلَى عَلَيْكُمْ ۖ

উল্লেখিত ব্যতিক্রমগুলো ছাড়া তোমাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে।

فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ

সুতরাং তোমরা মূর্তিদের অপবিত্রতা থেকে বেঁচে থাক এবং মিথ্যা কথন থেকে দূরে সরে থাক;

31

حُنَفَاءَ لِلَّهِ غَيْرَ مُشْرِكِينَ بِهِ ۚ

আল্লাহর দিকে একনিষ্ট হয়ে, তাঁর সাথে শরীক না করে;

وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَكَأَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَاءِ فَتَخْطَفُهُ الطَّيْرُ أَوْ تَهْوِي بِهِ الرِّيحُ فِي مَكَانٍ سَحِيقٍ

এবং যে কেউ আল্লাহর সাথে শরীক করল; সে যেন আকাশ থেকে ছিটকে পড়ল,

অতঃপর মৃতভোজী পাখী তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল অথবা বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে কোন দূরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করল।

32

ذَلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِنْ تَقْوَى الْقُلُوبِ

এটা শ্রবণযোগ্য

কেউ আল্লাহর নামযুক্ত বস্তুসমুহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত।

33

لَكُمْ فِيهَا مَنَافِعُ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى ثُمَّ مَحِلُّهَا إِلَى الْبَيْتِ الْعَتِيقِ

চতুস্পদ জন্তুসমূহের মধ্যে তোমাদের জন্যে নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত উপকার রয়েছে। অতঃপর এগুলোকে পৌছাতে হবে মুক্ত গৃহ পর্যন্ত।

34

وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ ۗ

আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানী নির্ধারণ করেছি,

যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুস্পদ জন্তু যবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।

فَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا ۗوَبَشِّرِ الْمُخْبِتِينَ

অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাক

এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও;

35

الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَالصَّابِرِينَ عَلَى مَا أَصَابَهُمْ

যাদের অন্তর আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে ভীত হয়

এবং যারা তাদের বিপদাপদে ধৈর্য্যধারণ করে

وَالْمُقِيمِي الصَّلَاةِ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ  

এবং যারা নামায কায়েম করে

ও আমি যা দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।

36

وَالْبُدْنَ جَعَلْنَاهَا لَكُمْ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ لَكُمْ فِيهَا خَيْرٌ ۖ فَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهَا صَوَافَّ ۖ

এবং কা’বার জন্যে উৎসর্গীকৃত উটকে আমি তোমাদের জন্যে আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন করেছি। এতে তোমাদের জন্যে মঙ্গল রয়েছে।

সুতরাং সারিবদ্ধভাবে বাঁধা অবস্থায় তাদের যবেহ করার সময় তোমরা আল্লাহর নাম উচ্চারণ কর।

فَإِذَا وَجَبَتْ جُنُوبُهَا فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْقَانِعَ وَالْمُعْتَرَّ ۚ

অতঃপর যখন তারা কাত হয়ে পড়ে যায় তখন তা থেকে তোমরা আহার কর এবং আহার করাও যে কিছু যাচ্ঞা করে না তাকে এবং যে যাচ্ঞা করে তাকে।

كَذَلِكَ سَخَّرْنَاهَا لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

এমনিভাবে আমি এগুলোকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।

37

لَنْ يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَكِنْ يَنَالُهُ التَّقْوَى مِنْكُمْ ۚ

এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া।

كَذَلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ ۗوَبَشِّرِ الْمُحْسِنِينَ  

এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন।

সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।

38

إِنَّ اللَّهَ يُدَافِعُ عَنِ الَّذِينَ آمَنُوا ۗإِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ خَوَّانٍ كَفُورٍ

আল্লাহ মুমিনদের থেকে শত্রুদেরকে হটিয়ে দেবেন।

আল্লাহ কোন বিশ্বাসঘাতক অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।

39

أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا ۚ وَإِنَّ اللَّهَ عَلَى نَصْرِهِمْ لَقَدِيرٌ

যুদ্ধে অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যাদের সাথে কাফেররা যুদ্ধ করে; কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।

আল্লাহ তাদেরকে সাহায্য করতে অবশ্যই সক্ষম।

40

الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ بِغَيْرِ حَقٍّ  إِلَّا أَنْ يَقُولُوا رَبُّنَا اللَّهُ ۗ

যাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে শুধু এই অপরাধে যে,

তারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ।

وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ 

يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيرًا ۗ

আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে (খ্রীষ্টানদের) নির্ঝন গির্জা, এবাদত খানা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত, যেগুলাতে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়।

وَلَيَنْصُرَنَّ اللَّهُ مَنْ يَنْصُرُهُ ۗإِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ  

আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা আল্লাহর সাহায্য করে।

নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী শক্তিধর।

41

الَّذِينَ إِنْ مَكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ ۗ

তারা এমন লোক যাদেরকে আমি পৃথিবীতে শক্তি-সামর্থন করলে তারা নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করবে।

وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِ  

প্রত্যেক কর্মের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ারভূক্ত।

42

وَإِنْ يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَعَادٌ وَثَمُودُ  

তারা যদি আপনাকে মিথ্যাবাদী বলে, তবে তাদের পূর্বে মিথ্যাবাদী বলেছে কওমে নূহ, আদ, সামুদ,

43

وَقَوْمُ إِبْرَاهِيمَ وَقَوْمُ لُوطٍ

ইব্রাহীম ও লূতের সম্প্রদায়ও।

44

وَأَصْحَابُ مَدْيَنَ ۖ

এবং মাদইয়ানের অধিবাসীরা এবং মিথ্যাবাদী বলা হয়েছিল মূসাকেও।

وَكُذِّبَ مُوسَى فَأَمْلَيْتُ لِلْكَافِرِينَ ثُمَّ أَخَذْتُهُمْ ۖ  فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ

অতঃপর আমি কাফেরদেরকে সুযোগ দিয়েছিলাম এরপর তাদেরকে পাকড়াও করেছিলাম অতএব কি ভীষণ ছিল আমাকে অস্বীকৃতির পরিণাম।

45

فَكَأَيِّنْ مِنْ قَرْيَةٍ أَهْلَكْنَاهَا وَهِيَ ظَالِمَةٌ

আমি কত জনপদ ধ্বংস করেছি এমতাবস্থায় যে, তারা ছিল গোনাহগার।

فَهِيَ خَاوِيَةٌ عَلَى عُرُوشِهَا وَبِئْرٍ مُعَطَّلَةٍ وَقَصْرٍ مَشِيدٍ

এই সব জনপদ এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে এবং কত কূপ পরিত্যক্ত হয়েছে ও কত সুদৃঢ় প্রাসাদ ধ্বংস হয়েছে।

46

‏أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ  فَتَكُونَ لَهُمْ قُلُوبٌ يَعْقِلُونَ بِهَا أَوْ آذَانٌ يَسْمَعُونَ بِهَا ۖ

তারা কি এই উদ্দেশ্যে দেশ ভ্রমণ করেনি,

যাতে তারা সমঝদার হৃদয় ও শ্রবণ শক্তি সম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারে?

فَإِنَّهَا لَا تَعْمَى الْأَبْصَارُ وَلَكِنْ تَعْمَى الْقُلُوبُ الَّتِي فِي الصُّدُورِ

বস্তুতঃ চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তু বক্ষ স্থিত অন্তরই অন্ধ হয়।

47

وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِالْعَذَابِ وَلَنْ يُخْلِفَ اللَّهُ وَعْدَهُ ۚ

তারা আপনাকে আযাব ত্বরান্বিত করতে বলে। অথচ আল্লাহ কখনও তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেন না।

وَإِنَّ يَوْمًا عِنْدَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّونَ

আপনার পালনকর্তার কাছে একদিন তোমাদের গণনার এক হাজার বছরের সমান।

48

وَكَأَيِّنْ مِنْ قَرْيَةٍ أَمْلَيْتُ لَهَا وَهِيَ ظَالِمَةٌ ثُمَّ أَخَذْتُهَا وَإِلَيَّ الْمَصِيرُ

এবং আমি কত জনপদকে অবকাশ দিয়েছি এমতাবস্থায় যে, তারা গোনাহগার ছিল। এরপর তাদেরকে পাকড়াও করেছি

এবং আমার কাছেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

49

قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا أَنَا لَكُمْ نَذِيرٌ مُبِينٌ

বলুনঃ হে লোক সকল! আমি তো তোমাদের জন্যে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ককারী।

50

فَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ

সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং সম্মানজনক রুযী।

51

وَالَّذِينَ سَعَوْا فِي آيَاتِنَا مُعَاجِزِينَ أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ

এবং যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করার জন্যে চেষ্টা করে, তারাই দোযখের অধিবাসী।

52

‏وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُولٍ وَلَا نَبِيٍّ إِلَّا إِذَا تَمَنَّى أَلْقَى الشَّيْطَانُ فِي أُمْنِيَّتِهِ

আমি আপনার পূর্বে যে সমস্ত রাসূল ও নবী প্রেরণ করেছি, তারা যখনই কিছু কল্পনা করেছে, তখনই শয়তান তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রণ করে দিয়েছে।

فَيَنْسَخُ اللَّهُ مَا يُلْقِي الشَّيْطَانُ ثُمَّ يُحْكِمُ اللَّهُ آيَاتِهِ ۗ

অতঃপর আল্লাহ দূর করে দেন শয়তান যা মিশ্রণ করে।

এরপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেন

وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়।

53

لِيَجْعَلَ مَا يُلْقِي الشَّيْطَانُ فِتْنَةً لِلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ وَالْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ ۗ

এ কারণে যে, শয়তান যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন, তাদের জন্যে, যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং যারা পাষাণহৃদয়।

وَإِنَّ الظَّالِمِينَ لَفِي شِقَاقٍ بَعِيدٍ

গোনাহগাররা দূরবর্তী বিরোধিতায় লিপ্ত আছে।

54

وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكَ فَيُؤْمِنُوا بِهِ فَتُخْبِتَ لَهُ قُلُوبُهُمْ ۗ

এবং এ কারণেও যে, যাদেরকে জ্ঞানদান করা হয়েছে; তারা যেন জানে যে এটা আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে সত্য;

অতঃপর তারা যেন এতে বিশ্বাস স্তাপন করে এবং তাদের অন্তর যেন এর প্রতি বিজয়ী হয়।

وَإِنَّ اللَّهَ لَهَادِ الَّذِينَ آمَنُوا إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ

আল্লাহই বিশ্বাস স্থাপনকারীকে সরল পথ প্রদর্শন করেন।

55

وَلَا يَزَالُ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي مِرْيَةٍ مِنْهُ حَتَّى تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً

 أَوْ يَأْتِيَهُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَقِيمٍ

কাফেররা সর্বদাই সন্দেহ পোষন করবে যে পর্যন্ত না তাদের কাছে আকস্মিকভাবে কেয়ামত এসে পড়ে অথবা এসে পড়ে তাদের কাছে এমন দিবসের শাস্তি যা থেকে রক্ষার উপায় নেই।

56

الْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ لِلَّهِ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ ۚ

রাজত্ব সেদিন আল্লাহরই; তিনিই তাদের বিচার করবেন।

فَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ

অতএব যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে তারা নেয়ামত পূর্ণ কাননে থাকবে।

57

وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا فَأُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ

এবং যারা কুফরি করে এবং আমার আয়াত সমূহকে মিথ্যা বলে তাদের জন্যে লাঞ্ছনাকর শাস্তি রয়েছে।

58

وَالَّذِينَ هَاجَرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ قُتِلُوا أَوْ مَاتُوا لَيَرْزُقَنَّهُمُ اللَّهُ رِزْقًا حَسَنًا ۚ

যারা আল্লাহর পথে গৃহ ত্যাগ করেছে, এরপর নিহত হয়েছে অথবা মরে গেছে; আল্লাহ তাদেরকে অবশ্যই উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবেন

وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ

এবং আল্লাহ সর্বোৎকৃষ্ট রিযিক দাতা।

59

لَيُدْخِلَنَّهُمْ مُدْخَلًا يَرْضَوْنَهُ ۗوَإِنَّ اللَّهَ لَعَلِيمٌ حَلِيمٌ

তাদেরকে অবশ্যই এমন এক স্থানে পৌছাবেন, যাকে তারা পছন্দ করবে

এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, সহনশীল।

60

ذَلِكَ وَمَنْ عَاقَبَ بِمِثْلِ مَا عُوقِبَ بِهِ ثُمَّ بُغِيَ عَلَيْهِ لَيَنْصُرَنَّهُ اللَّهُ ۗ

এ তো শুনলে, যে ব্যক্তি নিপীড়িত হয়ে নিপীড়ন পরিমাণে প্রতিশোধ গ্রহণ করে এবং পুনরায় সে নিপীড়িত হয়, আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন।

إِنَّ اللَّهَ لَعَفُوٌّ غَفُورٌ

নিশ্চয় আল্লাহ মার্জনাকারী ক্ষমাশীল।

61

ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَأَنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ

এটা এ জন্যে যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাত্রির মধ্য দাখিল করে দেন

এবং আল্লাহ সবকিছু শোনেন, দেখেন।

62

ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ هُوَ الْبَاطِلُ

এটা এ কারণেও যে, আল্লাহই সত্য; আর তাঁর পরিবর্তে তারা যাকে ডাকে, তা অসত্য

وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ

এবং আল্লাহই সবার উচ্চে, মহান।

63

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ أَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَتُصْبِحُ الْأَرْضُ مُخْضَرَّةً ۗ

তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর ভূপৃষ্ট সবুজ-শ্যামল হয়ে উঠে।

إِنَّ اللَّهَ لَطِيفٌ خَبِيرٌ 

নিশ্চয় আল্লাহ সুক্ষদর্শী, সর্ববিষয়ে খবরদার।

64

لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ

নভোমন্ডল ও ভুপৃষ্ঠে যা কিছু আছে, সব তাঁরই

وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ  

এবং আল্লাহই অভাবমুক্ত প্রশংসার অধিকারী।

65

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ سَخَّرَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ

তুমি কি দেখ না যে, ভূপৃষ্টে যা আছে

এবং সমুদ্রে চলমান নৌকা তৎসমুদয়কে আল্লাহ নিজ আদেশে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন

وَيُمْسِكُ السَّمَاءَ أَنْ تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۗ

এবং তিনি আকাশ স্থির রাখেন, যাতে তাঁর আদেশ ব্যতীত ভূপৃষ্টে পতিত না হয়।

إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ

নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি করুণাশীল, দয়াবান।

66

وَهُوَ الَّذِي أَحْيَاكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ۗ 

তিনিই তোমাদেরকে জীবিত করেছেন, অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে মৃত্যুদান করবেন ও পুনরায় জীবিত করবেন।

إِنَّ الْإِنْسَانَ لَكَفُورٌ

নিশ্চয় মানুষ বড় অকৃতজ্ঞ।

67

لِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا هُمْ نَاسِكُوهُ ۖفَلَا يُنَازِعُنَّكَ فِي الْأَمْرِ ۚ

আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে এবাদতের একটি নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করে দিয়েছি, যা তারা পালন করে।

অতএব তারা যেন এ ব্যাপারে আপনার সাথে বিতর্ক না করে।

وَادْعُ إِلَى رَبِّكَ ۖإِنَّكَ لَعَلَى هُدًى مُسْتَقِيمٍ

আপনি তাদেরকে পালনকর্তার দিকে আহবান করুন।

নিশ্চয় আপনি সরল পথেই আছেন।

68

وَإِنْ جَادَلُوكَ فَقُلِ اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُونَ

তারা যদি আপনার সাথে বিতর্ক করে, তবে বলে দিন, তোমরা যা কর, সে সর্ম্পকে আল্লাহ অধিক জ্ঞাত।

69

اللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كُنْتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ

তোমরা যে বিষয়ে মতবিরোধ করছ, আল্লাহ কিয়ামতের দিন সেই বিষয়ে তোমাদের মধ্যে ফায়সালা করবেন।

70

أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ ۗ إِنَّ ذَلِكَ فِي كِتَابٍ ۚ

তুমি কি জান না যে, আল্লাহ জানেন যা কিছু আকাশে ও ভুমন্ডলে আছে এসব কিতাবে লিখিত আছে।

;إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ

এটা আল্লাহর কাছে সহজ।

71

وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَمَا لَيْسَ لَهُمْ بِهِ عِلْمٌ ۗ

তারা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর পূজা করে, যার কোন সনদ নাযিল করা হয়নি

এবং সে সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই।

وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ نَصِيرٍ

বস্তুতঃ জালেমদের কোন সাহায্যকারী নেই।

72

وَإِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ تَعْرِفُ فِي وُجُوهِ الَّذِينَ كَفَرُوا الْمُنْكَرَ ۖ

যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হয়, তখন তুমি কাফেরদের চোখে মুখে অসন্তোষের লক্ষণ প্রত্যক্ষ করতে পারবে।

يَكَادُونَ يَسْطُونَ بِالَّذِينَ يَتْلُونَ عَلَيْهِمْ آيَاتِنَا ۗ

যারা তাদের কাছে আমার আয়াত সমূহ পাঠ করে, তারা তাদের প্রতি মার মুখো হয়ে উঠে।

قُلْ أَفَأُنَبِّئُكُمْ بِشَرٍّ مِنْ ذَلِكُمُ ۗ

বলুন, আমি কি তোমাদেরকে তদপেক্ষা মন্দ কিছুর সংবাদ দেব?

النَّارُ وَعَدَهَا اللَّهُ الَّذِينَ كَفَرُوا ۖوَبِئْسَ الْمَصِيرُ

তা আগুন; আল্লাহ কাফেরদেরকে এর ওয়াদা দিয়েছেন।

এটা কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।

73

يَا أَيُّهَا النَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٌ فَاسْتَمِعُوا لَهُ ۚ

হে লোক সকল! একটি উপমা বর্ণনা করা হলো, অতএব তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শোন;

إِنَّ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ لَنْ يَخْلُقُوا ذُبَابًا وَلَوِ اجْتَمَعُوا لَهُ ۖ

তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের পূজা কর, তারা কখনও একটি মাছি সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা সকলে একত্রিত হয়।

وَإِنْ يَسْلُبْهُمُ الذُّبَابُ شَيْئًا لَا يَسْتَنْقِذُوهُ مِنْهُ ۚ

আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবে না,

ضَعُفَ الطَّالِبُ وَالْمَطْلُوبُ

প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়েই শক্তিহীন।

74

مَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ ۗإِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ

তারা আল্লাহর যথাযোগ্য মর্যাদা বোঝেনি।

নিশ্চয় আল্লাহ শক্তিধর, মহাপরাক্রমশীল।

75

اللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ

আল্লাহ ফেরেশতা ও মানুষের মধ্য থেকে রাসূল মনোনীত করেন।

আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্ব দ্রষ্টা!

76

يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۗوَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الْأُمُورُ

তিনি জানেন যা তাদের সামনে আছে এবং যা পশ্চাতে আছে

এবং সবকিছু আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।

77

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ارْكَعُوا وَاسْجُدُوا وَاعْبُدُوا رَبَّكُمْ وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ۩

হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর, সেজদা কর, তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর

এবং সৎকাজ সম্পাদন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।

78

وَجَاهِدُوا فِي اللَّهِ حَقَّ جِهَادِهِ ۚ

তোমরা আল্লাহর জন্যে শ্রম স্বীকার কর যেভাবে শ্রম স্বীকার করা উচিত।

هُوَ اجْتَبَاكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ ۚ

তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি।

مِلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ ۚ

তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে কায়েম থাক।

 هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمِينَ مِنْ قَبْلُ وَفِي هَذَالِيَكُونَ الرَّسُولُ شَهِيدًا عَلَيْكُمْ وَتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ ۚ

তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও,

যাতে রসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষ্যদাতা এবং তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলির জন্যে।

فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَاعْتَصِمُوا بِاللَّهِ هُوَ مَوْلَاكُمْ ۖ

সুতরাং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে শক্তভাবে ধারণ কর। তিনিই তোমাদের মালিক।

فَنِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيرُ

অতএব তিনি কত উত্তম মালিক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।

*********



© Copy Rights:

Zahid Javed Rana, Abid Javed Rana,

Lahore, Pakistan

Email: cmaj37@gmail.com

Visits wef Aug 2024