Quran Bengali TranslationSurah Al Ra'd |
In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful
1 |
المر ۚ تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ ۗ আলিফ-লাম-মীম-রা; এগুলো কিতাবের আয়াত। وَالَّذِي أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ الْحَقُّ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يُؤْمِنُونَ যা কিছু আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তা সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এতে বিশ্বাস করে না। |
2 |
اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ۖ আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ ۖ অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ۖ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُسَمًّى ۚ এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কর্মে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে। يُدَبِّرُ الْأَمْرَ يُفَصِّلُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ بِلِقَاءِ رَبِّكُمْ تُوقِنُونَ তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন, নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাত সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও। |
3 |
وَهُوَ الَّذِي مَدَّ الْأَرْضَ وَجَعَلَ فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنْهَارًا ۖ তিনিই ভুমন্ডলকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে পাহাড় পর্বত ও নদ-নদী স্থাপন করেছেন وَمِنْ كُلِّ الثَّمَرَاتِ جَعَلَ فِيهَا زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ ۖ এবং প্রত্যেক ফলের মধ্যে দু’দু প্রকার সৃষ্টি করে রেখেছেন। يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ ۚ তিনি দিনকে রাত্রি দ্বারা আবৃত করেন। إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ এতে তাদের জন্যে নিদর্শণ রয়েছে, যারা চিন্তা করে। |
4 |
وَفِي الْأَرْضِ قِطَعٌ مُتَجَاوِرَاتٌ وَجَنَّاتٌ مِنْ أَعْنَابٍ وَزَرْعٌ وَنَخِيلٌ صِنْوَانٌ وَغَيْرُ صِنْوَانٍ এবং যমিনে বিভিন্ন শস্য ক্ষেত্র রয়েছে-একটি অপরটির সাথে সংলগ্ন এবং আঙ্গুরের বাগান আছে আর শস্য ও খজ্জুর রয়েছে- একটির মূল অপরটির সাথে মিলিত এবং কতক মিলিত নয়। يُسْقَى بِمَاءٍ وَاحِدٍ وَنُفَضِّلُ بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ فِي الْأُكُلِ ۚ এগুলো কে একই পানি দ্বারা সেচ করা হয়। আর আমি স্বাদে একটিকে অপরটির চাইতে উৎকৃষ্টতর করে দেই। إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ এগুলোর মধ্যে নিদর্শণ রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা ভাবনা করে। |
5 |
وَإِنْ تَعْجَبْ فَعَجَبٌ قَوْلُهُمْ أَإِذَا كُنَّا تُرَابًا أَإِنَّا لَفِي خَلْقٍ جَدِيدٍ ۗ যদি আপনি বিস্ময়ের বিষয় চান, তবে তাদের একথা বিস্ময়কর যে, আমরা যখন মাটি হয়ে যাব, তখনও কি নতুন ভাবে সৃজিত হব? أُولَئِكَ الَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ ۖ وَأُولَئِكَ الْأَغْلَالُ فِي أَعْنَاقِهِمْ ۖ وَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ এরাই স্বীয় পালনকর্তার সত্তায় অবিশ্বাসী হয়ে গেছে, এদের গর্দানেই লৌহ-শৃংখল পড়বে এবং এরাই দোযখী এরা তাতে চিরকাল থাকবে। |
6 |
وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِالسَّيِّئَةِ قَبْلَ الْحَسَنَةِ وَقَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِمُ الْمَثُلَاتُ ۗ এরা আপনার কাছে মঙ্গলের পরিবর্তে দ্রুত অমঙ্গল কামনা করে। তাদের পূর্বে অনুরূপ অনেক শাস্তিপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী অতিক্রান্ত হয়েছে। وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ لِلنَّاسِ عَلَى ظُلْمِهِمْ ۖ وَإِنَّ رَبَّكَ لَشَدِيدُ الْعِقَابِ আপনার পালনকর্তা মানুষকে তাদের অন্যায় সত্বেও ক্ষমা করেন এবং আপনার পালনকর্তা কঠিন শাস্তিদাতা ও বটে। |
7 |
وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْلَا أُنْزِلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِنْ رَبِّهِ ۗ কাফেররা বলেঃ তাঁর প্রতি তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হল না কেন? إِنَّمَا أَنْتَ مُنْذِرٌ ۖ وَلِكُلِّ قَوْمٍ هَادٍ আপনার কাজ তো ভয় প্রদর্শন করাই এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যে পথপ্রদর্শক হয়েছে। |
8 |
اللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَحْمِلُ كُلُّ أُنْثَى وَمَا تَغِيضُ الْأَرْحَامُ وَمَا تَزْدَادُ ۖ আল্লাহ জানেন প্রত্যেক নারী যা গর্ভধারণ করে এবং গর্ভাশয়ে যা সঙ্কুচিত ও বর্ধিত হয়। وَكُلُّ شَيْءٍ عِنْدَهُ بِمِقْدَارٍ এবং তাঁর কাছে প্রত্যেক বস্তুরই একটা পরিমাণ রয়েছে। |
9 |
عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْكَبِيرُ الْمُتَعَالِ তিনি সকল গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় অবগত, মহোত্তম, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান। |
10 |
سَوَاءٌ مِنْكُمْ مَنْ أَسَرَّ الْقَوْلَ وَمَنْ جَهَرَ بِهِ وَمَنْ هُوَ مُسْتَخْفٍ بِاللَّيْلِ وَسَارِبٌ بِالنَّهَارِ তোমাদের মধ্যে কেউ গোপনে কথা বলুক বা তা সশব্দে প্রকাশ করুক, রাতের অন্ধকারে সে আত্নগোপন করুক বা প্রকাশ্য দিবালোকে বিচরণ করুক, সবাই তাঁর নিকট সমান। |
11 |
لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ ۗ তাঁর পক্ষ থেকে অনুসরণকারী রয়েছে তাদের অগ্রে এবং পশ্চাতে, আল্লাহর নির্দেশে তারা ওদের হেফাযত করে। إِنَّ اللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّى يُغَيِّرُوا مَا بِأَنْفُسِهِمْ ۗ আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِقَوْمٍ سُوءًا فَلَا مَرَدَّ لَهُ ۚ আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় وَمَا لَهُمْ مِنْ دُونِهِ مِنْ وَالٍ এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই। |
12 |
هُوَ الَّذِي يُرِيكُمُ الْبَرْقَ خَوْفًا وَطَمَعًا وَيُنْشِئُ السَّحَابَ الثِّقَالَ তিনিই তোমাদেরকে বিদ্যুৎ দেখান ভয়ের জন্যে এবং আশার জন্যে এবং উক্ষিত করেন ঘন মেঘমালা। |
13 |
وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে। وَيُرْسِلُ الصَّوَاعِقَ فَيُصِيبُ بِهَا مَنْ يَشَاءُ তিনি বজ্রপাত করেন, অতঃপর যাকে ইচছা, তাকে তা দ্বারা আঘাত করেন; وَهُمْ يُجَادِلُونَ فِي اللَّهِ وَهُوَ شَدِيدُ الْمِحَالِ তথাপি তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতন্ডা করে, অথচ তিনি মহাশক্তিশালী। |
14 |
لَهُ دَعْوَةُ الْحَقِّ ۖ সত্যের আহবান একমাত্র তাঁরই وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ لَا يَسْتَجِيبُونَ لَهُمْ بِشَيْءٍ إِلَّا كَبَاسِطِ كَفَّيْهِ إِلَى الْمَاءِ لِيَبْلُغَ فَاهُ وَمَا هُوَ بِبَالِغِهِ ۚ এবং তাকে ছাড়া যাদেরকে ডাকে, তারা তাদের কোন কাজে আসে না; ওদের দৃষ্টান্ত সেরূপ, যেমন কেউ দু’ হাত পানির দিকে প্রসারিত করে যাতে পানি তার মুখে পৌঁছে যায়। অথচ পানি কোন সময় পৌঁছাবে না। وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ কাফেরদের যত আহবান তার সবই পথভ্রষ্টতা। |
15 |
وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে আছে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় وَظِلَالُهُمْ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ ۩ এবং তাদের প্রতিচ্ছায়াও সকাল-সন্ধ্যায়। |
16 |
قُلْ مَنْ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ জিজ্ঞেস করুন নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের পালনকর্তা কে? قُلِ اللَّهُ ۚ বলে দিনঃ আল্লাহ! قُلْ أَفَاتَّخَذْتُمْ مِنْ دُونِهِ أَوْلِيَاءَ لَا يَمْلِكُونَ لِأَنْفُسِهِمْ نَفْعًا وَلَا ضَرًّا ۚ বলুনঃ তবে কি তোমরা আল্লাহ ব্যতীত এমন অভিভাবক স্থির করেছ, যারা নিজেদের ভাল-মন্দের ও মালিক নয়? قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الْأَعْمَى وَالْبَصِيرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِي الظُّلُمَاتُ وَالنُّورُ ۗ বলুনঃ অন্ধ চক্ষুষ্মান কি সমান হয়? অথবা কোথাও কি অন্ধকার ও আলো সমান হয়। أَمْ جَعَلُوا لِلَّهِ شُرَكَاءَ خَلَقُوا كَخَلْقِهِ فَتَشَابَهَ الْخَلْقُ عَلَيْهِمْ ۚ তবে কি তারা আল্লাহর জন্য এমন অংশীদার স্থির করেছে যে, তারা কিছু সৃষ্টি করেছে, যেমন সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ? অতঃপর তাদের সৃষ্টি এরূপ বিভ্রান্তি ঘটিয়েছে? قُلِ اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ বলুনঃ আল্লাহই প্রত্যেক বস্তুর স্রষ্টা এবং তিনি একক, পরাক্রমশালী। |
17 |
أنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَسَالَتْ أَوْدِيَةٌ بِقَدَرِهَا فَاحْتَمَلَ السَّيْلُ زَبَدًا رَابِيًا ۚ তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর স্রোতধারা প্রবাহিত হতে থাকে নিজ নিজ পরিমাণ অনুযায়ী। অতঃপর স্রোতধারা স্ফীত ফেনারাশি উপরে নিয়ে আসে। وَمِمَّا يُوقِدُونَ عَلَيْهِ فِي النَّارِ ابْتِغَاءَ حِلْيَةٍ أَوْ مَتَاعٍ زَبَدٌ مِثْلُهُ ۚ এবং অলঙ্কার অথবা তৈজসপত্রের জন্যে যে বস্তুকে আগুনে উত্তপ্ত করে, তাতেও তেমনি ফেনারাশি থাকে। كَذَلِكَ يَضْرِبُ اللَّهُ الْحَقَّ وَالْبَاطِلَ ۚ এমনি ভাবে আল্লাহ সত্য ও অসত্যের দৃষ্টান্ত প্রদান করেন। فَأَمَّا الزَّبَدُ فَيَذْهَبُ جُفَاءً ۖوَأَمَّا مَا يَنْفَعُ النَّاسَ فَيَمْكُثُ فِي الْأَرْضِ ۚ অতএব, ফেনা তো শুকিয়ে খতম হয়ে যায় এবং যা মানুষের উপকারে আসে, তা জমিতে অবশিষ্ট থাকে। كَذَلِكَ يَضْرِبُ اللَّهُ الْأَمْثَالَ আল্লাহ এমনিভাবে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন। |
18 |
لِلَّذِينَ اسْتَجَابُوا لِرَبِّهِمُ الْحُسْنَى ۚ যারা পালনকর্তার আদেশ পালন করে, তাদের জন্য উত্তম প্রতিদান রয়েছে وَالَّذِينَ لَمْ يَسْتَجِيبُوا لَهُ لَوْ أَنَّ لَهُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لَافْتَدَوْا بِهِ ۚ এবং যারা আদেশ পালন করে না, যদি তাদের কাছে জগতের সবকিছু থাকে এবং তার সাথে তার সমপরিমাণ আরও থাকে, তবে সবই নিজেদের মুক্তিপণ স্বরূপ দিয়ে দেবে। أُولَئِكَ لَهُمْ سُوءُ الْحِسَابِ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ ۖوَبِئْسَ الْمِهَادُ তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর হিসাব। তাদের আবাস হবে জাহান্নাম। সেটা কতইনা নিকৃষ্ট অবস্থান। |
19 |
أَفَمَنْ يَعْلَمُ أَنَّمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ الْحَقُّ كَمَنْ هُوَ أَعْمَى ۚ যে ব্যক্তি জানে যে, যা কিছু পালনকর্তার পক্ষ থেকে আপনার প্রতি অবর্তীর্ণ হয়েছে তা সত্য সে কি ঐ ব্যক্তির সমান, যে অন্ধ? إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الْأَلْبَابِ তারাই বোঝে, যারা বোধশক্তি সম্পন্ন। |
20 |
الَّذِينَ يُوفُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَلَا يَنْقُضُونَ الْمِيثَاقَ এরা এমন লোক, যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে এবং অঙ্গীকার ভঙ্গ করে না। |
21 |
وَالَّذِينَ يَصِلُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَنْ يُوصَلَ وَيَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ وَيَخَافُونَ سُوءَ الْحِسَابِ এবং যারা বজায় রাখে ঐ সম্পর্ক, যা বজায় রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন এবং স্বীয় পালনকর্তাকে ভয় করে এবং কঠোর হিসাবের আশঙ্কা রাখে। |
22 |
وَالَّذِينَ صَبَرُوا ابْتِغَاءَ وَجْهِ رَبِّهِمْ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ এবং যারা স্বীয় পালনকর্তার সন্তুষ্টির জন্যে সবর করে, নামায وَأَنْفَقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةًوَيَدْرَءُونَ بِالْحَسَنَةِ السَّيِّئَةَ প্রতিষ্টা করে আর আমি তাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্য ব্যয় করে এবং যারা মন্দের বিপরীতে ভাল করে, أُولَئِكَ لَهُمْ عُقْبَى الدَّارِ তাদের জন্যে রয়েছে পরকালের গৃহ। |
23 |
جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا وَمَنْ صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ ۖ তা হচ্ছে বসবাসের বাগান। তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের সৎকর্মশীল বাপ-দাদা, স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানেরা। وَالْمَلَائِكَةُ يَدْخُلُونَ عَلَيْهِمْ مِنْ كُلِّ بَابٍ ফেরেশতারা তাদের কাছে আসবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে। |
24 |
سَلَامٌ عَلَيْكُمْ بِمَا صَبَرْتُمْ ۚ فَنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِ বলবেঃ তোমাদের সবরের কারণে তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আর তোমাদের এ পরিণাম-গৃহ কতই না চমৎকার। |
25 |
وَالَّذِينَ يَنْقُضُونَ عَهْدَ اللَّهِ مِنْ بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَنْ يُوصَلَ এবং যারা আল্লাহর অঙ্গীকারকে দৃঢ় ও পাকা-পোক্ত করার পর তা ভঙ্গ করে, আল্লাহ যে, সম্পর্ক বজায় রাখতে আদেশ করেছেন, وَيُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ ۙ أُولَئِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে, ওরা ঐ সমস্ত লোক যাদের জন্যে রয়েছে অভিসম্পাত এবং ওদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব। |
26 |
اللَّهُ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَقْدِرُ ۚ আল্লাহ যার জন্যে ইচ্ছা রুযী প্রশস্ত করেন এবং সংকুচিত করেন। وَفَرِحُوا بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا مَتَاعٌ তারা পার্থিব জীবনের প্রতি মুগ্ধ। পার্থিবজীবন পরকালের সামনে অতি সামান্য সম্পদ বৈ নয়। |
27 |
وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْلَا أُنْزِلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِنْ رَبِّهِ ۗ কাফেররা বলেঃ তাঁর প্রতি তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন কেন অবতীর্ণ হলো না? قُلْ إِنَّ اللَّهَ يُضِلُّ مَنْ يَشَاءُ وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَنْ أَنَابَ বলে দিন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যে, মনোনিবেশ করে, তাকে নিজের দিকে পথপ্রদর্শন করেন। |
28 |
الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُمْ بِذِكْرِ اللَّهِ ۗ যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। |
29 |
الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ طُوبَى لَهُمْ وَحُسْنُ مَآبٍ যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের জন্যে রয়েছে সুসংবাদ এবং মনোরম প্রত্যাবর্তণস্থল। |
30 |
كَذَلِكَ أَرْسَلْنَاكَ فِي أُمَّةٍ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهَا أُمَمٌلِتَتْلُوَ عَلَيْهِمُ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِالرَّحْمَنِ ۚ এমনিভাবে আমি আপনাকে একটি উম্মতের মধ্যে প্রেরণ করেছি। তাদের পূর্বে অনেক উম্মত অতিক্রান্ত হয়েছে। যাতে আপনি তাদেরকে ঐ নির্দেশ শুনিয়ে দেন, যা আমি আপনার কাছে প্রেরণ করেছি। তথাপি তারা দয়াময়কে অস্বীকার করে। قُلْ هُوَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ مَتَابِ বলুনঃ তিনিই আমার পালনকর্তা। তিনি ব্যতীত কারও উপাসনা নাই। আমি তাঁর উপরই ভরসা করেছি এবং তাঁর দিকেই আমার প্রত্যাবর্তণ। |
31 |
وَلَوْ أَنَّ قُرْآنًا سُيِّرَتْ بِهِ الْجِبَالُ أَوْ قُطِّعَتْ بِهِ الْأَرْضُ أَوْ كُلِّمَ بِهِ الْمَوْتَى ۗ যদি কোন কোরআন এমন হত, যার সাহায্যে পাহাড় চলমান হয় অথবা যমীন খন্ডিত হয় অথবা মৃতরা কথা বলে, তবে কি হত? بَلْ لِلَّهِ الْأَمْرُ جَمِيعًا ۗ বরং সব কাজ তো আল্লাহর হাতে। أَفَلَمْ يَيْأَسِ الَّذِينَ آمَنُوا أَنْ لَوْ يَشَاءُ اللَّهُ لَهَدَى النَّاسَ جَمِيعًا ۗ ঈমানদাররা কি এ ব্যাপারে নিশ্চিত নয় যে, যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে সব মানুষকে সৎপথে পরিচালিত করতেন? وَلَا يَزَالُ الَّذِينَ كَفَرُوا تُصِيبُهُمْ بِمَا صَنَعُوا قَارِعَةٌ أَوْ تَحُلُّ قَرِيبًا مِنْ دَارِهِمْ حَتَّى يَأْتِيَ وَعْدُ اللَّهِ ۚ কাফেররা তাদের কৃতকর্মের কারণে সব সময় আঘাত পেতে থাকবে অথবা তাদের গৃহের নিকটবর্তী স্থানে আঘাত নেমে আসবে, যে, পর্যন্ত আল্লাহর ওয়াদা না আসে। إِنَّ اللَّهَ لَا يُخْلِفُ الْمِيعَادَ নিশ্চয় আল্লাহ ওয়াদার খেলাফ করেন না। |
32 |
وَلَقَدِ اسْتُهْزِئَ بِرُسُلٍ مِنْ قَبْلِكَ فَأَمْلَيْتُ لِلَّذِينَ كَفَرُوا ثُمَّ أَخَذْتُهُمْ ۖ আপনার পূর্বে কত রাসূলের সাথে ঠাট্টা করা হয়েছে। অতঃপর আমি কাফেরদেরকে কিছু অবকাশ দিয়েছি। এর পর তাদেরকে পাকড়াও করেছি। فَكَيْفَ كَانَ عِقَابِ অতএব কেমন ছিল আমার শাস্তি। |
33 |
أَفَمَنْ هُوَ قَائِمٌ عَلَى كُلِّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ ۗ ওরা প্রত্যেকেই কি মাথার উপর স্ব স্ব কৃতকর্ম নিয়ে দন্ডায়মান নয়? وَجَعَلُوا لِلَّهِ شُرَكَاءَ قُلْ سَمُّوهُمْ ۚ এবং তারা আল্লাহর জন্য অংশীদার সাব্যস্ত করে। বলুন; নাম বল أَمْ تُنَبِّئُونَهُ بِمَا لَا يَعْلَمُ فِي الْأَرْضِ أَمْ بِظَاهِرٍ مِنَ الْقَوْلِ ۗ অথবা খবর দাও পৃথিবীর এমন কিছু জিনিস সম্পর্কে যা তিনি জানেন না? অথবা অসার কথাবার্তা বলছ? بَلْ زُيِّنَ لِلَّذِينَ كَفَرُوا مَكْرُهُمْ وَصُدُّوا عَنِ السَّبِيلِ ۗ বরং সুশোভিত করা হয়েছে কাফেরদের জন্যে তাদের প্রতারণাকে এবং তাদেরকে সৎপথ থেকে বাধা দান করা হয়েছে। وَمَنْ يُضْلِلِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِنْ هَادٍ আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার কোন পথ প্রদর্শক নেই। |
34 |
لَهُمْ عَذَابٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَشَقُّ ۖ দুনিয়ার জীবনেই এদের জন্য রয়েছে আযাব এবং অতি অবশ্য আখেরাতের জীবন কঠোরতম। وَمَا لَهُمْ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَاقٍ আল্লাহর কবল থেকে তাদের কোন রক্ষাকারী নেই। |
35 |
مَثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ ۖتَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖأُكُلُهَا دَائِمٌ وَظِلُّهَا ۚ পরহেযগারদের জন্যে প্রতিশ্রুত জান্নাতের অবস্থা এই যে, তার নিম্নে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। তার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং ছায়াও। تِلْكَ عُقْبَى الَّذِينَ اتَّقَوْا وَعُقْبَى الْكَافِرِينَ النَّارُ এটা তাদের প্রতিদান, যারা সাবধান হয়েছে এবং কাফেরদের প্রতিফল অগ্নি। |
36 |
وَالَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَفْرَحُونَ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ ۖ وَمِنَ الْأَحْزَابِ مَنْ يُنْكِرُ بَعْضَهُ ۚ এবং যাদেরকে আমি গ্রন্থ দিয়েছি, তারা আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তজ্জন্যে আনন্দিত হয় এবং কোন কোন দল এর কোন কোন বিষয় অস্বীকার করে। قُلْ إِنَّمَا أُمِرْتُ أَنْ أَعْبُدَ اللَّهَ وَلَا أُشْرِكَ بِهِ ۚ বলুন, আমাকে এরূপ আদেশই দেয়া হয়েছে যে, আমি আল্লাহর এবাদত করি। এবং তাঁর সাথে অংশীদার না করি। إِلَيْهِ أَدْعُو وَإِلَيْهِ مَآبِ আমি তাঁর দিকেই দাওয়াত দেই এবং তাঁর কাছেই আমার প্রত্যাবর্তন। |
37 |
وَكَذَلِكَ أَنْزَلْنَاهُ حُكْمًا عَرَبِيًّا ۚ এমনিভাবেই আমি এ কোরআনকে আরবী ভাষায় নির্দেশরূপে অবতীর্ণ করেছি। وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُمْ بَعْدَ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا وَاقٍ যদি আপনি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেন আপনার কাছে জ্ঞান পৌঁছার পর, তবে আল্লাহর কবল থেকে আপনার না কোন সাহায্যকারী আছে এবং না কোন রক্ষাকারী। |
38 |
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِنْ قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجًا وَذُرِّيَّةً ۚ আপনার পূর্বে আমি অনেক রসূল প্রেরণ করেছি এবং তাঁদেরকে পত্নী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছি। وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَنْ يَأْتِيَ بِآيَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۗلِكُلِّ أَجَلٍ كِتَابٌ কোন রসূলের এমন সাধ্য ছিল না যে আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কোন নিদর্শন উপস্থিত করে। প্রত্যেকটি ওয়াদা লিখিত আছে। |
39 |
يَمْحُو اللَّهُ مَا يَشَاءُ وَيُثْبِتُ ۖ وَعِنْدَهُ أُمُّ الْكِتَابِ আল্লাহ যা ইচ্ছা মিটিয়ে দেন এবং বহাল রাখেন এবং মূলগ্রন্থ তাঁর কাছেই রয়েছে। |
40 |
وَإِنْ مَا نُرِيَنَّكَ بَعْضَ الَّذِي نَعِدُهُمْ أَوْ نَتَوَفَّيَنَّكَ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلَاغُ وَعَلَيْنَا الْحِسَابُ আমি তাদের সাথে যে ওয়াদা করেছি, তার কোন একটি যদি আপনাকে দেখিয়ে দেই কিংবা আপনাকে উঠিয়ে নেই, তাতে কি আপনার দায়িত্ব তো পৌছে দেয়া এবং আমার দায়িত্ব হিসাব নেয়া। |
41 |
أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا نَأْتِي الْأَرْضَ نَنْقُصُهَا مِنْ أَطْرَافِهَا ۚ তারা কি দেখে না যে, আমি তাদের দেশকে চতুর্দিক থেকে সমানে সঙ্কুচিত করে আসছি? وَاللَّهُ يَحْكُمُ لَا مُعَقِّبَ لِحُكْمِهِ ۚ আল্লাহ নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশকে পশ্চাতে নিক্ষেপকারী কেউ নেই। وَهُوَ سَرِيعُ الْحِسَابِ তিনি দ্রুত হিসাব গ্রহণ করেন। |
42 |
وَقَدْ مَكَرَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَلِلَّهِ الْمَكْرُ جَمِيعًا ۖ তাদের পূর্বে যারা ছিল, তারা চক্রান্ত করেছে। আর সকল চক্রান্ত তো আল্লাহর হাতেই আছে। يَعْلَمُ مَا تَكْسِبُ كُلُّ نَفْسٍ ۗوَسَيَعْلَمُ الْكُفَّارُ لِمَنْ عُقْبَى الدَّارِ তিনি জানেন প্রত্যেক ব্যক্তি যা কিছু করে। কাফেররা জেনে নেবে যে, পর জীবনের আবাসস্থল কাদের জন্য রয়েছে। |
43 |
وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَسْتَ مُرْسَلًا ۚ কাফেররা বলেঃ আপনি প্রেরিত ব্যক্তি নন। قُلْ كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَمَنْ عِنْدَهُ عِلْمُ الْكِتَابِ বলে দিন, আমার ও তোমাদের মধ্যে প্রকৃষ্ট সাক্ষী হচ্ছেন আল্লাহ এবং ঐ ব্যক্তি, যার কাছে গ্রন্থের জ্ঞান আছে। ********* |
© Copy Rights: Zahid Javed Rana, Abid Javed Rana, Lahore, Pakistan Email: cmaj37@gmail.com |
Visits wef Aug 2024 |