Quran Bengali Translation

Surah Al Momin


In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful


1

حم

হা-মীম।

2

تَنْزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ

কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে, যিনি পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ।

3

غَافِرِ الذَّنْبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيدِ الْعِقَابِ ذِي الطَّوْلِ ۖ

পাপ ক্ষমাকারী, তওবা কবুলকারী,

কঠোর শাস্তিদাতা ও সামর্থ দাতা (এর নিতেন)

لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ ۖ إِلَيْهِ الْمَصِيرُ

তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।

তাঁরই দিকে হবে প্রত্যাবর্তন।

4

مَا يُجَادِلُ فِي آيَاتِ اللَّهِ إِلَّا الَّذِينَ كَفَرُوا

কাফেররাই কেবল আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে।

فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِي الْبِلَادِ

কাজেই নগরীসমূহে তাদের বিচরণ যেন আপনাকে বিভ্রান্তিতে না ফেলে।

5

كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَالْأَحْزَابُ مِنْ بَعْدِهِمْ ۖ

তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায় মিথ্যারোপ করেছিল, আর তাদের পরে অন্য অনেক দল

وَهَمَّتْ كُلُّ أُمَّةٍ بِرَسُولِهِمْ لِيَأْخُذُوهُ ۖ

ও প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ পয়গম্বরকে আক্রমণ করার ইচ্ছা করেছিল

وَجَادَلُوا بِالْبَاطِلِ لِيُدْحِضُوا بِهِ الْحَقَّ فَأَخَذْتُهُمْ ۖ

এবং তারা মিথ্যা বিতর্কে প্রবৃত্ত হয়েছিল, যেন সত্যধর্মকে ব্যর্থ করে দিতে পারে। অতঃপর আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম।

فَكَيْفَ كَانَ عِقَابِ

কেমন ছিল আমার শাস্তি।

6

وَكَذَلِكَ حَقَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ عَلَى الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّهُمْ أَصْحَابُ النَّارِ

এভাবে কাফেরদের বেলায় আপনার পালনকর্তার এ বাক্য সত্য হল যে, তারা জাহান্নামী।

7

الَّذِينَ يَحْمِلُونَ الْعَرْشَ وَمَنْ حَوْلَهُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ

যারা আরশ বহন করে এবং যারা তার চারপাশে আছে, তারা তাদের পালনকর্তার সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করে,

وَيُؤْمِنُونَ بِهِ وَيَسْتَغْفِرُونَ لِلَّذِينَ آمَنُوا

তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মুমিনদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে,

رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَحْمَةً وَعِلْمًا

হে আমাদের পালনকর্তা, আপনার রহমত ও জ্ঞান সবকিছুতে পরিব্যাপ্ত।

فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ

অতএব, যারা তওবা করে এবং আপনার পথে চলে, তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।

8

رَبَّنَا وَأَدْخِلْهُمْ جَنَّاتِ عَدْنٍ الَّتِي وَعَدْتَهُمْ وَمَنْ صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ ۚ

হে আমাদের পালনকর্তা, আর তাদেরকে দাখিল করুন চিরকাল বসবাসের জান্নাতে, যার ওয়াদা আপনি তাদেরকে দিয়েছেন এবং তাদের বাপ-দাদা, পতি-পত্নী ও সন্তানদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে তাদেরকে।

إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ

নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

9

وَقِهِمُ السَّيِّئَاتِ ۚ

এবং আপনি তাদেরকে অমঙ্গল থেকে রক্ষা করুন।

وَمَنْ تَقِ السَّيِّئَاتِ يَوْمَئِذٍ فَقَدْ رَحِمْتَهُ ۚ

আপনি যাকে সেদিন অমঙ্গল থেকে রক্ষা করবেন, তার প্রতি অনুগ্রহই করবেন।

وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ‏

এটাই মহাসাফল্য।

10

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يُنَادَوْنَ

لَمَقْتُ اللَّهِ أَكْبَرُ مِنْ مَقْتِكُمْ أَنْفُسَكُمْ إِذْ تُدْعَوْنَ إِلَى الْإِيمَانِ فَتَكْفُرُونَ

যারা কাফের তাদেরকে উচ্চঃস্বরে বলা হবে, তোমাদের নিজেদের প্রতি তোমাদের আজকের এ ক্ষোভ অপেক্ষা আল্লার ক্ষোভ অধিক ছিল, যখন তোমাদেরকে ঈমান আনতে বলা হয়েছিল, অতঃপর তোমরা কুফরী করছিল।

11

قَالُوا رَبَّنَا أَمَتَّنَا اثْنَتَيْنِ وَأَحْيَيْتَنَا اثْنَتَيْنِ

তারা বলবে হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি আমাদেরকে দু’বার মৃত্যু দিয়েছেন এবং দু’ বার জীবন দিয়েছেন।

فَاعْتَرَفْنَا بِذُنُوبِنَا فَهَلْ إِلَى خُرُوجٍ مِنْ سَبِيلٍ

এখন আমাদের অপরাধ স্বীকার করছি। অতঃপর এখন ও নিস্কৃতির কোন উপায় আছে কি?

12

ذَلِكُمْ بِأَنَّهُ إِذَا دُعِيَ اللَّهُ وَحْدَهُ كَفَرْتُمْ ۖ

তোমাদের এ বিপদ এ কারণে যে, যখন এক আল্লাহকে ডাকা হত, তখন তোমরা কাফের হয়ে যেতে

وَإِنْ يُشْرَكْ بِهِ تُؤْمِنُوا ۚ

যখন তার সাথে শরীককে ডাকা হত তখন তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করতে।

فَالْحُكْمُ لِلَّهِ الْعَلِيِّ الْكَبِيرِ  

এখন আদেশ তাই, যা আল্লাহ করবেন, যিনি সর্বোচ্চ, মহান।

13

هُوَ الَّذِي يُرِيكُمْ آيَاتِهِ وَيُنَزِّلُ لَكُمْ مِنَ السَّمَاءِ رِزْقًا ۚ

তিনিই তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান এবং তোমাদের জন্যে আকাশ থেকে নাযিল করেন রুযী।

وَمَا يَتَذَكَّرُ إِلَّا مَنْ يُنِيبُ

চিন্তা-ভাবনা তারাই করে, যারা আল্লাহর দিকে রুজু থাকে।

14

فَادْعُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ

অতএব, তোমরা আল্লাহকে খাঁটি বিশ্বাস সহকারে ডাক, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।

15

رَفِيعُ الدَّرَجَاتِ ذُو الْعَرْشِ

يُلْقِي الرُّوحَ مِنْ أَمْرِهِ عَلَى مَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ لِيُنْذِرَ يَوْمَ التَّلَاقِ

তিনিই সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী, আরশের মালিক, তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা তত্ত্বপূর্ণ বিষয়াদি নাযিল করেন, যাতে সে সাক্ষাতের দিন সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করে।

16

يَوْمَ هُمْ بَارِزُونَ ۖ لَا يَخْفَى عَلَى اللَّهِ مِنْهُمْ شَيْءٌ ۚ

যেদিন তারা বের হয়ে পড়বে,

আল্লাহর কাছে তাদের কিছুই গোপন থাকবে না।

لِمَنِ الْمُلْكُ الْيَوْمَ ۖ

আজ রাজত্ব কার?

لِلَّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ

এক প্রবল পরাক্রান্ত আল্লাহর।

17

الْيَوْمَ تُجْزَى كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ ۚ

আজ প্রত্যেকেই তার কৃতকর্মের প্রতিদান পাবে।

لَا ظُلْمَ الْيَوْمَ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ

আজ যুলুম নেই।

নিশ্চয় আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।

18

وَأَنْذِرْهُمْ يَوْمَ الْآزِفَةِ إِذِ الْقُلُوبُ لَدَى الْحَنَاجِرِ كَاظِمِينَ ۚ

আপনি তাদেরকে আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করুন, যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে, দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে।

مَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ حَمِيمٍ وَلَا شَفِيعٍ يُطَاعُ

পাপিষ্ঠদের জন্যে কোন বন্ধু নেই এবং সুপারিশকারীও নেই; যার সুপারিশ গ্রাহ্য হবে।

19

يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ

চোখের চুরি এবং অন্তরের গোপন বিষয় তিনি জানেন।

20

وَاللَّهُ يَقْضِي بِالْحَقِّ ۖ وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ لَا يَقْضُونَ بِشَيْءٍ ۗ

আল্লাহ ফয়সালা করেন সঠিকভাবে,

আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে ডাকে, তারা কিছুই ফয়সালা করে না।

إِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ  

নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন, সবকিছু দেখেন।

21

أَوَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ كَانُوا مِنْ قَبْلِهِمْ ۚ

তারা কি দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করে না, যাতে দেখত তাদের পূর্বসুরিদের কি পরিণাম হয়েছে?

كَانُوا هُمْ أَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةً وَآثَارًا فِي الْأَرْضِ

তাদের শক্তি ও কীর্তি পৃথিবীতে এদের অপেক্ষা অধিকতর ছিল।

فَأَخَذَهُمُ اللَّهُ بِذُنُوبِهِمْ وَمَا كَانَ لَهُمْ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَاقٍ

অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে তাদের গোনাহের কারণে ধৃত করেছিলেন

এবং আল্লাহ থেকে তাদেরকে রক্ষাকারী কেউ হয়নি।

22

ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَانَتْ تَأْتِيهِمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَيِّنَاتِ فَكَفَرُوا فَأَخَذَهُمُ اللَّهُ ۚ

এর কারণ এই যে, তাদের কাছে তাদের রসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করত, অতঃপর তারা কাফের হয়ে যায়, তখন আল্লাহ তাদের ধৃত করেন।

إِنَّهُ قَوِيٌّ شَدِيدُ الْعِقَابِ

নিশ্চয় তিনি শক্তিধর, কঠোর শাস্তিদাতা।

23

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَى بِآيَاتِنَا وَسُلْطَانٍ مُبِينٍ  

আমি আমার নিদর্শনাবলী ও স্পষ্ট প্রমাণসহ মূসাকে প্রেরণ করেছি।

24

إِلَى فِرْعَوْنَ وَهَامَانَ وَقَارُونَ

ফেরাউন, হামান ও কারুণের কাছে,

فَقَالُوا سَاحِرٌ كَذَّابٌ

অতঃপর তারা বলল, সে তো জাদুকর, মিথ্যাবাদী।

25

فَلَمَّا جَاءَهُمْ بِالْحَقِّ مِنْ عِنْدِنَا قَالُوا

অতঃপর মূসা যখন আমার কাছ থেকে সত্যসহ তাদের কাছে পৌঁছাল;

اقْتُلُوا أَبْنَاءَ الَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ وَاسْتَحْيُوا نِسَاءَهُمْ ۚ

তখন তারা বলল, যারা তার সঙ্গী হয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তাদের পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা কর, আর তাদের নারীদেরকে জীবিত রাখ।

وَمَا كَيْدُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ

কাফেরদের চক্রান্ত ব্যর্থই হয়েছে।

26

وَقَالَ فِرْعَوْنُ ذَرُونِي أَقْتُلْ مُوسَى وَلْيَدْعُ رَبَّهُ ۖ

ফেরাউন বলল; তোমরা আমাকে ছাড়, মূসাকে হত্যা করতে দাও, ডাকুক সে তার পালনকর্তাকে!

إِنِّي أَخَافُ أَنْ يُبَدِّلَ دِينَكُمْ أَوْ أَنْ يُظْهِرَ فِي الْأَرْضِ الْفَسَادَ

আমি আশংকা করি যে, সে তোমাদের ধর্ম পরিবর্তন করে দেবে অথবা সে দেশময় বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।

27

وَقَالَ مُوسَى إِنِّي عُذْتُ بِرَبِّي وَرَبِّكُمْ مِنْ كُلِّ مُتَكَبِّرٍ لَا يُؤْمِنُ بِيَوْمِ الْحِسَابِ  

মূসা বলল, যারা হিসাব দিবসে বিশ্বাস করে না এমন প্রত্যেক অহংকারী থেকে আমি আমার ও তোমাদের পালনকর্তার আশ্রয় নিয়ে নিয়েছি।

28

وَقَالَ رَجُلٌ مُؤْمِنٌ مِنْ آلِ فِرْعَوْنَ يَكْتُمُ إِيمَانَهُ

ফেরাউন গোত্রের এক মুমিন ব্যক্তি, যে তার ঈমান গোপন রাখত, সে বলল,

أَتَقْتُلُونَ رَجُلًا أَنْ يَقُولَ رَبِّيَ اللَّهُ

তোমরা কি একজনকে এজন্যে হত্যা করবে যে, সে বলে, আমার পালনকর্তা আল্লাহ,

وَقَدْ جَاءَكُمْ بِالْبَيِّنَاتِ مِنْ رَبِّكُمْ ۖ

অথচ সে তোমাদের পালনকর্তার নিকট থেকে স্পষ্ট প্রমাণসহ তোমাদের নিকট আগমন করেছে?

وَإِنْ يَكُ كَاذِبًا فَعَلَيْهِ كَذِبُهُ ۖ

যদি সে মিথ্যাবাদী হয়, তবে তার মিথ্যাবাদিতা তার উপরই চাপবে,

وَإِنْ يَكُ صَادِقًا يُصِبْكُمْ بَعْضُ الَّذِي يَعِدُكُمْ ۖ

আর যদি সে সত্যবাদী হয়, তবে সে যে শাস্তির কথা বলছে, তার কিছু না কিছু তোমাদের উপর পড়বেই।

إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ كَذَّابٌ

নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারী, মিথ্যাবাদীকে পথ প্রদর্শন করেন না।

29

يَا قَوْمِ لَكُمُ الْمُلْكُ الْيَوْمَ ظَاهِرِينَ فِي الْأَرْضِ

হে আমার কওম, আজ এদেশে তোমাদেরই রাজত্ব, দেশময় তোমরাই বিচরণ করছ;

فَمَنْ يَنْصُرُنَا مِنْ بَأْسِ اللَّهِ إِنْ جَاءَنَا ۚ

কিন্তু আমাদের আল্লাহর শাস্তি এসে গেলে কে আমাদেরকে সাহায্য করবে?

قَالَ فِرْعَوْنُ مَا أُرِيكُمْ إِلَّا مَا أَرَى وَمَا أَهْدِيكُمْ إِلَّا سَبِيلَ الرَّشَادِ

ফেরাউন বলল, আমি যা বুঝি, তোমাদেরকে তাই বোঝাই, আর আমি তোমাদেরকে মঙ্গলের পথই দেখাই।

30

وَقَالَ الَّذِي آمَنَ يَا قَوْمِ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ مِثْلَ يَوْمِ الْأَحْزَابِ

সে মুমিন ব্যক্তি বললঃ হে আমার কওম, আমি তোমাদের জন্যে পূর্ববর্তী সম্প্রদায়সমূহের মতই বিপদসঙ্কুল দিনের আশংকা করি।

31

مِثْلَ دَأْبِ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَ وَالَّذِينَ مِنْ بَعْدِهِمْ ۚ

যেমন, কওমে নূহ, আদ, সামুদ ও তাদের পরবর্তীদের অবস্থা হয়েছিল।

وَمَا اللَّهُ يُرِيدُ ظُلْمًا لِلْعِبَادِ

আল্লাহ বান্দাদের প্রতি কোন যুলুম করার ইচ্ছা করেন না।

32

‏وَيَا قَوْمِ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ يَوْمَ التَّنَادِ  

হে আমার কওম, আমি তোমাদের জন্যে প্রচন্ড হাঁক-ডাকের দিনের আশংকা করি।

33

يَوْمَ تُوَلُّونَ مُدْبِرِينَ مَا لَكُمْ مِنَ اللَّهِ مِنْ عَاصِمٍ ۗ

যেদিন তোমরা পেছনে ফিরে পলায়ন করবে; কিন্তু আল্লাহ থেকে তোমাদেরকে রক্ষাকারী কেউ থাকবে না।

وَمَنْ يُضْلِلِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِنْ هَادٍ

আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই।

34

وَلَقَدْ جَاءَكُمْ يُوسُفُ مِنْ قَبْلُ بِالْبَيِّنَاتِ فَمَا زِلْتُمْ فِي شَكٍّ مِمَّا جَاءَكُمْ بِهِ ۖ

ইতিপূর্বে তোমাদের কাছে ইউসুফ সুস্পষ্ট প্রামাণাদিসহ আগমন করেছিল,

অতঃপর তোমরা তার আনীত বিষয়ে সন্দেহই পোষণ করতে।

حَتَّى إِذَا هَلَكَ قُلْتُمْ لَنْ يَبْعَثَ اللَّهُ مِنْ بَعْدِهِ رَسُولًا ۚ

অবশেষে যখন সে মারা গেল, তখন তোমরা বলতে শুরু করলে, আল্লাহ ইউসুফের পরে আর কাউকে রসূলরূপে পাঠাবেন না।

كَذَلِكَ يُضِلُّ اللَّهُ مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ مُرْتَابٌ  

এমনিভাবে আল্লাহ সীমালংঘনকারী, সংশয়ী ব্যক্তিকে পথভ্রষ্ট করেন।

35

الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ ۖ

যারা নিজেদের কাছে আগত কোন দলীল ছাড়াই আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে,

كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللَّهِ وَعِنْدَ الَّذِينَ آمَنُوا ۚ

তাদের একজন আল্লাহ ও মুমিনদের কাছে খুবই অসন্তোষজনক।

كَذَلِكَ يَطْبَعُ اللَّهُ عَلَى كُلِّ قَلْبِ مُتَكَبِّرٍ جَبَّارٍ

এমনিভাবে আল্লাহ প্রত্যেক অহংকারী-স্বৈরাচারী ব্যক্তির অন্তরে মোহর এঁটে দেন।

36

وَقَالَ فِرْعَوْنُ يَا هَامَانُ ابْنِ لِي صَرْحًا لَعَلِّي أَبْلُغُ الْأَسْبَابَ

ফেরাউন বলল, হে হামান, তুমি আমার জন্যে একটি সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মাণ কর, হয়তো আমি পৌঁছে যেতে পারব।

37

أَسْبَابَ السَّمَاوَاتِ

আকাশের পথে,

فَأَطَّلِعَ إِلَى إِلَهِ مُوسَى وَإِنِّي لَأَظُنُّهُ كَاذِبًا ۚ

অতঃপর উঁকি মেরে দেখব মূসার আল্লাহকে। বস্তুতঃ আমি তো তাকে মিথ্যাবাদীই মনে করি।

وَكَذَلِكَ زُيِّنَ لِفِرْعَوْنَ سُوءُ عَمَلِهِ وَصُدَّ عَنِ السَّبِيلِ ۚ

এভাবেই ফেরাউনের কাছে সুশোভিত করা হয়েছিল তার মন্দ কর্মকে এবং সোজা পথ থেকে তাকে বিরত রাখা হয়েছিল।

وَمَا كَيْدُ فِرْعَوْنَ إِلَّا فِي تَبَابٍ  

ফেরাউনের চক্রান্ত ব্যর্থ হওয়ারই ছিল।

38

وَقَالَ الَّذِي آمَنَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُونِ أَهْدِكُمْ سَبِيلَ الرَّشَادِ  

মুমিন লোকটি বললঃ হে আমার কওম, তোমরা আমার অনুসরণ কর। আমি তোমাদেরকে সৎপথ প্রদর্শন করব।

39

يَا قَوْمِ إِنَّمَا هَذِهِ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا مَتَاعٌ وَإِنَّ الْآخِرَةَ هِيَ دَارُ الْقَرَارِ  

হে আমার কওম, পার্থিব এ জীবন তো কেবল উপভোগের বস্তু, আর পরকাল হচ্ছে স্থায়ী বসবাসের গৃহ।

40

مَنْ عَمِلَ سَيِّئَةً فَلَا يُجْزَى إِلَّا مِثْلَهَا ۖ

যে মন্দ কর্ম করে, সে কেবল তার অনুরূপ প্রতিফল পাবে,

وَمَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ

আর যে, পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে।

يُرْزَقُونَ فِيهَا بِغَيْرِ حِسَابٍ  

তথায় তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে।

41

وَيَا قَوْمِ مَا لِي أَدْعُوكُمْ إِلَى النَّجَاةِ وَتَدْعُونَنِي إِلَى النَّارِ

হে আমার কওম, ব্যাপার কি, আমি তোমাদেরকে দাওয়াত দেই মুক্তির দিকে, আর তোমরা আমাকে দাওয়াত দাও জাহান্নামের দিকে।

42

تَدْعُونَنِي لِأَكْفُرَ بِاللَّهِ وَأُشْرِكَ بِهِ مَا لَيْسَ لِي بِهِ عِلْمٌ

তোমরা আমাকে দাওয়াত দাও, যাতে আমি আল্লাহকে অস্বীকার করি

এবং তাঁর সাথে শরীক করি এমন বস্তুকে, যার কোন প্রমাণ আমার কাছে নেই।

وَأَنَا أَدْعُوكُمْ إِلَى الْعَزِيزِ الْغَفَّارِ  

আমি তোমাদেরকে দাওয়াত দেই পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল আল্লাহর দিকে।

43

لَا جَرَمَ أَنَّمَا تَدْعُونَنِي إِلَيْهِ لَيْسَ لَهُ دَعْوَةٌ فِي الدُّنْيَا وَلَا فِي الْآخِرَةِ

এতে সন্দেহ নেই যে, তোমরা আমাকে যার দিকে দাওয়াত দাও, হইকালে ও পরকালে তার কোন দাওয়াত নেই!

وَأَنَّ مَرَدَّنَا إِلَى اللَّهِ وَأَنَّ الْمُسْرِفِينَ هُمْ أَصْحَابُ النَّارِ  

আমাদের প্রত্যাবর্তন আল্লাহর দিকে এবং সীমা লংঘকারীরাই জাহান্নামী।

44

فَسَتَذْكُرُونَ مَا أَقُولُ لَكُمْ ۚ

আমি তোমাদেরকে যা বলছি, তোমরা একদিন তা স্মরণ করবে।

وَأُفَوِّضُ أَمْرِي إِلَى اللَّهِ ۚ

আমি আমার ব্যাপার আল্লাহর কাছে সমর্পণ করছি।

إِنَّ اللَّهَ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ

নিশ্চয় বান্দারা আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে।

45

فَوَقَاهُ اللَّهُ سَيِّئَاتِ مَا مَكَرُوا ۖ

অতঃপর আল্লাহ তাকে তাদের চক্রান্তের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করলেন

وَحَاقَ بِآلِ فِرْعَوْنَ سُوءُ الْعَذَابِ  

এবং ফেরাউন গোত্রকে শোচনীয় আযাব গ্রাস করল।

46

النَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا غُدُوًّا وَعَشِيًّا ۖ

সকালে ও সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের সামনে পেশ করা হয়

وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ أَدْخِلُوا آلَ فِرْعَوْنَ أَشَدَّ الْعَذَابِ

এবং যেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন আদেশ করা হবে, ফেরাউন গোত্রকে কঠিনতর আযাবে দাখিল কর।

47

وَإِذْ يَتَحَاجُّونَ فِي النَّارِ فَيَقُولُ الضُّعَفَاءُ لِلَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا

যখন তারা জাহান্নামে পরস্পর বিতর্ক করবে, অতঃপর দূর্বলরা অহংকারীদেরকে বলবে,

إِنَّا كُنَّا لَكُمْ تَبَعًا فَهَلْ أَنْتُمْ مُغْنُونَ عَنَّا نَصِيبًا مِنَ النَّارِ  

আমরা তোমাদের অনুসারী ছিলাম। তোমরা এখন জাহান্নামের আগুনের কিছু অংশ আমাদের থেকে নিবৃত করবে কি?

48

قَالَ الَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا إِنَّا كُلٌّ فِيهَا إِنَّ اللَّهَ قَدْ حَكَمَ بَيْنَ الْعِبَادِ

অহংকারীরা বলবে, আমরা সবাই তো জাহান্নামে আছি। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ফয়সালা করে দিয়েছেন।

49

‏وَقَالَ الَّذِينَ فِي النَّارِ لِخَزَنَةِ جَهَنَّمَ

যারা জাহান্নামে আছে, তারা জাহান্নামের রক্ষীদেরকে বলবে,

ادْعُوا رَبَّكُمْ يُخَفِّفْ عَنَّا يَوْمًا مِنَ الْعَذَابِ  

তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে বল, তিনি যেন আমাদের থেকে একদিনের আযাব লাঘব করে দেন।

50

قَالُوا أَوَلَمْ تَكُ تَأْتِيكُمْ رُسُلُكُمْ بِالْبَيِّنَاتِ ۖ

রক্ষীরা বলবে, তোমাদের কাছে কি সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ তোমাদের রসূল আসেননি?

قَالُوا بَلَى ۚ

তারা বলবে হঁ্যা।

قَالُوا فَادْعُوا ۗ وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ  

রক্ষীরা বলবে, তবে তোমরাই দোয়া কর।

বস্তুতঃ কাফেরদের দোয়া নিস্ফলই হয়।

51

إِنَّا لَنَنْصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِينَ آمَنُوا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُومُ الْأَشْهَادُ  

আমি সাহায্য করব রসূলগণকে ও মুমিনগণকে পার্থিব জীবনে ও সাক্ষীদের দন্ডায়মান হওয়ার দিবসে।

52

يَوْمَ لَا يَنْفَعُ الظَّالِمِينَ مَعْذِرَتُهُمْ ۖ وَلَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ  

সে দিন যালেমদের ওযর-আপত্তি কোন উপকারে আসবে না,

তাদের জন্যে থাকবে অভিশাপ এবং তাদের জন্যে থাকবে মন্দ গৃহ।

53

وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْهُدَى وَأَوْرَثْنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ الْكِتَابَ  

নিশ্চয় আমি মূসাকে হেদায়েত দান করেছিলাম এবং বনী ইসরাঈলকে কিতাবের উত্তরাধিকারী করেছিলাম।

54

هُدًى وَذِكْرَى لِأُولِي الْأَلْبَابِ

বুদ্ধিমানদের জন্যে উপদেশ ও হেদায়েত স্বরূপ।

55

فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ

অতএব, আপনি সবর করুন নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য।

وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ  

আপনি আপনার গোনাহের জন্যে ক্ষমা প্রর্থনা করুন এবং সকাল-সন্ধ্যায় আপনার পালনকর্তার প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করুন।

56

إِنَّ الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ ۙ إِنْ فِي صُدُورِهِمْ إِلَّا كِبْرٌ مَا هُمْ بِبَالِغِيهِ ۚ

নিশ্চয় যারা আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে তাদের কাছে আগত কোন দলীল ব্যতিরেকে,

তাদের অন্তরে আছে কেবল আত্নম্ভরিতা, যা অর্জনে তারা সফল হবে না।

فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ  

অতএব, আপনি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করুন।

নিশ্চয় তিনি সবকিছু শুনেন, সবকিছু দেখেন।

57

لَخَلْقُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ أَكْبَرُ مِنْ خَلْقِ النَّاسِ

মানুষের সৃষ্টি অপেক্ষা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের সৃষ্টি কঠিনতর।

وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ

কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বোঝে না।

58

وَمَا يَسْتَوِي الْأَعْمَى وَالْبَصِيرُ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَلَا الْمُسِيءُ ۚ

অন্ধ ও চক্ষুষ্মান সমান নয়, আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম  করে এবং কুকর্মী।

قَلِيلًا مَا تَتَذَكَّرُونَ

তোমরা অল্পই অনুধাবন করে থাক।

59

إِنَّ السَّاعَةَ لَآتِيَةٌ لَا رَيْبَ فِيهَا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يُؤْمِنُونَ

কেয়ামত অবশ্যই আসবে, এতে সন্দেহ নেই;

কিন্ত অধিকাংশ লোক বিশ্বাস স্থাপন করে না।

60

وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ

তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব।

إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ

যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে।

61

اللَّهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِتَسْكُنُوا فِيهِ وَالنَّهَارَ مُبْصِرًا ۚ

তিনিই আল্লাহ যিনি রাত্র সৃষ্টি করেছেন তোমাদের বিশ্রামের জন্যে এবং দিবসকে করেছেন দেখার জন্যে।

إِنَّ اللَّهَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ

নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না।

62

ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ ۖ

তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা, সব কিছুর স্রষ্টা। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।

فَأَنَّى تُؤْفَكُونَ

অতএব তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছ?

63

كَذَلِكَ يُؤْفَكُ الَّذِينَ كَانُوا بِآيَاتِ اللَّهِ يَجْحَدُونَ  

এমনিভাবে তাদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে।

64

اللَّهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ قَرَارًا وَالسَّمَاءَ بِنَاءً

আল্লাহ, পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্যে বাসস্থান, আকাশকে করেছেন ছাদ

وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ وَرَزَقَكُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ ۚ

এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক।

ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ ۖ فَتَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ

তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা।

বিশ্বজগতের পালনকর্তা, আল্লাহ বরকতময়।

65

هُوَ الْحَيُّ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ ۗ

তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তাঁকে ডাক তাঁর খাঁটি এবাদতের মাধ্যমে।

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহর।

66

قُلْ إِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَعْبُدَ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ لَمَّا جَاءَنِيَ الْبَيِّنَاتُ مِنْ رَبِّي

বলুন, যখন আমার কাছে আমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রমাণাদি এসে গেছে, তখন আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যার পূজা কর, তার এবাদত করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে।

وَأُمِرْتُ أَنْ أُسْلِمَ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ

আমাকে আদেশ করা হয়েছে বিশ্ব পালনকর্তার অনুগত থাকতে।

67

هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ تُرَابٍ

তিনি তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা,

ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ يُخْرِجُكُمْ طِفْلًا

অতঃপর শুক্রবিন্দু দ্বারা, অতঃপর জমাট রক্ত দ্বারা, অতঃপর তোমাদেরকে বের করেন শিশুরূপে,

ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُونُوا شُيُوخًا ۚ

অতঃপর তোমরা যৌবনে পদর্পণ কর, অতঃপর বার্ধক্যে উপনীত হও।

وَمِنْكُمْ مَنْ يُتَوَفَّى مِنْ قَبْلُ ۖ وَلِتَبْلُغُوا أَجَلًا مُسَمًّى وَلَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ

তোমাদের কারও কারও এর পূর্বেই মৃত্যু ঘটে

এবং তোমরা নির্ধারিত কালে পৌঁছ এবং তোমরা যাতে অনুধাবন কর।

68

هُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ ۖ

তিনিই জীবিত করেন এবং মৃত্যু দেন।

فَإِذَا قَضَى أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ

যখন তিনি কোন কাজের আদেশ করেন, তখন একথাই বলেন, হয়ে যা’-তা হয়ে যায়।

69

أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ

আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে,

أَنَّى يُصْرَفُونَ

তারা কোথায় ফিরছে?

70

الَّذِينَ كَذَّبُوا بِالْكِتَابِ وَبِمَا أَرْسَلْنَا بِهِ رُسُلَنَا فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ ۖ

যারা কিতাবের প্রতি এবং যে বিষয় দিয়ে আমি পয়গম্বরগণকে প্রেরণ করেছি, সে বিষয়ের প্রতি মিথ্যারোপ করে।

অতএব, সত্বরই তারা জানতে পারবে।

71

إِذِ الْأَغْلَالُ فِي أَعْنَاقِهِمْ وَالسَّلَاسِلُ يُسْحَبُونَ

যখন বেড়িও শৃঙ্খল তাদের গলদেশে পড়বে। তাদেরকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে।

72

فِي الْحَمِيمِ ثُمَّ فِي النَّارِ يُسْجَرُونَ

ফুটন্ত পানিতে, অতঃপর তাদেরকে আগুনে জ্বালানো হবে।

73

ثُمَّ قِيلَ لَهُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ تُشْرِكُونَ

অতঃপর তাদেরকে বলা হবে, কোথায় গেল যাদেরকে তোমরা শরীক করতে।

74

مِنْ دُونِ اللَّهِ ۖ

আল্লাহ ব্যতীত?

قَالُوا ضَلُّوا عَنَّا بَلْ لَمْ نَكُنْ نَدْعُو مِنْ قَبْلُ شَيْئًا ۚ

তারা বলবে, তারা আমাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে গেছে; বরং আমরা তো ইতিপূর্বে কোন কিছুর পূজাই করতাম না।

كَذَلِكَ يُضِلُّ اللَّهُ الْكَافِرِينَ

এমনি ভাবে আল্লাহ কাফেরদেরকে বিভ্রান্ত করেন।

75

ذَلِكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَفْرَحُونَ فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَبِمَا كُنْتُمْ تَمْرَحُونَ

এটা একারণে যে, তোমরা দুনিয়াতে অন্যায়ভাবে আনন্দ-উল্লাস করতে এবং এ কারণে যে, তোমরা ঔদ্ধত্য করতে।

76

ادْخُلُوا أَبْوَابَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا ۖ

প্রবেশ কর তোমরা জাহান্নামের দরজা দিয়ে সেখানে চিরকাল বসবাসের জন্যে।

فَبِئْسَ مَثْوَى الْمُتَكَبِّرِينَ

কত নিকৃষ্ট দাম্ভিকদের আবাসস্থল।

77

فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ ۚ

অতএব আপনি সবর করুন। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য।

فَإِمَّا نُرِيَنَّكَ بَعْضَ الَّذِي نَعِدُهُمْ أَوْ نَتَوَفَّيَنَّكَ فَإِلَيْنَا يُرْجَعُونَ

অতঃপর আমি কাফেরদেরকে যে শাস্তির ওয়াদা দেই, তার কিয়দংশ যদি আপনাকে দেখিয়ে দেই অথবা আপনার প্রাণ হরণ করে নেই, সর্বাবস্থায় তারা তো আমারই কাছে ফিরে আসবে।

78

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِنْ قَبْلِكَ مِنْهُمْ مَنْ قَصَصْنَا عَلَيْكَ وَمِنْهُمْ مَنْ لَمْ نَقْصُصْ عَلَيْكَ ۗ

আমি আপনার পূর্বে অনেক রসূল প্রেরণ করেছি,

তাদের কারও কারও ঘটনা আপনার কাছে বিবৃত করেছি এবং কারও কারও ঘটনা আপনার কাছে বিবৃত করিনি।

وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَنْ يَأْتِيَ بِآيَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ

আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কোন নিদর্শন নিয়ে আসা কোন রসূলের কাজ নয়।

فَإِذَا جَاءَ أَمْرُ اللَّهِ قُضِيَ بِالْحَقِّ وَخَسِرَ هُنَالِكَ الْمُبْطِلُونَ

যখন আল্লাহর আদেশ আসবে, তখন ন্যায় সঙ্গত ফয়সালা হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে মিথ্যাপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

79

‏ اللَّهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَنْعَامَ لِتَرْكَبُوا مِنْهَا وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ

আল্লাহ তোমাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছেন, যাতে কোন কোনটিই বাহন হিসাবে ব্যবহার কর এবং কোন কোনটিকে ভক্ষণ কর।

80

وَلَكُمْ فِيهَا مَنَافِعُ وَلِتَبْلُغُوا عَلَيْهَا حَاجَةً فِي صُدُورِكُمْ

তাতে তোমাদের জন্যে অনেক উপকারিতা রয়েছে আর এজন্যে সৃষ্টি করেছেন;

যাতে সেগুলোতে আরোহণ করে তোমরা তোমাদের অভীষ্ট প্রয়োজন পূর্ণ করতে পার।

وَعَلَيْهَا وَعَلَى الْفُلْكِ تُحْمَلُونَ

এগুলোর উপর এবং নৌকার উপর তোমরা বাহিত হও।

81

وَيُرِيكُمْ آيَاتِهِ فَأَيَّ آيَاتِ اللَّهِ تُنْكِرُونَ

তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান।

অতএব, তোমরা আল্লাহর কোন কোন নিদর্শনকে অস্বীকার করবে?

82

أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ ۚ

তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি?

করলে দেখত, তাদের পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছে।

كَانُوا أَكْثَرَ مِنْهُمْ وَأَشَدَّ قُوَّةً وَآثَارًا فِي الْأَرْضِ

তারা তাদের চেয়ে সংখ্যায় বেশী এবং শক্তি ও কীর্তিতে অধিক প্রবল ছিল,

فَمَا أَغْنَى عَنْهُمْ مَا كَانُوا يَكْسِبُونَ

অতঃপর তাদের কর্ম তাদেরকে কোন উপকার দেয়নি।

83

فَلَمَّا جَاءَتْهُمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَيِّنَاتِ فَرِحُوا بِمَا عِنْدَهُمْ مِنَ الْعِلْمِ

তাদের কাছে যখন তাদের রসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ আগমন করেছিল, তখন তারা নিজেদের জ্ঞান-গরিমার দম্ভ প্রকাশ করেছিল।

وَحَاقَ بِهِمْ مَا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ

তারা যে বিষয় নিয়ে ঠাট্টাবিদ্রুপ করেছিল, তাই তাদেরকে গ্রাস করে নিয়েছিল।

84

فَلَمَّا رَأَوْا بَأْسَنَا قَالُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَحْدَهُ وَكَفَرْنَا بِمَا كُنَّا بِهِ مُشْرِكِينَ

তারা যখন আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল, তখন বলল, আমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করলাম এবং যাদেরকে শরীক করতাম, তাদেরকে পরিহার করলাম।

85

فَلَمْ يَكُ يَنْفَعُهُمْ إِيمَانُهُمْ لَمَّا رَأَوْا بَأْسَنَا ۖ

অতঃপর তাদের এ ঈমান তাদের কোন উপকারে আসল না যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করল।

سُنَّتَ اللَّهِ الَّتِي قَدْ خَلَتْ فِي عِبَادِهِ ۖ

আল্লাহর এ নিয়মই পূর্ব থেকে তাঁর বান্দাদের মধ্যে প্রচলিত হয়েছে।

وَخَسِرَ هُنَالِكَ الْكَافِرُونَ

সেক্ষেত্রে কাফেররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

*********



© Copy Rights:

Zahid Javed Rana, Abid Javed Rana,

Lahore, Pakistan

Email: cmaj37@gmail.com

Visits wef Aug 2024