Quran Bengali Translation

Surah Al Saad


In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful


1

ص ۚ وَالْقُرْآنِ ذِي الذِّكْرِ

ছোয়াদ। শপথ উপদেশপূর্ণ কোরআনের,

2

بَلِ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي عِزَّةٍ وَشِقَاقٍ 

বরং যারা কাফের, তারা অহংকার ও বিরোধিতায় লিপ্ত।

3

كَمْ أَهْلَكْنَا مِنْ قَبْلِهِمْ مِنْ قَرْنٍ

তাদের আগে আমি কত জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি,

فَنَادَوْا وَلَاتَ حِينَ مَنَاصٍ 

অতঃপর তারা আর্তনাদ করতে শুরু করেছে কিন্তু তাদের নিষ্কৃতি লাভের সময় ছিল না।

4

وَعَجِبُوا أَنْ جَاءَهُمْ مُنْذِرٌ مِنْهُمْ ۖ

তারা বিস্ময়বোধ করে যে, তাদেরই কাছে তাদের মধ্যে থেকে একজন সতর্ককারী আগমন করেছেন।

وَقَالَ الْكَافِرُونَ هَذَا سَاحِرٌ كَذَّابٌ 

আর কাফেররা বলে এ-তো এক মিথ্যাচারী যাদুকর।

5

أَجَعَلَ الْآلِهَةَ إِلَهًا وَاحِدًا ۖ إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ 

সে কি বহু উপাস্যের পরিবর্তে এক উপাস্যের উপাসনা সাব্যস্ত করে দিয়েছে।

নিশ্চয় এটা এক বিস্ময়কর ব্যাপার।

6

وَانْطَلَقَ الْمَلَأُ مِنْهُمْ أَنِ امْشُوا وَاصْبِرُوا عَلَى آلِهَتِكُمْ ۖ

তাদের কতিপয় বিশিষ্ট ব্যক্তি একথা বলে প্রস্থান করে যে, তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের উপাস্যদের পূজায় দৃঢ় থাক।

إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ يُرَادُ

নিশ্চয়ই এ বক্তব্য কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত।

7

مَا سَمِعْنَا بِهَذَا فِي الْمِلَّةِ الْآخِرَةِ إِنْ هَذَا إِلَّا اخْتِلَاقٌ 

আমরা সাবেক ধর্মে এ ধরনের কথা শুনিনি। এটা মনগড়া ব্যাপার বৈ নয়।

8

أَأُنْزِلَ عَلَيْهِ الذِّكْرُ مِنْ بَيْنِنَا ۚ

আমাদের মধ্য থেকে শুধু কি তারই প্রতি উপদেশ বানী অবতীর্ণ হল?

بَلْ هُمْ فِي شَكٍّ مِنْ ذِكْرِي ۖ

বস্তুতঃ ওরা আমার উপদেশ সম্পর্কে সন্দিহান;

بَلْ لَمَّا يَذُوقُوا عَذَابِ 

বরং ওরা এখনও আমার মার আস্বাদন করেনি।

9

أَمْ عِنْدَهُمْ خَزَائِنُ رَحْمَةِ رَبِّكَ الْعَزِيزِ الْوَهَّابِ  

না কি তাদের কাছে আপনার পরাক্রান্ত দয়াবান পালনকর্তার রহমতের কোন ভান্ডার রয়েছে?

10

أَمْ لَهُمْ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ۖ

নাকি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর উপর তাদের সাম্রাজ্য রয়েছে?

 فَلْيَرْتَقُوا فِي الْأَسْبَابِ

থাকলে তাদের আকাশে আরোহণ করা উচিত রশি ঝুলিয়ে।

11

جُنْدٌ مَا هُنَالِكَ مَهْزُومٌ مِنَ الْأَحْزَابِ 

এক্ষেত্রে বহু বাহিনীর মধ্যে ওদেরও এক বাহিনী আছে, যা পরাজিত হবে।

12

كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَعَادٌ وَفِرْعَوْنُ ذُو الْأَوْتَادِ

তাদের পূর্বেও মিথ্যারোপ করেছিল নূহের সম্প্রদায়, আদ, কীলক বিশিষ্ট ফেরাউন,

13

وَثَمُودُ وَقَوْمُ لُوطٍ وَأَصْحَابُ الْأَيْكَةِ أُولَئِكَ الْأَحْزَابُ  

সামুদ, লূতের সম্প্রদায় ও আইকার লোকেরা।

এরাই ছিল বহু বাহিনী।

14

إِنْ كُلٌّ إِلَّا كَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ عِقَابِ  

এদের প্রত্যেকেই পয়গম্বরগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে। ফলে আমার আযাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

15

وَمَا يَنْظُرُ هَؤُلَاءِ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً مَا لَهَا مِنْ فَوَاقٍ

কেবল একটি মহানাদের অপেক্ষা করছে, যাতে দম ফেলার অবকাশ থাকবে না।

16

وَقَالُوا رَبَّنَا عَجِّلْ لَنَا قِطَّنَا قَبْلَ يَوْمِ الْحِسَابِ 

তারা বলে, হে আমাদের পরওয়ারদেগার, আমাদের প্রাপ্য অংশ হিসাব দিবসের আগেই দিয়ে দাও।

17

اصْبِرْ عَلَى مَا يَقُولُونَ وَاذْكُرْ عَبْدَنَا دَاوُودَ ذَا الْأَيْدِ ۖإِنَّهُ أَوَّابٌ 

তারা যা বলে তাতে আপনি সবর করুন এবং আমার শক্তিশালী বান্দা দাউদকে স্মরণ করুন।

সে ছিল আমার প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।

18

إِنَّا سَخَّرْنَا الْجِبَالَ مَعَهُ يُسَبِّحْنَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِشْرَاقِ 

আমি পর্বতমালাকে তার অনুগামী করে দিয়েছিলাম, তারা সকাল-সন্ধ্যায় তার সাথে পবিত্রতা ঘোষণা করত;

19

‏وَالطَّيْرَ مَحْشُورَةً ۖ كُلٌّ لَهُ أَوَّابٌ 

আর পক্ষীকুলকেও, যারা তার কাছে সমবেত হত।

সবাই ছিল তাঁর প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।

20

وَشَدَدْنَا مُلْكَهُ وَآتَيْنَاهُ الْحِكْمَةَ وَفَصْلَ الْخِطَابِ  

আমি তাঁর সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম

এবং তাঁকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও ফয়সালাকারী বাগ্নীতা।

21

وَهَلْ أَتَاكَ نَبَأُ الْخَصْمِ إِذْ تَسَوَّرُوا الْمِحْرَابَ 

আপনার কাছে দাবীদারদের বৃত্তান্ত পৌছেছে, যখন তারা প্রাচীর ডিঙ্গীয়ে এবাদত খানায় প্রবেশ করেছিল।

22

‏إِذْ دَخَلُوا عَلَى دَاوُودَ فَفَزِعَ مِنْهُمْ ۖ

যখন তারা দাউদের কাছে অনুপ্রবেশ করল, তখন সে সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল।

 قَالُوا لَا تَخَفْ ۖ

তারা বললঃ ভয় করবেন না;

خَصْمَانِ بَغَى بَعْضُنَا عَلَى بَعْضٍ فَاحْكُمْ بَيْنَنَا بِالْحَقِّ وَلَا تُشْطِطْ وَاهْدِنَا إِلَى سَوَاءِ الصِّرَاطِ  

আমরা বিবদমান দুটি পক্ষ, একে অপরের প্রতি বাড়াবাড়ি করেছি। অতএব, আমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করুন, অবিচার করবেন না।

আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করুন।

23

إِنَّ هَذَا أَخِي لَهُ تِسْعٌ وَتِسْعُونَ نَعْجَةً وَلِيَ نَعْجَةٌ وَاحِدَةٌ

সে আমার ভাই,

সে নিরানব্বই দুম্বার মালিক আর আমি মালিক একটি মাদী দুম্বার।

فَقَالَ أَكْفِلْنِيهَا وَعَزَّنِي فِي الْخِطَابِ  

এরপরও সে বলেঃ এটিও আমাকে দিয়ে দাও। সে কথাবার্তায় আমার উপর বল প্রয়োগ করে।

24

قَالَ لَقَدْ ظَلَمَكَ بِسُؤَالِ نَعْجَتِكَ إِلَى نِعَاجِهِ ۖ

দাউদ বললঃ সে তোমার দুম্বাটিকে নিজের দুম্বাগুলোর সাথে সংযুক্ত করার দাবী করে তোমার প্রতি অবিচার করেছে।

وَإِنَّ كَثِيرًا مِنَ الْخُلَطَاءِ لَيَبْغِي بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ

শরীকদের অনেকেই একে অপরের প্রতি জুলুম করে থাকে।

إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَقَلِيلٌ مَا هُمْ ۗ

তবে তারা করে না, যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ও সৎকর্ম সম্পাদনকারী। অবশ্য এমন লোকের সংখ্যা অল্প।

وَظَنَّ دَاوُودُ أَنَّمَا فَتَنَّاهُ  فَاسْتَغْفَرَ رَبَّهُ وَخَرَّ رَاكِعًا وَأَنَابَ  ۩

দাউদের খেয়াল হল যে, আমি তাকে পরীক্ষা করছি।

অতঃপর সে তার পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল, সেজদায় লুটিয়ে পড়ল এবং তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করল।

25

فَغَفَرْنَا لَهُ ذَلِكَ ۖوَإِنَّ لَهُ عِنْدَنَا لَزُلْفَى وَحُسْنَ مَآبٍ 

আমি তার সে অপরাধ ক্ষমা করলাম।

নিশ্চয় আমার কাছে তার জন্যে রয়েছে উচ্চ মর্তবা ও সুন্দর আবাসস্থল।

26

يَا دَاوُودُ إِنَّا جَعَلْنَاكَ خَلِيفَةً فِي الْأَرْضِ فَاحْكُمْ بَيْنَ النَّاسِ بِالْحَقِّ ۚ

হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব, তুমি মানুষের মাঝে ন্যায়সঙ্গতভাবে রাজত্ব কর এবং খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না।

وَلَا تَتَّبِعِ الْهَوَى فَيُضِلَّكَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ۚ

তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে।

إِنَّ الَّذِينَ يَضِلُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ بِمَا نَسُوا يَوْمَ الْحِسَابِ  

নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয়, তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি, এ কারণে যে, তারা হিসাবদিবসকে ভূলে যায়।

27

وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا بَاطِلًا ۚ

আমি আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী কোন কিছু অযথা সৃষ্টি করিনি।

ذَلِكَ ظَنُّ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ

এটা কাফেরদের ধারণা।

فَوَيْلٌ لِلَّذِينَ كَفَرُوا مِنَ النَّارِ 

অতএব, কাফেরদের জন্যে রয়েছে দূর্ভোগ অর্থাৎ জাহান্নাম।

28

أَمْ نَجْعَلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَالْمُفْسِدِينَ فِي الْأَرْضِ

আমি কি বিশ্বাসী ও সৎকর্মীদেরকে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী কাফেরদের সমতুল্য করে দেব?

أَمْ نَجْعَلُ الْمُتَّقِينَ كَالْفُجَّارِ 

না খোদাভীরুদেরকে পাপাচারীদের সম্মান করে দেব।

29

كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِيَدَّبَّرُوا آيَاتِهِ  وَلِيَتَذَكَّرَ أُولُو الْأَلْبَابِ

এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে

এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।

30

وَوَهَبْنَا لِدَاوُودَ سُلَيْمَانَ ۚ

আমি দাউদকে সোলায়মান দান করেছি।

نِعْمَ الْعَبْدُ ۖ إِنَّهُ أَوَّابٌ 

সে একজন উত্তম বান্দা। সে ছিল প্রত্যাবর্তনশীল।

31

إِذْ عُرِضَ عَلَيْهِ بِالْعَشِيِّ الصَّافِنَاتُ الْجِيَادُ 

যখন তার সামনে অপরাহ্নে উৎকৃষ্ট অশ্বরাজি পেশ করা হল,

32

فَقَالَ إِنِّي أَحْبَبْتُ حُبَّ الْخَيْرِ عَنْ ذِكْرِ رَبِّي حَتَّى تَوَارَتْ بِالْحِجَابِ 

তখন সে বললঃ আমি তো আমার পরওয়ারদেগারের স্মরণে বিস্মৃত হয়ে সম্পদের মহব্বতে মুগ্ধ হয়ে পড়েছি-এমনকি সূর্য ডুবে গেছে।

33

‏رُدُّوهَا عَلَيَّ ۖ

এগুলোকে আমার কাছে ফিরিয়ে আন।

 فَطَفِقَ مَسْحًا بِالسُّوقِ وَالْأَعْنَاقِ  

অতঃপর সে তাদের পা ও গলদেশ ছেদন করতে শুরু করল।

34

وَلَقَدْ فَتَنَّا سُلَيْمَانَ وَأَلْقَيْنَا عَلَى كُرْسِيِّهِ جَسَدًا ثُمَّ أَنَابَ

আমি সোলায়মানকে পরীক্ষা করলাম এবং রেখে দিলাম তার সিংহাসনের উপর একটি নিস্প্রাণ দেহ।

অতঃপর সে রুজু হল।

35

قَالَ رَبِّ اغْفِرْ لِي وَهَبْ لِي مُلْكًا لَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ مِنْ بَعْدِي ۖ

সোলায়মান বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে মাফ

করুন এবং আমাকে এমন সাম্রাজ্য দান করুন যা আমার পরে আর কেউ পেতে পারবে না।

إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ

নিশ্চয় আপনি মহাদাতা।

36

فَسَخَّرْنَا لَهُ الرِّيحَ تَجْرِي بِأَمْرِهِ رُخَاءً حَيْثُ أَصَابَ 

তখন আমি বাতাসকে তার অনুগত করে দিলাম, যা তার হুকুমে অবাধে প্রবাহিত হত যেখানে সে পৌছাতে চাইত।

37

وَالشَّيَاطِينَ كُلَّ بَنَّاءٍ وَغَوَّاصٍ 

আর সকল শয়তানকে তার অধীন করে দিলাম অর্থৎ, যারা ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরী।

38

وَآخَرِينَ مُقَرَّنِينَ فِي الْأَصْفَادِ 

এবং অন্য আরও অনেককে অধীন করে দিলাম, যারা আবদ্ধ থাকত শৃঙ্খলে।

39

هَذَا عَطَاؤُنَا فَامْنُنْ أَوْ أَمْسِكْ بِغَيْرِ حِسَابٍ

এগুলো আমার অনুগ্রহ,

অতএব, এগুলো কাউকে দাও অথবা নিজে রেখে দাও-এর কোন হিসেব দিতে হবে না।

40

وَإِنَّ لَهُ عِنْدَنَا لَزُلْفَى وَحُسْنَ مَآبٍ 

নিশ্চয় তার জন্যে আমার কাছে রয়েছে মর্যাদা ও শুভ পরিণতি।

41

وَاذْكُرْ عَبْدَنَا أَيُّوبَ إِذْ نَادَى رَبَّهُ أَنِّي مَسَّنِيَ الشَّيْطَانُ بِنُصْبٍ وَعَذَابٍ 

স্মরণ করুণ, আমার বান্দা আইয়্যুবের কথা, যখন সে তার পালনকর্তাকে আহবান করে বললঃ শয়তান আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্ট পৌছিয়েছে।

42

ارْكُضْ بِرِجْلِكَ ۖهَذَا مُغْتَسَلٌ بَارِدٌ وَشَرَابٌ  

তুমি তোমার পা দিয়ে ভূমিতে আঘাত কর।

ঝরণা নির্গত হল গোসল করার জন্যে শীতল ও পান করার জন্যে।

43

وَوَهَبْنَا لَهُ أَهْلَهُ وَمِثْلَهُمْ مَعَهُمْ رَحْمَةً مِنَّا وَذِكْرَى لِأُولِي الْأَلْبَابِ 

আমি তাকে দিলাম তার পরিজনবর্গ ও তাদের মত আরও অনেক আমার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ এবং বুদ্ধিমানদের জন্যে উপদেশস্বরূপ।

44

وَخُذْ بِيَدِكَ ضِغْثًا فَاضْرِبْ بِهِ وَلَا تَحْنَثْ ۗ

তুমি তোমার হাতে এক মুঠো তৃণশলা নাও, তদ্বারা আঘাত কর এবং শপথ ভঙ্গ করো না।

إِنَّا وَجَدْنَاهُ صَابِرًا ۚ

আমি তাকে পেলাম সবরকারী।

نِعْمَ الْعَبْدُ ۖ إِنَّهُ أَوَّابٌ 

চমৎকার বান্দা সে। নিশ্চয় সে ছিল প্রত্যাবর্তনশীল।

45

وَاذْكُرْ عِبَادَنَا إِبْرَاهِيمَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ أُولِي الْأَيْدِي وَالْأَبْصَارِ 

স্মরণ করুন, হাত ও চোখের অধিকারী আমার বান্দা ইব্রাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের কথা।

46

إِنَّا أَخْلَصْنَاهُمْ بِخَالِصَةٍ ذِكْرَى الدَّارِ

আমি তাদের এক বিশেষ গুণ তথা পরকালের স্মরণ দ্বারা স্বাতন্ত্র্য দান করেছিলাম।

47

وَإِنَّهُمْ عِنْدَنَا لَمِنَ الْمُصْطَفَيْنَ الْأَخْيَارِ 

আর তারা আমার কাছে মনোনীত ও সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত।

48

وَاذْكُرْ إِسْمَاعِيلَ وَالْيَسَعَ وَذَا الْكِفْلِ ۖ وَكُلٌّ مِنَ الْأَخْيَارِ

স্মরণ করুণ, ইসমাঈল, আল ইয়াসা ও যুলকিফলের কথা। তারা প্রত্যেকেই গুনীজন।

49

هَذَا ذِكْرٌ ۚ

এ এক মহৎ আলোচনা।

وَإِنَّ لِلْمُتَّقِينَ لَحُسْنَ مَآبٍ

খোদাভীরুদের জন্যে রয়েছে উত্তম ঠিকানা-

50

جَنَّاتِ عَدْنٍ مُفَتَّحَةً لَهُمُ الْأَبْوَابُ 

তথা স্থায়ী বসবাসের জান্নাত; তাদের জন্যে তার দ্বার উম্মুক্ত রয়েছে।

51

مُتَّكِئِينَ فِيهَا يَدْعُونَ فِيهَا بِفَاكِهَةٍ كَثِيرَةٍ وَشَرَابٍ 

সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসবে। তারা সেখানে চাইবে অনেক ফল-মূল ও পানীয়।

52

وَعِنْدَهُمْ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ أَتْرَابٌ 

তাদের কাছে থাকবে আনতনয়না সমবয়স্কা রমণীগণ।

53

هَذَا مَا تُوعَدُونَ لِيَوْمِ الْحِسَابِ 

তোমাদেরকে এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে বিচার দিবসের জন্যে।

54

إِنَّ هَذَا لَرِزْقُنَا مَا لَهُ مِنْ نَفَادٍ 

এটা আমার দেয়া রিযিক যা শেষ হবে না।

55

هَذَا ۚ وَإِنَّ لِلطَّاغِينَ لَشَرَّ مَآبٍ 

এটাতো শুনলে, এখন দুষ্টদের জন্যে রয়েছে নিকৃষ্ট ঠিকানা

56

جَهَنَّمَ يَصْلَوْنَهَا فَبِئْسَ الْمِهَادُ 

তথা জাহান্নাম। তারা সেখানে প্রবেশ করবে। অতএব, কত নিকৃষ্ট সেই আবাস স্থল।

57

هَذَا فَلْيَذُوقُوهُ حَمِيمٌ وَغَسَّاقٌ

এটা উত্তপ্ত পানি ও পঁূজ; অতএব তারা একে আস্বাদন করুক।

58

وَآخَرُ مِنْ شَكْلِهِ أَزْوَاجٌ 

এ ধরনের আরও কিছু শাস্তি আছে।

59

هَذَا فَوْجٌ مُقْتَحِمٌ مَعَكُمْ ۖ

এই তো একদল তোমাদের সাথে প্রবেশ করছে।

لَا مَرْحَبًا بِهِمْ ۚ إِنَّهُمْ صَالُو النَّارِ 

তাদের জন্যে অভিনন্দন নেই তারা তো জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

60

قَالُوا بَلْ أَنْتُمْ لَا مَرْحَبًا بِكُمْ ۖ أَنْتُمْ قَدَّمْتُمُوهُ لَنَا ۖ

তারা বলবে, তোমাদের জন্যে ও তো অভিনন্দন নেই। তোমরাই আমাদেরকে এ বিপদের সম্মুখীন করেছ।

فَبِئْسَ الْقَرَارُ  

অতএব, এটি কতই না ঘৃণ্য আবাসস্থল।

61

قَالُوا رَبَّنَا مَنْ قَدَّمَ لَنَا هَذَا فَزِدْهُ عَذَابًا ضِعْفًا فِي النَّارِ

তারা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, যে আমাদেরকে এর সম্মুখীন করেছে, আপনি জাহান্নামে তার শাস্তি দ্বিগুণ করে দিন।

62

وَقَالُوا مَا لَنَا لَا نَرَى رِجَالًا كُنَّا نَعُدُّهُمْ مِنَ الْأَشْرَارِ 

তারা আরও বলবে, আমাদের কি হল যে, আমরা যাদেরকে মন্দ লোক বলে গণ্য করতাম, তাদেরকে এখানে দেখছি না।

63

 أَتَّخَذْنَاهُمْ سِخْرِيًّا أَمْ زَاغَتْ عَنْهُمُ الْأَبْصَارُ 

আমরা কি অহেতুক তাদেরকে ঠাট্টার পাত্র করে নিয়েছিলাম, না আমাদের দৃষ্টি ভুল করছে?

64

إِنَّ ذَلِكَ لَحَقٌّ تَخَاصُمُ أَهْلِ النَّارِ 

এটা অর্থাৎ জাহান্নামীদের পারস্পরিক বাক-বিতন্ডা অবশ্যম্ভাবী।

65

قُلْ إِنَّمَا أَنَا مُنْذِرٌ ۖ

বলুন, আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র

 وَمَا مِنْ إِلَهٍ إِلَّا اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ  

এবং এক পরাক্রমশালী আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।

66

رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزِيزُ الْغَفَّارُ  

তিনি আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, পরাক্রমশালী, মার্জনাকারী।

67

قُلْ هُوَ نَبَأٌ عَظِيمٌ  

বলুন, এটি এক মহাসংবাদ,

68

أَنْتُمْ عَنْهُ مُعْرِضُونَ

যা থেকে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ।

69

مَا كَانَ لِيَ مِنْ عِلْمٍ بِالْمَلَإِ الْأَعْلَى إِذْ يَخْتَصِمُونَ

ঊর্ধ্ব জগৎ সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান ছিল না যখন ফেরেশতারা কথাবার্তা বলছিল।

70

إِنْ يُوحَى إِلَيَّ إِلَّا أَنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُبِينٌ 

আমার কাছে এ ওহীই আসে যে, আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।

71

إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِنْ طِينٍ 

যখন আপনার পালনকর্তা ফেরেশতাগণকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করব।

72

فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِنْ رُوحِي فَقَعُوا لَهُ سَاجِدِينَ 

যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সম্মুখে সেজদায় নত হয়ে যেয়ো।

73

فَسَجَدَ الْمَلَائِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ 

অতঃপর সমস্ত ফেরেশতাই একযোগে সেজদায় নত হল,

74

إِلَّا إِبْلِيسَ اسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ 

কিন্তু ইবলীস; সে অহংকার করল এবং অস্বীকারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।

75

قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ ۖ

আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল?

أَسْتَكْبَرْتَ أَمْ كُنْتَ مِنَ الْعَالِينَ 

তুমি অহংকার করলে, না তুমি তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন?

76

قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْهُ ۖخَلَقْتَنِي مِنْ نَارٍ وَخَلَقْتَهُ مِنْ طِينٍ 

সে বললঃ আমি তার চেয়ে উত্তম আপনি

আমাকে আগুনের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা।

77

قَالَ فَاخْرُجْ مِنْهَا فَإِنَّكَ رَجِيمٌ 

আল্লাহ বললেনঃ বের হয়ে যা, এখান থেকে। কারণ, তুই অভিশপ্ত।

78

وَإِنَّ عَلَيْكَ لَعْنَتِي إِلَى يَوْمِ الدِّينِ 

তোর প্রতি আমার এ অভিশাপ বিচার দিবস পর্যন্ত স্থায়ী হবে।

79

قَالَ رَبِّ فَأَنْظِرْنِي إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ 

সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।

80

قَالَ فَإِنَّكَ مِنَ الْمُنْظَرِينَ  

আল্লঅহ বললেনঃ তোকে অবকাশ দেয়া হল।

81

إِلَى يَوْمِ الْوَقْتِ الْمَعْلُومِ  

সে সময়ের দিন পর্যন্ত যা জানা।

82

قَالَ فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ  

সে বলল, আপনার ইযযতের কসম, আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে বিপথগামী করে দেব।

83

إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ  

তবে তাদের মধ্যে যারা আপনার খাঁটি বান্দা, তাদেরকে ছাড়া।

84

قَالَ فَالْحَقُّ وَالْحَقَّ أَقُولُ 

আল্লাহ বললেনঃ তাই ঠিক, আর আমি সত্য বলছি-

85

لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنْكَ وَمِمَّنْ تَبِعَكَ مِنْهُمْ أَجْمَعِينَ 

তোর দ্বারা আর তাদের মধ্যে যারা তোর অনুসরণ করবে তাদের দ্বারা আমি জাহান্নাম পূর্ণ করব।

86

قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِينَ 

বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না আর আমি লৌকিকতাকারীও নই।

87

إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِلْعَالَمِينَ  

এটা তো বিশ্ববাসীর জন্যে এক উপদেশ মাত্র।

88

وَلَتَعْلَمُنَّ نَبَأَهُ بَعْدَ حِينٍ  

তোমরা কিছু কাল পরে এর সংবাদ অবশ্যই জানতে পারবে।

*********



© Copy Rights:

Zahid Javed Rana, Abid Javed Rana,

Lahore, Pakistan

Email: cmaj37@gmail.com

Visits wef Aug 2024