Quran Bengali TranslationSurah Saba |
In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful
1 |
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَلَهُ الْحَمْدُ فِي الْآخِرَةِ ۚ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি নভোমন্ডলে যা আছে এবং ভূমন্ডলে যা আছে সব কিছুর মালিক এবং তাঁরই প্রশংসা পরকালে। وَهُوَ الْحَكِيمُ الْخَبِيرُ তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। |
2 |
يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا ۚ তিনি জানেন যা ভূগর্ভে প্রবেশ করে, যা সেখান থেকে নির্গত হয়, যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় এবং যা আকাশে উত্থিত হয়। وَهُوَ الرَّحِيمُ الْغَفُورُ তিনি পরম দয়ালু ক্ষমাশীল। |
3 |
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَا تَأْتِينَا السَّاعَةُ ۖ কাফেররা বলে আমাদের উপর কেয়ামত আসবে না। বলুন কেন আসবে না? قُلْ بَلَى وَرَبِّي لَتَأْتِيَنَّكُمْ عَالِمِ الْغَيْبِ ۖ আমার শপথ-অবশ্যই আসবে। পালনকর্তার তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত। لَا يَعْزُبُ عَنْهُ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ وَلَا أَصْغَرُ مِنْ ذَلِكَ وَلَا أَكْبَرُ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُبِينٍ নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে তাঁর আগোচরে নয় অণু পরিমাণ কিছু, না তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ-সমস্তই আছে সুস্পষ্ট কিতাবে। |
4 |
لِيَجْزِيَ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ۚ তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন। أُولَئِكَ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক। |
5 |
وَالَّذِينَ سَعَوْا فِي آيَاتِنَا مُعَاجِزِينَ أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مِنْ رِجْزٍ أَلِيمٌ আর যারা আমার আয়াত সমূহকে ব্যর্থ করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়, তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। |
6 |
وَيَرَى الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ الَّذِي أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ هُوَ الْحَقَّ যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, তারা আপনার পালনকর্তার নিকট থেকে অবর্তীর্ণ কোরআনকে সত্য জ্ঞান করে এবং وَيَهْدِي إِلَى صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ এটা মানুষকে পরাক্রমশালী, প্রশংসার্হ আল্লাহর পথ প্রদর্শন করে। |
7 |
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا هَلْ نَدُلُّكُمْ عَلَى رَجُلٍ يُنَبِّئُكُمْ কাফেররা বলে, আমরা কি তোমাদেরকে এমন ব্যক্তির সন্ধান দেব, যে তোমাদেরকে খবর দেয় যে; إِذَا مُزِّقْتُمْ كُلَّ مُمَزَّقٍ إِنَّكُمْ لَفِي خَلْقٍ جَدِيدٍ তোমরা সম্পুর্ণ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও তোমরা নতুন সৃজিত হবে। |
8 |
أَفْتَرَى عَلَى اللَّهِ كَذِبًا أَمْ بِهِ جِنَّةٌ ۗ بَلِ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ فِي الْعَذَابِ وَالضَّلَالِ الْبَعِيدِ সে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে, না হয় সে উম্মাদ এবং যারা পরকালে অবিশ্বাসী, তারা আযাবে ও ঘোর পথভ্রষ্টতায় পতিত আছে। |
9 |
أَفَلَمْ يَرَوْا إِلَى مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ مِنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ ۚ তারা কি তাদের সামনের ও পশ্চাতের আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিলক্ষ্য করে না? إِنْ نَشَأْ نَخْسِفْ بِهِمُ الْأَرْضَ أَوْ نُسْقِطْ عَلَيْهِمْ كِسَفًا مِنَ السَّمَاءِ ۚ আমি ইচ্ছা করলে তাদের সহ ভূমি ধসিয়ে দেব অথবা আকাশের কোন খন্ড তাদের উপর পতিত করব। إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَةً لِكُلِّ عَبْدٍ مُنِيبٍ আল্লাহ অভিমুখী প্রত্যেক বান্দার জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। |
10 |
وَلَقَدْ آتَيْنَا دَاوُودَ مِنَّا فَضْلًا ۖ আমি দাউদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম এই আদেশ মর্মে যে, يَا جِبَالُ أَوِّبِي مَعَهُ وَالطَّيْرَ ۖ وَأَلَنَّا لَهُ الْحَدِيدَ হে পর্বতমালা, তোমরা দাউদের সাথে আমার পবিত্রতা ঘোষণা কর এবং হে পক্ষী সকল, তোমরাও। আমি তাঁর জন্য লৌহকে নরম করে ছিলাম। |
11 |
أَنِ اعْمَلْ سَابِغَاتٍ وَقَدِّرْ فِي السَّرْدِ ۖ এবং তাকে আমি বলে ছিলাম, প্রশস্ত বর্ম তৈরী কর, কড়াসমূহ যথাযথভাবে সংযুক্ত কর وَاعْمَلُوا صَالِحًا ۖ إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ এবং সৎকর্ম সম্পাদন কর। তোমরা যা কিছু কর, আমি তা দেখি। |
12 |
وَلِسُلَيْمَانَ الرِّيحَ غُدُوُّهَا شَهْرٌ وَرَوَاحُهَا شَهْرٌ ۖ আর আমি সোলায়মানের অধীন করেছিলাম বায়ুকে, যা সকালে এক মাসের পথ এবং বিকালে এক মাসের পথ অতিক্রম করত। وَأَسَلْنَا لَهُ عَيْنَ الْقِطْرِ ۖ وَمِنَ الْجِنِّ مَنْ يَعْمَلُ بَيْنَ يَدَيْهِ بِإِذْنِ رَبِّهِ ۖ আমি তার জন্যে গলিত তামার এক ঝরণা প্রবাহিত করেছিলাম। কতক জিন তার সামনে কাজ করত তার পালনকর্তার আদেশে। وَمَنْ يَزِغْ مِنْهُمْ عَنْ أَمْرِنَا نُذِقْهُ مِنْ عَذَابِ السَّعِيرِ তাদের যে কেউ আমার আদেশ অমান্য করবে, আমি জ্বলন্ত অগ্নির-শাস্তি আস্বাদন করাব। |
13 |
يَعْمَلُونَ لَهُ مَا يَشَاءُ مِنْ مَحَارِيبَ وَتَمَاثِيلَ وَجِفَانٍ كَالْجَوَابِ وَقُدُورٍ رَاسِيَاتٍ ۚ তারা সোলায়মানের ইচ্ছানুযায়ী দুর্গ, ভাস্কর্য, হাউযসদৃশ বৃহদাকার পাত্র এবং চুল্লির উপর স্থাপিত বিশাল ডেগ নির্মাণ করত। اعْمَلُوا آلَ دَاوُودَ شُكْرًا ۚ وَقَلِيلٌ مِنْ عِبَادِيَ الشَّكُورُ হে দাউদ পরিবার! কৃতজ্ঞতা সহকারে তোমরা কাজ করে যাও। আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পসংখ্যকই কৃতজ্ঞ। |
14 |
فَلَمَّا قَضَيْنَا عَلَيْهِ الْمَوْتَ مَا دَلَّهُمْ عَلَى مَوْتِهِ إِلَّا دَابَّةُ الْأَرْضِ تَأْكُلُ مِنْسَأَتَهُ ۖ যখন আমি সোলায়মানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণ পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল। সোলায়মানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। فَلَمَّا خَرَّ تَبَيَّنَتِ الْجِنُّ أَنْ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ الْغَيْبَ مَا لَبِثُوا فِي الْعَذَابِ الْمُهِينِ যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্ছনাপূর্ণ শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না। |
15 |
لَقَدْ كَانَ لِسَبَإٍ فِي مَسْكَنِهِمْ آيَةٌ ۖجَنَّتَانِ عَنْ يَمِينٍ وَشِمَالٍ ۖ সাবার অধিবাসীদের জন্যে তাদের বাসভূমিতে ছিল এক নিদর্শন- দুটি উদ্যান, একটি ডানদিকে, একটি বামদিকে। كُلُوا مِنْ رِزْقِ رَبِّكُمْ وَاشْكُرُوا لَهُ ۚ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার রিযিক খাও এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। بَلْدَةٌ طَيِّبَةٌ وَرَبٌّ غَفُورٌ স্বাস্থ্যকর শহর এবং ক্ষমাশীল পালনকর্তা। |
16 |
فَأَعْرَضُوا فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ سَيْلَ الْعَرِمِ অতঃপর তারা অবাধ্যতা করল ফলে আমি তাদের উপর প্রেরণ করলাম প্রবল বন্যা! وَبَدَّلْنَاهُمْ بِجَنَّتَيْهِمْ جَنَّتَيْنِ ذَوَاتَيْ أُكُلٍ خَمْطٍ وَأَثْلٍ وَشَيْءٍ مِنْ سِدْرٍ قَلِيلٍ আর তাদের উদ্যানদ্বয়কে পরিবর্তন করে দিলাম এমন দুই উদ্যানে, যাতে উদগত হয় বিস্বাদ ফলমূল, ঝাউ গাছ এবং সামান্য কুলবৃক্ষ। |
17 |
ذَلِكَ جَزَيْنَاهُمْ بِمَا كَفَرُوا ۖوَهَلْ نُجَازِي إِلَّا الْكَفُورَ এটা ছিল কুফরের কারণে তাদের প্রতি আমার শাস্তি। আমি অকৃতজ্ঞ ব্যতীত কাউকে শাস্তি দেই না। |
18 |
وَجَعَلْنَا بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ الْقُرَى الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا قُرًى ظَاهِرَةً তাদের এবং যেসব জনপদের লোকদের প্রতি আমি অনুগ্রহ করেছিলম সেগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে অনেক দৃশ্যমান জনপদ স্থাপন করেছিলাম وَقَدَّرْنَا فِيهَا السَّيْرَ ۖ سِيرُوا فِيهَا لَيَالِيَ وَأَيَّامًا آمِنِينَ এবং সেগুলোতে ভ্রমণ নির্ধারিত করেছিলাম। তোমরা এসব জনপদে রাত্রে ও দিনে নিরাপদে ভ্রমণ কর। |
19 |
فَقَالُوا رَبَّنَا بَاعِدْ بَيْنَ أَسْفَارِنَا অতঃপর তারা বলল, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের ভ্রমণের পরিসর বাড়িয়ে দাও। وَظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ فَجَعَلْنَاهُمْ أَحَادِيثَ وَمَزَّقْنَاهُمْ كُلَّ مُمَزَّقٍ ۚ তারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল। ফলে আমি তাদেরকে উপাখ্যানে পরিণত করলাম এবং সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিলাম। إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ নিশ্চয় এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল কৃতজ্ঞের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। |
20 |
وَلَقَدْ صَدَّقَ عَلَيْهِمْ إِبْلِيسُ ظَنَّهُ فَاتَّبَعُوهُ إِلَّا فَرِيقًا مِنَ الْمُؤْمِنِينَ আর তাদের উপর ইবলীস তার অনুমান সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করল। ফলে তাদের মধ্যে মুমিনদের একটি দল ব্যতীত সকলেই তার পথ অনুসরণ করল। |
21 |
وَمَا كَانَ لَهُ عَلَيْهِمْ مِنْ سُلْطَانٍ إِلَّا لِنَعْلَمَ مَنْ يُؤْمِنُ بِالْآخِرَةِ مِمَّنْ هُوَ مِنْهَا فِي شَكٍّ ۗ তাদের উপর শয়তানের কোন ক্ষমতা ছিল না, তবে কে পরকালে বিশ্বাস করে এবং কে তাতে সন্দেহ করে, তা প্রকাশ করাই ছিল আমার উদ্দেশ্য। وَرَبُّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ حَفِيظٌ আপনার পালনকর্তা সব বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক। |
22 |
قُلِ ادْعُوا الَّذِينَ زَعَمْتُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ ۖ বলুন, তোমরা তাদেরকে আহবান কর, যাদেরকে উপাস্য মনে করতে আল্লাহ ব্যতীত। لَا يَمْلِكُونَ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ وَمَا لَهُمْ فِيهِمَا مِنْ شِرْكٍ وَمَا لَهُ مِنْهُمْ مِنْ ظَهِيرٍ তারা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের অনু পরিমাণ কোন কিছুর মালিক নয়, এতে তাদের কোন অংশও নেই এবং তাদের কেউ আল্লাহর সহায়কও নয়। |
23 |
وَلَا تَنْفَعُ الشَّفَاعَةُ عِنْدَهُ إِلَّا لِمَنْ أَذِنَ لَهُ ۚ যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়, তার জন্যে ব্যতীত আল্লাহর কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। حَتَّى إِذَا فُزِّعَ عَنْ قُلُوبِهِمْ قَالُوا مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ ۖ যখন তাদের মন থেকে ভয়-ভীতি দূর হয়ে যাবে, তখন তারা পরস্পরে বলবে, তোমাদের পালনকর্তা কি বললেন? قَالُوا الْحَقَّ ۖ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ তারা বলবে, তিনি সত্য বলেছেন এবং তিনিই সবার উপরে মহান। |
24 |
قُلْ مَنْ يَرْزُقُكُمْ مِنَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ বলুন, নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল থেকে কে তোমাদের কে রিযিক দেয়। قُلِ اللَّهُ ۖ وَإِنَّا أَوْ إِيَّاكُمْ لَعَلَى هُدًى أَوْ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ বলুন, আল্লাহ। আমরা অথবা তোমরা সৎপথে অথবা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছি ও আছ? |
25 |
قُلْ لَا تُسْأَلُونَ عَمَّا أَجْرَمْنَا وَلَا نُسْأَلُ عَمَّا تَعْمَلُونَ বলুন, আমাদের অপরাধের জন্যে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে না এবং তোমরা যা কিছু কর, সে সম্পর্কে আমরা জিজ্ঞাসিত হব না। |
26 |
قُلْ يَجْمَعُ بَيْنَنَا رَبُّنَا ثُمَّ يَفْتَحُ بَيْنَنَا بِالْحَقِّ وَهُوَ الْفَتَّاحُ الْعَلِيمُ বলুন, আমাদের পালনকর্তা আমাদেরকে সমবেত করবেন, অতঃপর তিনি আমাদের মধ্যে সঠিকভাবে ফয়সালা করবেন। তিনি ফয়সালাকারী, সর্বজ্ঞ। |
27 |
قُلْ أَرُونِيَ الَّذِينَ أَلْحَقْتُمْ بِهِ شُرَكَاءَ ۖ كَلَّا ۚ বলুন, তোমরা যাদেরকে আল্লাহর সাথে অংশীদাররূপে সংযুক্ত করেছ, তাদেরকে এনে আমাকে দেখাও। بَلْ هُوَ اللَّهُ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ বরং তিনিই আল্লাহ, পরাক্রমশীল, প্রজ্ঞাময়। |
28 |
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। |
29 |
وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ তারা বলে, তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে বল, এ ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে? |
30 |
قُلْ لَكُمْ مِيعَادُ يَوْمٍ لَا تَسْتَأْخِرُونَ عَنْهُ سَاعَةً وَلَا تَسْتَقْدِمُونَ বলুন, তোমাদের জন্যে একটি দিনের ওয়াদা রয়েছে যাকে তোমরা এক মহূর্তও বিলম্বিত করতে পারবে না এবং ত্বরান্বিত ও করতে পারবে না। |
31 |
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَنْ نُؤْمِنَ بِهَذَا الْقُرْآنِ وَلَا بِالَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ ۗ কাফেররা বলে, আমরা কখনও এ কোরআনে বিশ্বাস করব না এবং এর পূর্ববর্তী কিতাবেও নয়। وَلَوْ تَرَى إِذِ الظَّالِمُونَ مَوْقُوفُونَ عِنْدَ رَبِّهِمْ يَرْجِعُ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ الْقَوْلَ আপনি যদি পাপিষ্ঠদেরকে দেখতেন, যখন তাদেরকে তাদের পালনকর্তার সামনে দাঁড় করানো হবে, তখন তারা পরস্পর কথা কাটাকাটি করবে। يَقُولُ الَّذِينَ اسْتُضْعِفُوا لِلَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا لَوْلَا أَنْتُمْ لَكُنَّا مُؤْمِنِينَ যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত, তারা অহংকারীদেরকে বলবে, তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মুমিন হতাম। |
32 |
قَالَ الَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا لِلَّذِينَ اسْتُضْعِفُوا أَنَحْنُ صَدَدْنَاكُمْ عَنِ الْهُدَى بَعْدَ إِذْ جَاءَكُمْ ۖ অহংকারীরা দুর্বলকে বলবে, তোমাদের কাছে হেদায়েত আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে বাধা দিয়েছিলাম? بَلْ كُنْتُمْ مُجْرِمِينَ বরং তোমরাই তো ছিলে অপরাধী। |
33 |
وَقَالَ الَّذِينَ اسْتُضْعِفُوا لِلَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا দুর্বলরা অহংকারীদেরকে বলবে, بَلْ مَكْرُ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ إِذْ تَأْمُرُونَنَا أَنْ نَكْفُرَ بِاللَّهِ وَنَجْعَلَ لَهُ أَنْدَادًا ۚ বরং তোমরাই তো দিবারাত্রি চক্রান্ত করে আমাদেরকে নির্দেশ দিতে যেন আমরা আল্লাহকে না মানি এবং তাঁর অংশীদার সাব্যস্ত করি তারা যখন শাস্তি দেখবে, وَأَسَرُّوا النَّدَامَةَ لَمَّا رَأَوُا الْعَذَابَ وَجَعَلْنَا الْأَغْلَالَ فِي أَعْنَاقِ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ তখন মনের অনুতাপ মনেই রাখবে। বস্তুতঃ আমি কাফেরদের গলায় বেড়ী পরাব। هَلْ يُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ তারা সে প্রতিফলই পেয়ে থাকে যা তারা করত। |
34 |
وَمَا أَرْسَلْنَا فِي قَرْيَةٍ مِنْ نَذِيرٍ إِلَّا قَالَ مُتْرَفُوهَا إِنَّا بِمَا أُرْسِلْتُمْ بِهِ كَافِرُونَ কোন জনপদে সতর্ককারী প্রেরণ করা হলেই তার বিত্তশালী অধিবাসীরা বলতে শুরু করেছে, তোমরা যে বিষয়সহ প্রেরিত হয়েছ, আমরা তা মানি না। |
35 |
وَقَالُوا نَحْنُ أَكْثَرُ أَمْوَالًا وَأَوْلَادًا وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ তারা আরও বলেছে, আমরা ধনে-জনে সমৃদ্ধ, সুতরাং আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হব না। |
36 |
قُلْ إِنَّ رَبِّي يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَقْدِرُوَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ বলুন, আমার পালনকর্তা যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং পরিমিত দেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বোঝে না। |
37 |
وَمَا أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ بِالَّتِي تُقَرِّبُكُمْ عِنْدَنَا زُلْفَى إِلَّا مَنْ آمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, فَأُولَئِكَ لَهُمْ جَزَاءُ الضِّعْفِ بِمَا عَمِلُوا وَهُمْ فِي الْغُرُفَاتِ آمِنُونَ তারা তাদের কর্মের বহুগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে। |
38 |
وَالَّذِينَ يَسْعَوْنَ فِي آيَاتِنَا مُعَاجِزِينَ أُولَئِكَ فِي الْعَذَابِ مُحْضَرُونَ আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়, তাদেরকে আযাবে উপস্থিত করা হবে। |
39 |
قُلْ إِنَّ رَبِّي يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَيَقْدِرُ لَهُ ۚ বলুন, আমার পালনকর্তা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং সীমিত পরিমাণে দেন। وَمَا أَنْفَقْتُمْ مِنْ شَيْءٍ فَهُوَ يُخْلِفُهُ ۖ وَهُوَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, তিনি তার বিনিময় দেন। তিনি উত্তম রিযিক দাতা। |
40 |
وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ جَمِيعًا ثُمَّ يَقُولُ لِلْمَلَائِكَةِ أَهَؤُلَاءِ إِيَّاكُمْ كَانُوا يَعْبُدُونَ যেদিন তিনি তাদের সবাইকে একত্রিত করবেন এবং ফেরেশতাদেরকে বলবেন, এরা কি তোমাদেরই পূজা করত? |
41 |
قَالُوا سُبْحَانَكَ أَنْتَ وَلِيُّنَا مِنْ دُونِهِمْ ۖ ফেরেশতারা বলবে, আপনি পবিত্র, আমরা আপনার পক্ষে, তাদের পক্ষে নই, بَلْ كَانُوا يَعْبُدُونَ الْجِنَّ ۖ أَكْثَرُهُمْ بِهِمْ مُؤْمِنُونَ বরং তারা জিনদের পূজা করত। তাদের অধিকাংশই শয়তানে বিশ্বাসী। |
42 |
فَالْيَوْمَ لَا يَمْلِكُ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ نَفْعًا وَلَا ضَرًّا وَنَقُولُ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا ذُوقُوا عَذَابَ النَّارِ الَّتِي كُنْتُمْ بِهَا تُكَذِّبُونَ অতএব আজকের দিনে তোমরা একে অপরের কোন উপকার ও অপকার করার অধিকারী হবে না আর আমি জালেমদেরকে বলব, তোমরা আগুনের যে শাস্তিকে মিথ্যা বলতে তা আস্বাদন কর। |
43 |
وَإِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ قَالُوا مَا هَذَا إِلَّا رَجُلٌ يُرِيدُ أَنْ يَصُدَّكُمْ عَمَّا كَانَ يَعْبُدُ آبَاؤُكُمْ যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন তারা বলে, তোমাদের বাপ-দাদারা যার এবাদত করত এ লোকটি যে তা থেকে তোমাদেরকে বাধা দিতে চায়। وَقَالُوا مَا هَذَا إِلَّا إِفْكٌ مُفْتَرًى ۚ তারা আরও বলে, এটা মনগড়া মিথ্যা বৈ নয়। وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلْحَقِّ لَمَّا جَاءَهُمْ إِنْ هَذَا إِلَّا سِحْرٌ مُبِينٌ আর কাফেরদের কাছে যখন সত্য আগমন করে, তখন তারা বলে, এতো এক সুস্পষ্ট যাদু। |
44 |
وَمَا آتَيْنَاهُمْ مِنْ كُتُبٍ يَدْرُسُونَهَا ۖ وَمَا أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمْ قَبْلَكَ مِنْ نَذِيرٍ আমি তাদেরকে কোন কিতাব দেইনি, যা তারা অধ্যয়ন করবে এবং আপনার পূর্বে তাদের কাছে কোন সতর্ককারী প্রেরণ করিনি। |
45 |
وَكَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَمَا بَلَغُوا مِعْشَارَ مَا آتَيْنَاهُمْ فَكَذَّبُوا رُسُلِي ۖ তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যা আরোপ করেছে। আমি তাদেরকে যা দিয়েছিলাম, এরা তার এক দশমাংশও পায়নি। এরপরও তারা আমার রাসূলগনকে মিথ্যা বলেছে। فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ অতএব কেমন হয়েছে আমার শাস্তি। |
46 |
قُلْ إِنَّمَا أَعِظُكُمْ بِوَاحِدَةٍ ۖ أَنْ تَقُومُوا لِلَّهِ مَثْنَى وَفُرَادَى ثُمَّ تَتَفَكَّرُوا ۚ বলুন, আমি তোমাদেরকে একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছিঃ তোমরা আল্লাহর নামে এক একজন করে ও দু, দু জন করে দাঁড়াও, مَا بِصَاحِبِكُمْ مِنْ جِنَّةٍ ۚ অতঃপর চিন্তা-ভাবনা কর-তোমাদের সঙ্গীর মধ্যে কোন উম্মাদনা নেই। إِنْ هُوَ إِلَّا نَذِيرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيدٍ তিনি তো আসন্ন কাঠোর শাস্তি সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করেন মাত্র। |
47 |
قُلْ مَا سَأَلْتُكُمْ مِنْ أَجْرٍ فَهُوَ لَكُمْ ۖ বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না বরং তা তোমরাই রাখ। إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى اللَّهِ ۖوَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ আমার পুরস্কার তো আল্লাহর কাছে রয়েছে। প্রত্যেক বস্তুই তাঁর সামনে। |
48 |
قُلْ إِنَّ رَبِّي يَقْذِفُ بِالْحَقِّ عَلَّامُ الْغُيُوبِ বলুন, আমার পালনকর্তা সত্য দ্বীন অবতরণ করেছেন। তিনি আলেমুল গায়ব। |
49 |
قُلْ جَاءَ الْحَقُّ وَمَا يُبْدِئُ الْبَاطِلُ وَمَا يُعِيدُ বলুন, সত্য আগমন করেছে এবং অসত্য না পারে নতুন কিছু সৃজন করতে এবং না পারে পূনঃ প্রত্যাবর্তিত হতে। |
50 |
قُلْ إِنْ ضَلَلْتُ فَإِنَّمَا أَضِلُّ عَلَى نَفْسِي ۖ وَإِنِ اهْتَدَيْتُ فَبِمَا يُوحِي إِلَيَّ رَبِّي ۚ বলুন, আমি পথভ্রষ্ট হলে নিজের ক্ষতির জন্যেই পথভ্রষ্ট হব; আর যদি আমি সৎপথ প্রাপ্ত হই, তবে তা এ জন্যে যে, আমার পালনকর্তা আমার প্রতি ওহী প্রেরণ করেন। إِنَّهُ سَمِيعٌ قَرِيبٌ নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, নিকটবর্তী। |
51 |
وَلَوْ تَرَى إِذْ فَزِعُوا فَلَا فَوْتَ وَأُخِذُوا مِنْ مَكَانٍ قَرِيبٍ যদি আপনি দেখতেন, যখন তারা ভীতসস্ত্রস্ত হয়ে পড়বে, অতঃপর পালিয়েও বাঁচতে পারবে না এবং নিকটবর্তী স্থান থেকে ধরা পড়বে। |
52 |
وَقَالُوا آمَنَّا بِهِ তারা বলবে, আমরা সত্যে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। وَأَنَّى لَهُمُ التَّنَاوُشُ مِنْ مَكَانٍ بَعِيدٍ কিন্তু তারা এতদূর থেকে তার নাগাল পাবে কেমন করে? |
53 |
وَقَدْ كَفَرُوا بِهِ مِنْ قَبْلُ ۖ وَيَقْذِفُونَ بِالْغَيْبِ مِنْ مَكَانٍ بَعِيدٍ অথচ তারা পূর্ব থেকে সত্যকে অস্বীকার করছিল। আর তারা সত্য হতে দূরে থেকে অজ্ঞাত বিষয়ের উপর মন্তব্য করত। |
54 |
وَحِيلَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ مَا يَشْتَهُونَ كَمَا فُعِلَ بِأَشْيَاعِهِمْ مِنْ قَبْلُ ۚ তাদের ও তাদের বাসনার মধ্যে অন্তরাল হয়ে গেছে, যেমন-তাদের সতীর্থদের সাথেও এরূপ করা হয়েছে, যারা তাদের পূর্বে ছিল। إِنَّهُمْ كَانُوا فِي شَكٍّ مُرِيبٍ তারা ছিল বিভ্রান্তিকর সন্দেহে পতিত। ********* |
© Copy Rights: Zahid Javed Rana, Abid Javed Rana, Lahore, Pakistan Email: cmaj37@gmail.com |
Visits wef Aug 2024 |